‘আজ তোমার কথা খুব মনে পড়ছে, বন্ধু,’ সিদ্ধার্থ শুক্লার মৃত্যুবার্ষিকীতে টুইটারে শেষ পোস্ট শেফালির, কে জানত…

বলিউডে তোলপাড়—প্রথম সিদ্ধার্থ, ২০২১ সালে মাত্র ৪০ বছর বয়সে হৃদরোগে মারা যান। এবার প্রায় চার বছর পর, একইভাবে পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলেন শেফালি—মাত্র ৪২ বছর বয়সে, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে।
২০২৪ সালের ২ সেপ্টেম্বর, সিদ্ধার্থ শুক্লার মৃত্যুর তৃতীয় বর্ষপূর্তিতে শেফালি জরিওয়ালা লিখেছিলেন—“আজ তোমার কথা খুব মনে পড়ছে, বন্ধু… @sidharth_shukla” সঙ্গে ছিল ‘বিগ বস ১৩’-এর সেটে তোলা তাঁদের একটি পুরনো ছবি। আজ সেই টুইটই ভাইরাল, কারণ এটাই এক্স হ্যান্ডেল তাঁর শেষ পোস্ট। কে জানত এক বছরের মধ্যেই সেই পরিণতি অপেক্ষা করে আছে অভিনেত্রীর জীবনেও।

দুজনেই ছিলেন ফিটনেস ফ্রিক, যোগচর্চা করতেন নিয়মিত। সিদ্ধার্থ যেমন ছিলেন মডেল, অভিনেতা, ‘বালিকা বধূ’, ‘দিল সে দিল তাক’ বা ‘হাম্পটি শর্মা কি দুলহানিয়া’-র তারকা, তেমনি ২০১৯-এ ‘বিগ বস ১৩’-এর বিজয়ী হিসেবেও জনপ্রিয়। শেফালিও বলিউডে ঢুকে পড়েন ১৯ বছর বয়সে, মাত্র একটি মিউজিক ভিডিওতেই—‘কাঁটা লাগা’ তাঁকে রাতারাতি তারকা করে তোলে। কিন্তু সব রুটিন, ডায়েট, ব্যায়াম ছাপিয়ে মৃত্যু যেভাবে এসে থামাল তাঁদের জীবন, তাতে প্রশ্ন উঠছেই—এত যত্ন করেও যদি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়, তবে কোথায় গেল সেই সচেতনতা?

জানা যায়, একসময় তাঁরা প্রেমের সম্পর্কে ছিলেন। পরে ব্রেক-আপ হলেও এক সাক্ষাৎকারে শেফালি বলেছিলেন, “আমরা খুবই যুক্তিবাদী। অনেক কিছু নিয়ে আলোচনা করতাম—স্পেস, ট্রাভেল, বুলেট ট্রেন…. পরে বন্ধুত্বটাই থেকে গিয়েছিল।” পরে অবশ্য পরস্পরের জীবনে এগিয়ে যান।
কিন্তু লাইমলাইটের বাইরে শেফালির জীবনে চলছিল এক অন্য সংগ্রাম—মাত্র ১৫ বছর বয়সে ধরা পড়ে মৃগীরোগ। পরীক্ষার সময় বা মঞ্চে পারফর্ম করার মুহূর্তে হঠাৎ খিঁচুনি, উদ্বেগ, আত্মবিশ্বাসের অভাব—এই সবের সঙ্গে লড়াই করেই তৈরি হয়েছিলেন শেফালি।
নিজেই বলেছিলেন, ‘চিকিৎসা, যোগ এবং ইতিবাচক মনোভাব আমাকে বাঁচিয়েছে। গত ১৫ বছর মৃগী হয়নি।’ ব্যক্তিগত জীবনে একবার বিবাহবিচ্ছেদ, পরে ছোটপর্দার অভিনেতা পরাগ ত্যাগীর সঙ্গে সংসার। কিছুটা স্থিতিশীল হলেও, কী এমন ঘটল যা মাত্র ৪২ বছরেই তাঁর জীবন থামিয়ে দিল?
মৃত্যুর দু’দিন আগে ফটোশুট করেছিলেন। কে জানত, সেটাই তাঁর শেষ প্রকাশ্যে আসা মুহূর্ত?
শেফালির আকস্মিক প্রয়াণের খবরে সোশ্যাল মিডিয়া ভরে উঠেছে শোকবার্তায়। তাঁর প্রিয় বন্ধু মিকা সিং লেখেন, ‘আমি গভীরভাবে আঘাত পেয়েছি। মন ভার হয়ে আছে। আমাদের সবার প্রিয় শেফালি আর নেই।’
দুই প্রতিযোগী, এক বিগ বস, একরকম লাইফস্টাইল, একইরকম মৃত্যু—এই সংযোগ নিছক কাকতালীয়? নাকি তার আড়ালে লুকিয়ে আছে আরও গভীর কোনও অসুখের সঙ্কেত?
এই গল্প শুধু দুই তারকার নয়, এই সময়েরও। এখন ‘বিগ বস ১৩’-এর রঙিন মুহূর্তগুলো যেন একান্ত স্মৃতি।