ইডেনে সিএবির জমকালো সংবর্ধনা, বিশ্বজয়ী রিচাকে বঙ্গভূষণ ও ডিএসপি পদে চাকরি সরকারের

0

বিমানবন্দর থেকে ইডেন। উষ্ণ অভ্যর্থনায় ভাসলেন বিশ্বজয়ী রিচা। সেটাই স্বাভাবিক। বাংলার একমাত্র ক্রিকেটার, যার কাছে এখন ক্রিকেট বিশ্বজয়ের সোনার পদক। শনিবার বিকেলে ক্রিকেটের নন্দনকানন ইডেনে জমকালো সংবর্ধনায় ভেসে গেলেন যেন শিলিগুড়ির মেয়ে রিচা।সিএবির পক্ষ থেকে তো সংবর্ধনা পেলেনই, রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকেও দেওয়া হল সারপ্রাইজ গিফট।


বিশ্বকাপজয়ী রিচা ঘোষকে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে চাঁদের হাট বসেছিল ইডেনে। সেখানেই আমন্ত্রিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রিচার হাতে সংবর্ধনা মঞ্চেই তুলে দিলেন তিনি ‘বঙ্গভূষণ’ সম্মান। সেইসঙ্গে ক্রীড়া দফতর এবং রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হল ডিএসপির চাকরি।

বিশ্বকাপ জয়ী বঙ্গসন্তানের হাতে তুলে দেওয়া হয় সোনার চেন। এরই পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অফ বেঙ্গলের তরফ থেকে তুলে দেন সোনার ব্যাট-বল। সেইসঙ্গে ৩৪ লাখ টাকার চেক।  ফাইনালে রিচার ৩৪ রানের বিধ্বংসী ইনিংস ভারতের জয়ের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সেই ইনিংসকে স্মরণীয় করতেই ৩৪ সংখ্যাটা বাছা হয়েছে। পাশেই ছিলেন ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, প্রতিমন্ত্রী মনোজ তিওয়ারি, সিএবি সভাপতি তথা প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, ঝুলন গোস্বামী, অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী সহ অন্যান্য সিএবির পদাধিকারীরা।এছাড়াও দেওয়া হয় একটি ক্রিস্টালের স্মারক, উত্তরীয়, ফুলের স্তবক এবং মিষ্টি।


এই অনুষ্ঠানেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সংবর্ধনার জন্য ফ্রিডম ট্রফির রেপ্লিকা তুলে দেন সিএবি সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। সেইসঙ্গে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্টের আমন্ত্রণও জানান তিনি। সেই ট্রফির রেপ্লিকাটিও উপহার স্বরূপ রিচা ঘোষকেই দেন মুখ্যমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘আমরা চাই রিচা একদিন ঝুলন গোস্বামীর মতো জায়গায় পৌঁছাবে। একদিন যেন আমরা এখানে দাঁড়িয়ে বলতে পারি রিচা ইন্ডিয়ার ক্যাপ্টেন। ’ রিচাকে একনম্বরে দেখতে চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। ক্রীড়ামন্ত্রী থাকাকালীন বুলা চৌধুরী, সাইনা আব্রাহামকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করেন। অলিম্পিকের সময় স্পোর্টস পলিসি করেছিলেন। প্রথম বঙ্গতনয়া হিসেবে রিচার বিশ্বকাপ জয়ে উচ্ছ্বসিত মুখ্যমন্ত্রী।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ঝুলনরা জীবন পাত করেছে এই দিনটার জন্য। একটুর জন্য পারেনি। রিচারা পেরেছে। ওদের কর্মের ফল এটা। ওকে এই জায়গা তৈরি করে দেওয়ার জন্য শ্যামা দেবীকে অভিনন্দন। রিচা সহ ভারতীয় দলকে শুভেচ্ছা। বাবা-মা, বন্ধু-বান্ধব, কোচের সাহায্য না থাকলে এই জায়গায় পৌঁছতে পারত না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি চাই মেয়েরা আরও এগিয়ে যাক। আমরা রিচার থেকে প্রত্যাশা রাখব, কিন্তু ওকে চাপ দেব না। রিচা বিশ্বসেরা হয়েছে। আশা করি ভবিষ্যতে আরও এগিয়ে যাবে। মানসিক শক্তি রাখতে হবে। দুর্গমকে হয় করতে হবে। লড়তে হবে, খেলতে হবে, জিততে হবে।’ 


শুক্রবার বিশ্বজয় করে ঘরে ফেরেন শিলিগুড়ির রিচা ঘোষ। শুক্রবার দুপুরে বাগডোগরা বিমানবন্দরে নামার পর থেকেই শুরু হয়ে যায় সংবর্ধনার পর্ব। লাল গালিচায় পা রেখে, জাতীয় পতাকায় মোড়া হুডখোলা গাড়িতে চেপে শহরে ফেরেন বিশ্বজয়ী রিচা। শনিবার সকালেই বাবা-মাকে নিয়ে কলকাতায় পা রাখেন রিচা। বিমানবন্দরেই উষ্ণ অভ্যর্থনায় ভেসে যান বিশ্বজয়ী এই বঙ্গক্রিকেটার।

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *