ঈর্ষায় বাবার বিরুদ্ধে ‘অন্তর্ঘাত’ করেছিলেন লতা-আশা, বিস্ফোরক মহ: রফি-পুত্র
এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক: কিংবদন্তি আশাজি কিংবা সুরসম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর, দুই বোনই ছিলেন ঈর্ষান্বিত। আর তারজন্যই কিংবদন্তি মহম্মদ রফির বিরুদ্ধে অন্তর্ঘাত করতেও পিছু পা হননি তাঁরা। ভারতীয় সঙ্গীত জগতের দুই কিংবদন্তি লতা মঙ্গেশকর ও আশা ভোঁসলের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছেন ভারতীয় চলচ্চিত্রের অন্যতম সেরা প্লেব্যাক গায়ক মহম্মদ রফির ছেলে শাহিদ রফি। এত বছর পর মহম্মদ রফির ছেলের এমন বিস্ফোরক অভিযোগ চমকে দিয়েছে সঙ্গীতমহলকে। তিনি স্পষ্ট জানান, ঈর্ষা ও নিরাপত্তাহীনতার কারণে ইচ্ছে করেই রফির কেরিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা করেছিলেন। এমন অভিযোগ অবশ্য কিশোর কুমারের বিরুদ্ধে করেননি শাহিদ রফি। বরং বলেছেন ভাল সম্পর্ক ছিল।
সাংবাদিক ভিকি লালওয়ানিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শাহিদ রফি এই মন্তব্য করেন। তিনি সাক্ষাৎকারে সরাসরি বলেন, ‘তাঁরা বাবার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষা করতেন লতা মঙ্গেশকর ও আশা ভোঁসলে। সবাই তাঁকে এক নম্বর বলত, আর সেটা তাঁদের ভাল লাগত না’। শাহিদ রফি পরিষ্কার বলেছেন, ‘বাবা (মহম্মদ রফি) তার সমসাময়িক গায়কদের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন তবে মঙ্গেশকর বোনদের সঙ্গে তাঁর সেই সম্পর্ক ছিল না। আসলে লতা মঙ্গেশকর ও আশা ভোঁসলে ঈর্ষান্বিত ছিলেন যে রফি সাহেব তাদের চেয়ে বেশি জনপ্রিয়। সাধারণ শ্রোতারা মহম্মদ রফিকেই এক নম্বর গায়ক হিসাবে মনে করতেন। সেটা মেনে নিতে পারেননি মঙ্গেশকর বোনেরা। দুই বোনই চেয়েছিলেন, বাকি গায়ক-গায়িকারা তাদের নীচে থাকুন। বাবাকে ৯ বছর ঘরে বসে থাকতে হয়েছিল। কোনও সঙ্গীত পরিচালক তাঁকে গাওয়ার সুযোগ দেননি। যে কারণে বাবা হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। অথচ সত্তরের দশকে তিনি যে গান গেয়েছিলেন তা একবার শুনুন।
তাহলেই বুঝতে পারবেন মহম্মদ রফি কত উঁচু দরের শিল্পী। শাহিদ আরও বলেন, ‘লতাজি মারা যাওয়ার আগেই আমি এই কথাগুলো বলেছিলাম। তিনি বলেছিলেন, বাবার তাঁর কাছে গিয়ে অনুরোধ করেছিলেন, লতাজি, আমাকে ক্ষমা করে দিন। আমার পতনের দিন ঘনিয়ে এসেছে। কেউ আর আমাকে গান দিচ্ছে না। আমি আবার আপনার সঙ্গে গান গাইতে চাই। কিন্তু আমি জানি, আমার বাবা এমন কথা কখনও বলেননি। বরং লতাজিই সেই কথাগুলো বলেছিলেন। দু’জন মানুষ এসেছিলেন বাবার কাছে। তাঁরা বলেছিলেন, রফি সাহেব, ওঁকে ক্ষমা করে দিন। তখন বাবা ছিলেন শিখরে। আর সেই কারণে ওঁরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলেন।’ বলিউডের অন্দরে কান পাতলেই একসময়ে লতা-আশার মধ্যে রেষারেষির কথা শোনা যেত। কিন্তু এবার তাঁদের বিরুদ্ধেই রফির কেরিয়ার শেষ করে দেওয়ার মতো অভিযোগ তুললেন তাঁর ছেলে। তাতেই যেন মহম্মদ রফির মৃত্যুর চারদশক পরেও নতুন করে বিতর্কের জন্ম নিল।