না ফেরার দেশে “পিঞ্জরা”র খ্যাতনামা অভিনেত্রী! কিংবদন্তি সন্ধ্যার প্রয়াণ

জীবনাবসান প্রবীণ অভিনেত্রীর! হিন্দি ও মারাঠি সিনেমার কিংবদন্তি অভিনেত্রী সন্ধ্যা শান্তরাম আর নেই। শনিবার ৯৪ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। এই প্রবাদপ্রতিম অভিনেত্রী ছিলেন স্বনামধন্য চলচ্চিত্র নির্মাতা ভি শান্তরামের স্ত্রী। দীর্ঘদিন বার্ধক্যজনিত নানান অসুখে ভুগছিলেন বলে খবর। জানা গেছে, মুম্বইয়ের শিবাজি পার্কের বৈকুণ্ঠ ধামে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। পরিবারের সদস্য, ঘনিষ্ঠজন এবং অনুরাগীরা উপস্থিত থেকে প্রিয় তারকাকে শেষশ্রদ্ধা জানান। ভারতীয় সিনেমায় সন্ধ্যা শান্তারামের অবদান অভিনয়ের মাধ্যমে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। সন্ধ্যা শুধু কিংবদন্তি নির্মাতা ভি. শান্তারামের স্ত্রীই নন, নিজ গুণে প্রতিষ্ঠিত এক প্রতিভা। শান্তারাম তাঁর ১৯৫১ সালের ছবি ‘অমর ভূপালি’-তে কাজ করার জন্য সুযোগ দেন সন্ধ্যাকে।কোকিলকণ্ঠী বিজয়ার গানেই মুগ্ধ হয়ে যান সেকালের প্রযোজক-পরিচালক শান্তারাম। সেই শুরু। সেখান থেকেই একের পর এক অনবদ্য অভিনয় ও নাচের শৈলীতে দর্শকদের মন জয় করে নেন সন্ধ্যা। ‘ঝনক ঝনক পায়েল বাজে’ (১৯৫৫) চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি সবচেয়ে স্মরণীয় হয়ে আছেন। ছবিতে তাঁর সহ-অভিনেতা ছিলেন কত্থক নৃত্যের ওস্তাদ গোপী কৃষ্ণ, যিনি নিজেই তাঁকে নাচে প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন। এই ছবিটি চারটি ফিল্মফেয়ার ও সেরা হিন্দি ছবি হিসেবে জাতীয় পুরস্কার জিতে নেয়। সন্ধ্যার আরও উল্লেখযোগ্য ছবি হলো ‘দো আঁখে বারাহ হাত’ (১৯৫৭), ‘নবরং’ (১৯৫৯), ‘পিঞ্জরা’ (১৯৭২)।
১৯৩৮ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর জন্ম সন্ধ্যার। তখন নাম ছিল বিজয়া দেশমুখ। পরিচালক ভি. শান্তারাম বিবাহিত সত্ত্বেও সন্ধ্যার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরকিয়া প্রেমে জড়িয়ে যান। শান্তারাম তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী জয়শ্রী থেকে বিচ্ছেদের এক মাস পর সন্ধ্যাকে বিয়ে করেন। স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে সহকর্মীদের অনেকে বলেন, তার সময়ে কোনো পেশাদার কোরিওগ্রাফার ছিল না। সন্ধ্যা এবং পরিচালক ভি. শান্তারাম মিলে নাচের নতুন ভঙ্গি তৈরি করেছিলেন। মহারাষ্ট্র সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী আশিস শেলার সমাজ মাধ্যমে অভিনেত্রীর মৃত্যুর সংবাদ জানিয়ে লেখেন,‘ “পিঞ্জরা”র খ্যাতনামা অভিনেত্রী সন্ধ্যা শান্তারামের প্রয়াণ অত্যন্ত দুঃখজনক। হিন্দি ও মারাঠি সিনেমায় তাঁর অভিনয় ও নাচের মাধ্যমে তিনি দর্শকের মনে ছাপ রেখে গেছেন। তাঁর অভিনীত চরিত্রগুলো চিরকাল দর্শকের হৃদয়ে বেঁচে থাকবে।’