পিতৃশোকেও মাঠে লাল হলুদ সমর্থক, বিশেষ দিনে হারা চলবে না নির্দেশ ছিল ম্যানেজমেন্টের

কল্যাণীতে ডার্বি। আশা-আশঙ্কা ছিলই। আগের সপ্তাহে ডার্বি পিছিয়ে যাওয়ার পর কিন্তু একেবারে সাজো সাজো রব ছিল শনিবারের কল্যাণী।দু’প্রধানের কেউই পূর্ণ শক্তির দল নামায় না। তবু মাতৃসম ক্লাবের খেলা মানেই বাড়তি আবেগ সমর্থকদের জন্য। তা যদি হয় ডার্বি, তাহলে পৃথিবীর যে প্রান্তেই হোক মাঠ ঠিকই যেন ভরে যাবে। কল্যাণীতেও টানটান উত্তেজনার ম্যাচে গ্যালারি একেবারে হাউজফুল।মাঠ নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। এদিন চোট পেলেন একাধিক ফুটবলার। চোট পেয়ে প্রথমার্ধেই মাঠ ছাড়েন মোহনবাগানের সালাউদ্দিন। দ্বিতীয়ার্ধে স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়তে হয় সায়নকেও। তবে নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন তোলার জায়গা নেই।সম্পূর্ণ আলাদা রাস্তা দিয়ে দুইদলের সমর্থকদের ঢোকানো, আলাদা ব্লক করে দেওয়া, গ্যালারিতে পুলিশ সব মিলিয়ে জমজমাট কলকাতা ডার্বি। অতিরিক্ত সময়ে আলো নিভে গিয়েছিল। তার মধ্যেই শেষ কয়েক মিনিট খেললেন ফুটবলাররা। নদিয়ার ফুলিয়ার বাসিন্দা ইস্টবেঙ্গলের ভক্ত অরুণ হালদার সদ্য বাবাকে হারিয়ে শোকস্তব্ধ হলেও, ডার্বি মিস করার কথা ভাবেননি এক মুহূর্তও। সাদা থান পরা, মুখে কাঁচা-পাকা গোঁফ-দাড়ি, কপালে লাল-হলুদ ফেটি বেঁধে ঠিকই এসেছেন মাঠে। অরুণ জানালেন, এবার কল্যাণীতে প্রথম ডার্বি, আমি বহুবার ডার্বি দেখেছি। কিন্তু এই প্রথম আমাদের জেলায়। আমি গর্বিত। তাই চেয়েছিলাম ইতিহাসের সাক্ষী হতে। আশিয়ান কাপ জয় ইস্টবেঙ্গলের ইতিহাসে উজ্জ্বলতম অধ্যায়। ২০০৩ সালে ২৬ জুলাই দিনে আশিয়ান কাপ জিতেছিল ইস্টবেঙ্গল। এই দিন আবার কলকাতা লিগের ডার্বি জিততে পেরে বেজায় খুশি বিনো জর্জ। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তো সবার আগেই বলে বসলেন, ‘আপনাদের একটা কথা জানিয়ে রাখি, এই দিনটা ইস্টবেঙ্গলের কাছে একটা বিশেষ দিন। এই দিনেই আশিয়ান জিতেছিল ইস্টবেঙ্গল। ম্যানেজমেন্ট থেকে আমায় বলেছিল, এইদিনে হারা চলবে না। আমার ছেলেরা ম্যাচ জিতে ফিরেছে, আমি খুশি।’ কলকাতা লিগের ডার্বিতে নিজের প্রথম গোল বাবা- মাকে উৎসর্গ করলেন সায়ন। জানালেন, একটা খারাপ সময় যাচ্ছিল। সেটা কাটিয়ে উঠেছি। এই ম্যাচ আগামীদিনে আত্মবিশ্বাস জোগাবে।