একুশের মঞ্চ থেকে ভাষা আন্দোলনের ডাক মমতার, জগন্নাথ ধামের মতোই বাংলায় হবে দুর্গা অঙ্গন

বাংলা ভাষা, বাংলার আবেগ, বাঙালির গর্ব। আর সেই ভাষায় কথা বললেই ভিনরাজ্যে হেনস্তা! একুশের মঞ্চ থেকে সরব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই মঞ্চ থেকেই ভাষা আন্দোলনের ডাক দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিঁধলেন বিজেপিকে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ভাষণে বলেন, ‘বাংলা ভাষার উপর চলছে বিশাল সন্ত্রাস। কে মাছ খাবে, কে মাংস খাবে, কে ডিম খাবে, সব ওরা ঠিক করে দিচ্ছেন। এত সহজ নয়। বাংলা এসব মানবে না। কে কোন ভাষায় কথা বলবে তা নিয়েও বলে দেবে ওরা! জেনে রাখবেন, এখানে সবার অধিকার রক্ষিত হবে’। বক্তব্যের অনেকটা অংশ জুড়েই মমতা নিজের ভাষাকে আগলে রাখার হুঁষিয়ারি দিলেন একের পর এক। কখনও তুলনায় টেনে আনলেন অন্য রাজ্যের প্রসঙ্গ। কখনও বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের নাম না করেই কটাক্ষ করে বোঝালেন, বাংলা ভাষায় যাঁরা কথা বলেন, ভিন রাজ্যে তাঁদের উপর আক্রমণ করে, টেলি প্রমটার থেকে দু’ লাইন বাংলা লিখে এনে এখানে বাংলা ভাষায় কথা বললে, আদতে বাংলায় ভোট পাওয়া যাবে না। তিনি জানিয়ে দিলেন, এবার ভাষার লড়াই ফের শুরু হবে। দিলেন আন্দোলনের রূপরেখা। হুঁশিয়ারির সুরে বললেন, ‘ভাষা রক্ষার শপথ নিচ্ছি, প্রয়োজনে জীবন দেব, তবু বাংলা ভাষার উপর এই সন্ত্রাস মেনে নেওয়া হবে না।’ তৃণমূলের সমাবেশ থেকে কর্মীদের নতুন কর্মসূচি দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ২৭ জুলাই নানুর দিবস থেকে প্রতি শনি ও রবিবার বাংলা ভাষার উপর আক্রমণের প্রতিবাদে মিটিং-মিছিল হবে প্রতিটি ব্লকে। মমতা বলেন, ‘প্রতিবাদে নামুন। এ বার শুরু হলো ভাষারক্ষার শপথ।’ বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলার উন্নয়ন দেখে ভয় পাচ্ছে ওরা। তাই বাংলাকে টার্গেট করছে। বাংলা ভাষার উপর কেন এই সন্ত্রাস? এই বাংলা তো স্বাধীনতার জন্য লড়েছে, নবজাগরণের জন্মস্থান এই মাটি।’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, দিঘার জগন্নাথ ধামের পর, তৈরি হবে দুর্গা অঙ্গন। মমতা এদিন বলেন, ‘আমারা মৃত্যুর জন্য তৈরি। বাংলা কিংবা যে কোনও ভাষার উপর অসম্মান মানব না। একটা বিদ্যাসাগরের মূর্তি আঘাত করে রেজাল্ট দেখছিলেন তো। অসমে মা কালী মন্দির ভেঙে দিলেন। যদি তা বাংলায় হত, কী হত? আগে কী বলতেন, মমতাজী দুর্গা পুজা করনে নেহি দেতে হ্যা। সরস্বতী পূজা করনে নেহি দেতে হ্যা। আর নির্বাচনের আগে হঠাৎ মনে পড়ল মা কালী-দুর্গার কথা। মা দুর্গা আমাদের জাতীয় সম্পদ। জগ্ননাথ ধাম যেমন করে দিয়েছি, আগামী দিন জগন্নাথ ধামের অনুকরণে একটা দুর্গা অঙ্গন আমি বাংলায় করে দেব। সারাবছর যাতে বাংলার মানুষ আসতে পারে, দেখতে পারে।’