ভারতের কাছে এখনও স্বপ্ন! ইতিহাস গড়ে বিশ্বকাপে ৫ লাখ জনসংখ্যার কেপ ভার্দে

বেসরকারি হিসেব বলছে, কলকাতার জনসংখ্যা দেড় কোটি বা তারও বেশি। ভারতের জনসংখ্যা ১৪২ কোটি। ফুটবল বিশ্বকাপ এখনও স্বপ্নই। আর সেই স্বপ্ন, সেই অসম্ভবকেই সম্ভব করে দেখিয়েছে ৫ লাখ জনসংখ্যার ছোট্ট দ্বীপ দেশ কেপ ভার্দে। সবাইকে চমকে দিয়েই ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ফিফা বিশ্বকাপের মূল পর্বে জায়গা করে নিয়েছে তারা। মাত্র ৪ হাজার বর্গকিলোমিটার আয়তনের দেশটার জনসংখ্যা ৫ লাখ ২৫ হাজার। বর্তমানে তারা ফিফা ক্রমতালিকায় রয়েছে ৭০তম স্থানে। ১৯৭৫ সালে পর্তুগালের কাছ থেকে স্বাধীনতা পায় কেপ ভার্দে। তারা প্রথমবার বিশ্বকাপে যাওয়ার লড়াইয়ে নামে ২০০২ সালে। ২৩ বছর অপেক্ষার পর অবশেষে স্বপ্ন পূরণ হল তাদের। এত দ্রুত বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চে খেলবে এমন কল্পনাও করেননি অনেকেই। তবে আফ্রিকা কাপ অব নেশনসে ২০১৩ সালে অভিষেকেই তারা খেলেছিল কোয়ার্টার ফাইনালে। ২০২৩ সালেও তারা নামা লেখায় শেষ আটে। এবার বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ক্যামেরুনকে হারিয়ে চমকে দিয়েছিল দেশটি। জনসংখ্যার হিসাবে কেপ ভার্দে বিশ্বকাপের মূল পর্বে খেলার সুযোগ পাওয়া দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম দেশও বটে। এর আগে আইসল্যান্ড ক্ষুদ্রতম দেশ হিসেবে ২০১৮ সালের রাশিয়া বিশ্বকাপে অংশ নিয়েছিল।

ছোট্ট এই দ্বীপরাষ্ট্রের ফুটবলের কাঠামো খুব একটা উন্নত নয় অন্যান্য দেশগুলির মতো। কিন্তু সেই ধরনের পরিকাঠামোও নেই। তবু দৃঢ়তা আর প্রতিভা তাদের টিকিট পাইয়ে দিল বিশ্বকাপের মঞ্চের। উচ্ছ্বাস থাকাটাই স্বাভাবিক। ফুটবলার-সাধারণ মানুষ মিলেমিশে গেছে এই আনন্দে। সরকারও জাতীয় ছুটি ঘোষণা করে দিয়েছে।কেপ ভার্দের ঐতিহাসিক এই মুহূর্তে গ্যালারিতে হাজির হয়েছিলেন দেশটার প্রেসিডেন্ট হোসে মারিয়া নেভেস।
আফ্রিকা অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে সোমবার কেপ ভার্দে মুখোমুখি হয়েছিল এসওয়াতিনি’র। ম্যাচটিতে দ্বীপরাষ্ট্র কেপ ভার্দে ৩-০ ব্যবধানে জিতে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের টিকিট কেটেছে। তাতেই শেষ বাঁশি বাজতেই বিজয়োল্লাসে মাতে গ্যালারিভর্তি ১৫ হাজার দর্শক। গোটা দ্বীপরাষ্ট্রই পরিণত করে উৎসবের নগরীতে। ব্লু শার্কস–খ্যাত দেশটা বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ‘ডি’ গ্রুপে ১০ ম্যাচে জিতেছে সাতটিতে। ২৩ পয়েন্ট নিয়ে তাদের অবস্থান গ্রুপের শীর্ষে। সমান ম্যাচে অন্যতম শক্তিশালী ক্যামেরুনের ১৯ এবং লিবিয়ার পয়েন্ট ১৬। ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ানি ইনফান্তিনো এই সাফল্যকে ‘অসাধারণ প্রেরণার উৎস’ বলে উল্লেখ করে বলেন, এটি কেপ ভার্দের নতুন প্রজন্মকে ফুটবলের প্রতি আরও অনুপ্রাণিত করবে।