‘ফোন বন্ধ চার মাস, কাজ ছিল না’, ‘টু ইন্ডিয়াস’ বিতর্কের পর থমকে যায় বীরের কমেডি
এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক: একজন কমেডিয়ানের জীবন কেমন হয়? দর্শকরা তো কেবল মঞ্চের আলোয় তার ঝলমলে দিকটাই দেখে। হাততালির শব্দ আর হাসির রোল, এটুকুই তাঁদের কাছে আসল ছবি। কিন্তু সেই হাসির নেপথ্যে যে কতটা যন্ত্রণা, কতটা একাকীত্ব লুকিয়ে থাকে, তা কি সবাই জানতে পারে? বীর দাস, যার একটি কথা গোটা দেশে ঝড় তুলেছিল, ‘টু ইন্ডিয়াস’ বিতর্কের পর তাঁর জীবনের সেই অচেনা অধ্যায়টা তিনি খুলে বললেন ।
তাঁর ‘টু ইন্ডিয়াস’- এর বিতর্কটা ঠিক কী নিয়ে? ব্যাপারটা একটু গোড়া থেকে বলা যাক। তাঁর স্ট্যান্ড-আপ পারফর্ম্যান্সে ‘টু ইন্ডিয়াস’ এর সেটে তিনি দেশবাসীর সামনে দুটি ভিন্ন বাস্তবতার ছবি তুলে ধরেছিলেন—একদিকে দেশের সমৃদ্ধি, অন্যদিকে কিছু অন্ধকার দিক। যেমন, যেখানে আমরা দিনের বেলায় মহিলাদের পূজা করি, সেখানেই রাতে তাঁদের প্রতি ঘটে যায় বর্বরতা। এই কথাগুলোই তুলেছিল ঝড়।
সম্প্রত্তি একটি সাক্ষাৎকারে মুখ খুললেন তিনি। ‘টু ইন্ডিয়াস’ শো এর পর শুরু হয় এক বড়সড় বিতর্ক। আর তার ফল কী হল? চার মাস ফোন বন্ধ। কাজ নেই। একরাশ হতাশা নিয়ে বীর চলে গেলেন গোয়ায়। ভাবলেন, গোয়ার শান্ত পরিবেশে বুঝি সব ভুলে থাকা যাবে। গোয়ার দিনগুলো যেন ৩৭ ঘণ্টার মতো দীর্ঘ। সেখানকার মানুষরা বিচারহীন, তাঁরা জানেন বাইরে থেকে আসা মানুষজন কিছু না কিছু থেকে পালাতে চাইছে। বীরও পালাচ্ছিলেন। কিন্তু একটা সময় তিনি বুঝলেন, আর পালিয়ে বেড়ানো নয়, এ বার ফিরতে হবে। কিন্তু কেন পালিয়েছিলেন? বীর বললেন, “প্রায় দেড় বছর কোনও কাজ ছিল না। ফোন বাজলেও তাতে কেবল হুমকি আসত। লোকে বলত, ‘কোথায় তুই? খুঁজে বের করব’।” এই হতাশার সময়েই তিনি গোয়ায় বসে নিজেকে খুঁজেছেন, লিখেছেন। কোথাও যেন তাঁর একা সময় কাটাতে বেশ ভালোই লেগেছে সেই সময়ে।
একদিন তিনি বিমানে ঘুম থেকে উঠে দেখেন, তিনি লন্ডনে যাচ্ছেন, অথচ তাঁর মনে ছিল তিনি সিঙ্গাপুর থেকে মুম্বই ফিরবেন। শেষ মুহূর্তে নিজেই লন্ডন যাওয়ার টিকিট কেটেছিলেন, কিন্তু সেই ৭৫ ঘণ্টার ঘটনা পুরোটাই তাঁর মন থেকে মুছে গিয়েছিল। দিশাহারা হয়ে তিনি প্লেনের ভেতর চিৎকার করে উঠেছিলেন, ‘না, এই ফ্লাইট মুম্বই যাচ্ছে!’ তাঁর থেরাপিস্ট তাকে পরে জানিয়েছিলেন, অতিরিক্ত চাপ আর ভ্রমণের কারণে এমনটা হয়েছে। ‘টু ইন্ডিয়াস’ বিতর্কের পর ভারতে শো করার সুযোগ না থাকায়, তিনি বিদেশে এক বছরে ১৮৬টা শো করেছিলেন।
অবশেষে ফেরেন মুম্বই। তৈরি করেন নেটফ্লিক্স স্পেশাল ‘বীর দাস : ল্যান্ডিং’, যেটা তাঁকে ফিরিয়ে দেয় পুরনো ট্র্যাকে। আর শুধু ফিরিয়ে দেয় না, তাঁকে এনে দেয় ‘এমি অ্যাওয়ার্ড’