‘বাংলাদেশি ভাষার ‘টেক্সট’-এর অস্তিত্ব জানতাম না’, বিস্ফোরক সৃজিত, কৌশিক, পরমরা

0

এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক: 

বাংলা ভাষা না ‘বাংলাদেশি ভাষা’? সম্প্রতি এই বিষয়কে ঘিরেই উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। বিতর্কের আঁচ ছড়িয়েছে বিনোদন জগৎ পর্যন্তও। বাংলা ভাষাকে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ বলে একটি চিঠিতে উল্লেখ করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের অধীন দিল্লি পুলিশ। আর তারই বিরোধিতা করেছেন কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, সৃজিত মুখোপাধ্যায়, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু করে অনেকেই। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই বিষয় পোস্ট করেছিলেন অঙ্কুশ হাজরাও।

পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রিয় বিষয় বাংলা। শুধু তাই নয়, দীর্ঘ ৮ বছর ধরে বাংলা ভাষার শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতাও করেছেন। তিনি লেখেন, “‘বাংলাদেশি ভাষা’র ‘টেক্সট’ বলে কোনও কিছুর অস্তিত্ব আছে, জানতাম না। সেই ভাষা অনুবাদ না করলে তদন্ত বিঘ্নিত হচ্ছে এই চিঠিতে পড়লাম!” তিনি আরও যোগ করেন, ‘দিল্লিতে অজস্র বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলা ভাষার বহু শ্রদ্ধেয় অধ্যাপকেরা আছেন। প্রশাসন কি পারে না তাঁদের কাছে গিয়ে নিজেদের বাংলা ভাষা সম্পর্কে ধারণাটা স্বচ্ছ করতে? উইলিয়াম কেরি বাংলা ভাষাটা প্রাণ দিয়ে শিখেছিলেন বাংলার আত্মাকে বুঝতে। আজকের প্রশাসন বাংলা বিষয়ে অস্বচ্ছ হলে সাহায্য নিন। না হলে প্রশাসনিক চিঠিতে নিজেদের মারাত্মক অজ্ঞতা এমন বারবার সামনে আসবে। বাংলা ভাষা থেকে হাজারটা আঞ্চলিক উপভাষা তৈরি হলেও, ‘টেক্সট’ একমাত্র বাংলা। ধন্যবাদ।’

কেবল কৌশিকই নয়, সমাজমাধ্যমে এই প্রসঙ্গে দীর্ঘ পোস্ট করেছেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ও। যদিও শুরুতেই জানিয়েছেন, তাঁর পোস্টে কোনও রাজনৈতিক রং নেই। তাঁরও মতে, ‘বাংলাদেশি ভাষা’ বলে আলাদা কিছু রয়েছে, তা তিনি জানতেন না। তিনি লেখেন, ‘উপভাষা আলাদা হতে পারে। কিন্তু ভাষাটা একই। আমাদের ভাষা, আমাদের মাতৃভাষা— বাংলা।’

পাশাপাশি তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, আজও পাকিস্তানের বহু মানুষ পঞ্জাবি ভাষায়, এমনকি গুজরাতি ও সিন্ধি ভাষাতেও কথা বলেন। তা হলে কি পঞ্জাবি ভাষাকে ‘পাকিস্তানি ভাষা’ বলা হয়?

পরম আরও লেখেন, ‘এটা কি একটা অসাবধানতাবশত এবং অজ্ঞতাবশত ভুল? যদি হ্যাঁ, তাহলে বলতেই হবে, আপনাদের তথ্য নিয়ে আরও বেশি সতর্ক থাকা উচিত। আমরা হিন্দি এবং উত্তর ভারতে কথিত অন্যান্য সমস্ত ভাষা এবং তাঁদের সঙ্গে যুক্ত সমৃদ্ধ সংস্কৃতি উদযাপন করি! আমরা তাঁদের নিজেদের ভাষা হিসেবে গণ্য করি! আপনারাও কেন একই চেষ্টা করেন না?’

এর আগে দিল্লি পুলিশের সেই বিতর্কিত চিঠি সমাজমাধ্যমে ভাগ করে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন সৃজিতও। তিনি লিখেছিলেন, ‘মূর্খের দল, এটাকে বাংলাদেশি ভাষা বলে না। এক বাংলা বা বেঙ্গলি বলা হয়। যে ভাষায় আপনাদের জাতীয় সঙ্গীত, এটাও সেই ভাষাই। জাতীয় সঙ্গীত কিন্তু বাংলা ভাষাতেই লেখা হয়েছিল।’

এই ‘অন্যায়’-এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর কথা বলেছিলেন অঙ্কুশ হাজরাও। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি মন্তব্য ভাগ করে নিয়ে অভিনেতা লিখেছিলেন, ‘আমাদের উচিত সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এবং যেকোন মূল্যে মাতৃভাষাকে রক্ষা করা।’

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *