আড়াই ঘণ্টা ধরে ৪৫৩ পাতার রায়দান! বাংলাদেশে ফাঁসির সাজা শেখ হাসিনার, কী বললেন মুজিব কন্যা!
তিনি বাংলাদেশে নেই। তাঁর নামেই মৃত্যুদণ্ডাদেশ জারি হয়ে গেল বাংলাদেশে। ৩৯৭ দিনের মাথায় শেখ হাসিনার ফাঁসির সাজা ঘোষণা করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। গত ১৫ বছর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পদে ছিলেন শেখ হাসিনা। গত বছর অগাস্ট মাসে গণবিক্ষোভের জেরে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন তিনি।হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ডের রায়ে ট্রাইব্যুনাল বলেছেন, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে ৪৫৩ পৃষ্ঠার এই রায়ে ছয়টি অংশ রয়েছে। রায়ে ট্রাইব্যুনাল বলেছেন, শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির অপরাধ প্রমাণিত। দুটি অভিযোগে শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একটি অভিযোগে প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আর একজন, ধরা পড়ে গিয়ে আসামি থেকে রাজসাক্ষী বনে যাওয়া আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুনকে পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।ঘটনাক্রমে বাকি দু’জনেই বাংলাদেশের কাছে পলাতক, এবং বাংলাদেশের দাবি, তারা আশ্রয় নিয়েছেন ভারতে।
এ মামলায় শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়। সেগুলো হলো—গত বছরের ১৪ জুলাই গণভবনে সাংবাদিক সম্মেলনে শেখ হাসিনার ‘উস্কানিমূলক বক্তব্য’ রাখা, হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের নির্মূল করার নির্দেশ দেওয়া, রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যার নির্দেশ; রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় ছয় আন্দোলনকারীকে গুলি করে হত্যার নির্দেশ এবং আশুলিয়ায় ৬ জনকে পুড়িয়ে হত্যার নির্দেশ দেওয়া।
রায় ঘোষণার পর এক বিবৃতিতে মুখ খোলেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। সোমবারের এই রায়কে তিনি ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ ও ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেন তিনি। মুজিব-কন্যা দাবি করেন, তাঁকে আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনো সুযোগই দেওয়া হয়নি। এমনকি নিজের পছন্দের আইনজীবীও বাছার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। তিনি এও দাবি করেন, তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করার এই রায় আগে থেকেই নির্ধারিত ছিল।
কিছুদিন আগেই হাসিনাকে নিয়ে ভারতের অবস্থান স্পষ্ট করে দেন বিদেশসচিব বিক্রম মিসরি। হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়ে তিনি জানিয়েছিলেন, এটা একটা বিচার বিভাগীয় এবং আইনি প্রক্রিয়া। এর জন্য দু’দেশের সরকারের মধ্যে আলোচনা এবং পরামর্শের প্রয়োজন রয়েছে।’
