‘ওলে, ওলে, ওলে…মেসি, মেসি, মেসি!’ শেষবার জোড়া গোলে মাতালেন মেসি
স্পোর্টস ডেস্ক: বুয়েন্স আয়ার্সে মনুমেন্টাল স্টেডিয়ামে নীল সাদা ঢেউ। সবুজ মাঠে ‘ফুটবল দেবতা’! দেবতার নাম ধরেই গগনভেদী কোরাস, ‘ওলে, ওলে, ওলে…মেসি, মেসি, মেসি!’ গ্যালারিতে তাঁর পরিবার। হাজার হাজার ভক্তের হৃদস্পন্দন। হয়তো এটাই শেষবার দেশের মাটিতে লিওনেল মেসিকে দেখা।
২০০৫ সালের ৯ অক্টোবর। বছর ২০ আগে শুরুটা এখানেই করেছিলেন লিওনেল মেসি। নিজেকে এরপর নিয়ে গেছেন এভারেস্ট উচ্চতায়। সেই একই মঞ্চে দাঁড়িয়ে শেষের শুরুটাও যেন করে ফেললেন মেসি। নিজের মাটিতে এরপর আর কখনো জাতীয় দলের জার্সি গায়ে চাপানো হবে না! তাই শিল্পীও যেন শেষ তুলির আঁচড় দিতে প্রস্তুত হয়ে ছিল।
বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ঘরের মাঠে শেষ ম্যাচ তো বটেই, জাতীয় দলের জার্সিতে ঘরের মাঠে শেষ প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচটা শুধু খেললেনই না, রঙিন করে তুললেন। জোড়া গোলের আনন্দ দিলেন ভক্তদের। আর্জেন্টিনা তাতে ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে ৩-০ গোলে জয় তুলে নিল। ৩৯ মিনিটে করলেন প্রথম গোল। জুলিয়ান আলভারেজের কাছ থেকে বল পেয়ে মেসির বাঁ পা ছুঁয়ে গেল চিরচেনা ছন্দে, চিপ করে তুলে দিলেন ভেনেজুয়েলা গোলরক্ষক রাফায়েল রোমোর মাথার ওপর দিয়ে। যেন পুরো শহর দুলে ওঠে। মেসি গর্জনে কম্পমান বুয়েন্স আয়ার্স। এইজন্যই তো ফুটবল দেবতাকে দেখতে ছুটে আসা। ফুটবলে তাঁর যত স্মৃতি, যত ট্রফি, যত কান্না আর উল্লাস—সবকিছুর সাক্ষী এই আর্জেন্টাইনরা। শেষবার যারা দেখলেন পায়ের জাদু।
৩২৪ দিন পর আর্জেন্টিনার জার্সিতে মেসির গোল। এবারের বিশ্বকাপ বাছাইয়ে সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় এককভাবে শীর্ষে উঠলেন ৮০ মিনিটে। এবার থিয়াগো আলমাদার ক্রস থেকে বাঁ পায়ের ছোঁয়ায় মেসি শুধু বলটা জালে জড়িয়েছেন। কোরাসের মাত্রা যেন আরও বেড়ে গেল। দেখে যেন আশ মিটছে না। কিন্তু ফুটবলের অমোঘ নিয়ম। নির্দিষ্ট সময়ের শেষ বাঁশি বাজতেই থামল খেলা। থমকালেন মেসি। স্টেডিয়াম জুড়ে গান, গ্যালারিতে স্ত্রী, ছেলেরা, মাঠে সতীর্থরা একে একে জড়িয়ে ধরলেন। ছাড়তে কার মন চায়, থামতে কার ভাল লাগে। আলো নিভে যাওয়া অন্ধকার স্টেডিয়ামে যেন পর্দা পড়ল এক অধ্যায়ের।
