বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত-বিধ্বস্ত উত্তরবঙ্গ! মৃত্যুমিছিল, জনজীবন বিপর্যস্ত, যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী
ট্রেন্ডিং: প্রবল বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত-বিধ্বস্ত উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা। একেবারে মৃত্যু মিছিল। শনিবার রাত থেকে টানা বৃষ্টি ও জলের তোড়ে অন্তত ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। বেসরকারি মতে মৃতের সংখ্যা আরো বেশি। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মিরিক মহকুমা। সেখানে প্রাণ হারিয়েছেন ১৩ জন। জলপাইগুড়িতে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর।কোথাও সেতু ভেঙে পড়েছে, কোথাও ধ্বসে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি-রাস্তাঘাট। উদ্ধারকাজে নেমেছে জাতীয় এবং রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, সেনা এবং স্থানীয় পুলিশ।

রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গে প্রাণহানির ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সোশ্যাল মিডিয়ায় বাংলায় লেখা এক পোস্টে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। নিহতদের পরিবারবর্গের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছেন জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কয়েকটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। আরও কয়েকটি দলকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পুজো কার্নিভ্যাল শেষে পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে আজই উত্তরবঙ্গে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। রবিবার সকাল থেকেই নবান্নের কন্ট্রোল রুম থেকে তিনি পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেছেন। রাজ্য সরকারের তরফে ইতিমধ্যেই উত্তরবঙ্গের সাত জেলার জেলাশাসকের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকও করা হয়েছে। পুজোর সময় কয়েক হাজার পর্যটক পাহাড়ে বেড়াতে যান। পর্যটকদের জন্য দার্জিলিং জেলা পুলিশ বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে। নম্বরটি হলো- ৯১৪৭-৮৮৯০-৭৮। পর্যটকদের নিরাপদে সরিয়ে আনতে বিশেষ বাস পরিষেবার ব্যবস্হা করেছে রাজ্য পরিবহণ দফতর। শিলিগুড়ি থেকে কালিম্পং এবং সিকিমগামী ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক আপাতত বন্ধ বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। ২৯ মাইল, রবিঝোরার মতো একাধিক এলাকায় তিস্তার জল ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর দিয়ে বইছে। ডুয়ার্স হয়ে সিকিমগামী বিকল্প রাস্তা ৭১৭-এ বন্ধ। কার্শিয়াঙের দিলারাম এবং হুইসেলখোলা এলাকায় ধসে শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিংগামী ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়কও বন্ধ হয়ে পড়েছে। দার্জিলিংগামী রোহিনীর রাস্তাও ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। জলের তোড়ে দুধিয়া সেতু ভেঙে শিলিগুড়ির সঙ্গে মিরিকের যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পাহাড়ে ফুলবাড়ি সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বিজনবাড়ি, থানালাইনের মতো এলাকাও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

এদিকে সোমবার থেকেই উত্তরবঙ্গের বৃষ্টি কিছুটা কমবে বলে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে। তবে আলিপুরদুয়ার জেলায় দু’এক জায়গায় ভারী এবং বিক্ষিপ্তভাবে কোথায় কোথাও বজ্র বিদ্যুৎ সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের প্রায় প্রতিটি জেলাতেই আজ দমকা হাওয়া সহ বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে বলে আবহাওয়া দপ্তর।