মীরা নায়ারের ছেলের ইতিহাস! নিউইয়র্কের নবনির্বাচিত মেয়র মামদানি। বাজল ধুম মাচালে..

0

এও এক ইতিহাস। নিউ ইয়র্কের ১১১তম মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন ডেমোক্র্যাট নেতা জোহরান মামদানি।

কে এই মামদানি?
ভারতের বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা মীরা নায়ারের পুত্র। বাবা উগান্ডার খ্যাতনামা লেখক মাহমুদ মামদানি। ফলে, তিনি প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভূত, যিনি মেয়র পদে আসীন হলেন নিউ ইয়র্কে।মামদানি হচ্ছেন প্রথম দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত এবং আফ্রিকায় জন্মগ্রহণকারী প্রথম মেয়র।

কীভাবে গড়লেন ইতিহাস? 
এক শতাব্দীর মধ্যে ৩৪ বছরের মামদানি হচ্ছেন সবচেয়ে কনিষ্ঠ মেয়র। শুধু তাই নয় নিউ ইয়র্ক প্রথমবারের মতো একজন মুসলিম মেয়র পেল। নতুন বছরের প্রথম দিনে অর্থাৎ ১ জানুয়ারি তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।

কীভাবে জয়?
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুঁশিয়ারির তোয়াক্কা না করেই এই জয় ছিনিয়ে আনেন মামদানি। জয়ের পথে তিনি পরাজিত করেছেন নিউ ইয়র্কের স্টেট গভর্নর, নির্দল প্রার্থী অ্যান্ড্রু কুওমোকে। নির্বাচনে প্রাথমিকভাবে রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস সিলওয়া প্রতিদ্বন্দ্বিতার দৌড়ে থাকলেও পরে তিনি নাম প্রত্যাহার করে নেন।

নজর কাড়লেন প্রথম ভাষণেই
মেয়র নির্বাচিত হবার পর নিউ ইয়র্কের মানুষের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন মামদানি। যেখানে জওহরলাল নেহেরুর ঐতিহাসিক ‘ট্রাইস্ট উইথ ডেস্টিনি’র আদলে তিনি বক্তব্য রাখেন। ১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতার প্রাক্কালে জওহরলাল নেহেরুর ভাষণের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘আপনাদের সামনে দাঁড়িয়ে এখন আমার জওহরলাল নেহেরুর কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। ইতিহাসে এমন কিছু মুহূর্ত আসে, যখন আমরা পুরোনো থেকে নতুনের দিকে পা রাখি। যখন একটি যুগ শেষ হয় এবং দীর্ঘদিন ধরে চাপা পড়ে থাকা কোনও জাতির আত্মা কিছু বলতে পারে। এখন আমরা পুরোনো থেকে নতুনের দিকে পা রেখেছি।’

কী বললেন মা মীরা
মীরা নায়ার একজন সমাজকর্মী ও চলচ্চিত্র পরিচালক। ১৯৮৮ সালে মুক্তি পায় ‘সালাম বোম্বে’ সিনেমা। মুম্বাইয়ের পথশিশুদের নিয়ে এটা তৈরি করেন মীরা। এই সিনেমার সূত্র ধরেই মীরা নায়ার আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিতি পান। সেরা বিদেশি সিনেমা ক্যাটাগরিতে ‘সালাম বোম্বে’ সিনেমা অস্কার, বাফটা ও গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ডে নমিনেশন জিতেছিল সেসময়। পরিচালক বলেন, ‘আমি আমার ছেলের সাহস ও বাচনভঙ্গিমা দেখে অবাক হয়ে যাচ্ছি। ওর যেটা আমার ভাল লাগে তা হল, ও এই বিশ্বের ভিন্নতাকে বৈচিত্রময়তাকে দ্ব্যর্থহীন ভাবে গ্রহণ করেছে। ও যে আশা দেখিয়েছে, তাতে আশাবাদী আমি।’

মঞ্চে বাজল ধুম মাচালে..
জোহরান মামদানির জীবনে ভারতীয় টান বেশ প্রবল। বিজয় ভাষণের শেষে স্ত্রী আর মা–বাবাকে যখন মঞ্চে ডেকে নেন, তখন বাজছিল বলিউডের জনপ্রিয় ‘ধুম মাচালে’ গান।  স্ত্রী সিরিয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক রমা দুওয়াজিকে মঞ্চে ডেকে নেন তিনি। ঠিক তখনই আবহ সংগীত হিসেবে বেজে ওঠে ‘ধুম মাচালে’ গান। এরপর একে একে মঞ্চে আসেন জোহরান মামদানির মা–বাবা।  তাঁরা দুজনই জন্মগতভাবে ভারতীয়। তাঁর বিজয় মঞ্চ যে সত্যিই ধুম মাচালে।

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *