আমার নামে করে দিও… চাঁদের হাটে কীসের অনুরোধ ‘বাগান রত্ন’ টুটু বসুর !

ইতিহাস, মিলিয়ে দেয় আবেগ, ফিরিয়ে দেয় ভালবাসা। বৃষ্টিভেজা দিনেই মোহনবাগান দিবসে কোনও গোষ্ঠী থাকল না। দেবাশিস-সৃঞ্জয়ের মিলিত উদ্যোগে উজ্জ্বল হয়ে উঠল মোহনবাগান দিবস। সকাল থেকে ক্লাবে অনুষ্ঠান, সন্ধেয় নেতাজী ইন্ডোরে। রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস থেকে গায়ক বাবুল সুপ্রিয়। অভিনেতা প্রসেনজিৎ থেকে বিসিসিআইয়ের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। ইন্ডোরে আলো ঝলমলে পরিবেশে একেবারে চাঁদের হাট। তবে মধ্যমণি একজনই, তিনি টুটু বোস। এবারের মোহনবাগান রত্ন। তিনি আবেগপ্রবণ মানুষ। এদিন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের হাত থেকে ‘রত্ন’ পেয়ে ভেসে গেলেন নস্ট্যালজিয়ায়, আপামোর সমর্থক-সদস্য-ভক্ত-অতিথিদের ভাসিয়ে দিলেন আবেগে। একটাই আব্দার করলেন, মোহনবাগানের ক্যান্টিন নিজের নামে চান। তিনি বলেন, ‘আমার চেহারা দেখেই বোঝা যাচ্ছে আমি খাদ্যরসিক। ক্যান্টিন ৩০ লাখ টাকা দিয়ে করে দিয়েছিলাম। আমরা স্টু পাউরুটি খেয়ে উদ্বোধন করেছিলাম। আমি মারা গেলে ক্যান্টিন আমার নামে করে দিও।’ গল্প শোনালেন পুরনো দিনের। টুটু বসু বলেন, ‘আইনে ছিল বিদেশি প্লেয়ার খেলাতে পারবে না। আমি সেই কাগজ ছিঁড়ে ফেলেছিলাম। বলেছিলাম যা হওয়ার হবে। চিমা তখন সবে বিয়ে করেছে। ওর সঙ্গে কথা বলতে যাই। টাকা পয়সার বিষয়ে স্ত্রী ক্যাথির সঙ্গে কথা বলতে বলে। সে তখন রান্না করছিল। রান্না ঘরে গিয়ে কথা বলি। সবসময় ক্লাবের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি।’১৯১১ সালে খালি পায়ে ব্রিটিশদের হারিয়ে আইএফএ শিল্ড জিতেছিল যে দল, সেই দলটার নাম ছিল মোহনবাগান। ১১ জন বাঙালির গায়ে ছিল সবুজ-মেরুন জার্সি। সেই মোহনবাগানকেই পরবর্তীকালে আগলে রেখেছিলেন টুটু বোস। তিনি বলেন, ‘মোহনবাগান রত্ন হওয়ার জন্য এক লাখ টাকা পেয়েছি। ক্লাবে ৪ লাখ টাকার চেক পাঠিয়ে দেব। মোহনবাগান ক্লাবে এখন আজীবন সদস্য ১৯ জন। পরের জন্ম ২০ নম্বর আজীবন সদস্য হতে চাই’। এ বছর মোহনবাগানের সেরা ফুটবলার নির্বাচিত হয়েছেন আপুইয়া। সেরা উদীয়মান ফুটবলারের পুরস্কার পেলেন দীপেন্দু বিশ্বাস। ‘সেরা সমর্থক’ রিপন মণ্ডল। প্রতুল চক্রবর্তী নামাঙ্কিত সেরা রেফারির পুরস্কার দেওয়া হয় মিলন দত্তকে। মতি নন্দীর নামে সেরা ক্রীড়া সাংবাদিকের মরণোত্তর পুরস্কার পান অরুণ সেনগুপ্ত ও মানস চক্রবর্তী। লাইফ অ্যাচিভমেন্টে পুরস্কার পেলেন রাজু মুখোপাধ্যায়। মঙ্গলবার সকাল ৯টায় মোহনবাগান লেন থেকে অমর একাদশকে মাল্যদান করে শুরু হয় মশাল যাত্রা, যা শহর পরিক্রমা করে পৌঁছায় ক্লাব প্রাঙ্গণে। এরপর পতাকা উত্তোলন এবং প্রাক্তন ফুটবলারদের ‘রি-ইউনিয়ন’ ম্যাচ হয় মোহনবাগান মাঠে। ইন্ডোরে বাড়তি পাওনা ছিল ইমন চক্রবর্তীর গান।