‘নার্ভাস লাগছে’, বাংলা শিখছেন পত্রলেখার কাছে— ‘মহারাজ’ হতে কতটা প্রস্তুত রাজকুমার?

0

এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক: অবশেষে রুপোলি পর্দায় পা রাখতে চলেছে বাংলার ‘মহারাজ’-এর জীবনের গল্প। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের বায়োপিক—এই নামটাই যেন একরাশ আবেগ, গর্ব, আর প্রত্যেক বাঙালির ক্রিকেট-ভেজা নস্ট্যালজিয়া।আর সেই দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন বলিউডের ‘নিউ এজ হিরো’, বাংলার জামাই—রাজকুমার রাও। বহুদিন ধরেই এই ছবি ঘিরে চলছিল কানাঘুষো-কে হবেন সৌরভ? কীভাবে ফুটে উঠবে এই ইনিংস? এবার সেই জল্পনায় পড়ল সিলমোহর।সৌরভ নিজেই প্রথম জানিয়েছিলেন, “রাজকুমার ভীষণ উঁচু দরের অভিনেতা। আমার মনে হয়, রাজকুমার আমার চরিত্র হয়ে উঠতে পারবেন। তাই ওঁকেই আমার পছন্দ”।

এ বার মুখ খুললেন রাজকুমারও।“এত বড় দায়িত্ব, নার্ভাস লাগছে” – এক সাক্ষাৎকারে অকপটে বলে ফেললেন রাজকুমার।বললেন, সৌরভের চরিত্রে অভিনয় মানে শুধু স্ক্রিপ্ট মুখস্থ নয়, একটা জাতির আবেগ বয়ে বেড়ানো।ব্যাটিং-বোলিং থেকে শুরু করে হাঁটাচলা, এমনকি বাংলার টানটাও আয়ত্তে আনতে হচ্ছে তাঁকে।বাংলা উচ্চারণে দক্ষটা আনতে পাশে পেয়েছেন স্ত্রী পত্রলেখাকে, এবার তিনি শিক্ষিকার ভূমিকায়।
সৌরভ নিজেও ভরসা রেখেছেন। বলেছেন, “সব চরিত্রে মুখের মিল দরকার হয় না, প্রাণটাই জরুরি।” যেমন সুশান্ত সিং রাজপুত হয়ে উঠেছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি, রণবীর সিং ধরেছিলেন ’৮৩’র ব্যাট, এবার পালা মহারাজের, সৌরভের ইনিংস শুরু হচ্ছে রাজকুমারের ব্যাটে।

তবে রাজকুমার রাও চূড়ান্ত হওয়ার আগে কিন্তু আরও কয়েকজনের নাম ঘুরপাক খাচ্ছিল। প্রথমে সৌরভের প্রথম পছন্দ ছিলেন রণবীর কাপুর, এমনটাই জানিয়েছিলেন দাদা নিজেই। তবে ডেট সমস্যার কারণে সরে দাঁড়ান তিনি। এরপর আলোচনায় আসে আয়ুষ্মান খুরানার নামও। শেষমেশ রাজকুমারই বাজিমাত করলেন।
তবে এখানেই আসল প্রশ্ন ,এই বায়োপিকে কি উঠে আসবে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের জীবনের তীব্র বিতর্কিত অধ্যায়গুলোও? শুধুই ‘দাদা’র ট্রাম্প কার্ড ইনিংস, ট্রফি আর গর্বের গল্প, না কি পর্দায় ধরা পড়বে সেই অস্বস্তিকর অধ্যায়গুলিও? যেমন ধরা যাক গ্রেগ চ্যাপেল বিতর্ক, যেখানে কোচ আর ক্যাপ্টেনের ঠান্ডা যুদ্ধ শুধু ড্রেসিংরুমেই সীমাবদ্ধ ছিল না, ছড়িয়ে পড়েছিল গোটা দেশের ক্রিকেটপাড়া জুড়ে। ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে এক অন্যতম আলোড়ন তোলা অধ্যায়। আরও বড় প্রশ্ন, এই বড় পর্দায় কি উঠে আসতে পারে এমন কোনও নতুন তথ্য? ২০০৫ থেকে ২০০৭, এই সময়টা সৌরভের জন্য ছিল চূড়ান্ত টানাপোড়েনের। চ্যাপেলের সঙ্গে তাঁর সংঘাত, দলের মধ্যে ভাঙন, নিজের জায়গা হারিয়ে বসে থাকা, এবং পরে আবার দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন, এই উত্তাল অধ্যায়টা কি পর্দায় উঠে আসবে নির্ভীকভাবে?

আরও প্রশ্ন থেকে যায়। নগমার সঙ্গে তাঁর প্রেমের গুঞ্জন কি থাকবে সিনেমার গল্পে? সৌরভের হঠাৎ করে অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত,তার আড়ালে কি ছিল শুধুই ক্লান্তি, না কি চাপা পড়ে থাকা কিছু অভিমান? তাঁর ক্যারিয়ারের বিতর্কিত সাদা পৃষ্ঠাগুলো কি খোলসা হবে রুপালি পর্দায়?
শোনা যাচ্ছে, আগামী বছরের গোড়ায় শুরু হবে শুটিং। প্রস্তুতির সময় আছে, তবু উত্তেজনার পারদ এখনই চড়তে শুরু করেছে।রাজকুমার তো তৈরি হচ্ছেন দাদার মতো হাঁটা-চলা, উচ্চারণ, ব্যাটিং সব আয়ত্তে আনতে। কিন্তু প্রশ্ন একটাই—দাদার লাইফের ‘অন রেকর্ড’ না থাকা মুহূর্তগুলো কি পর্দায় আসবে? নাকি সেগুলো শুধু আমাদের আড়ালেই থেকে যাবে?

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may have missed