মাত্র তিন দিনে সব শেষ! ‘ভদ্রা পিসি’র প্রয়াণে শোকস্তব্ধ সুদীপ্তা, শোকপ্রকাশ সুদীপ, রাহুলের
টলিপাড়ায় শোকের ছায়া। প্রয়াত অভিনেত্রী ভদ্রা বসু। নাটকের মঞ্চ থেকে ছোটপর্দা, ওয়েব সিরিজ,বড়পর্দা—সর্বত্র চুটিয়ে অভিনয় করেছেন তিনি। শেষ তাঁকে দেখা গিয়েছিল ‘বেলা’ ছবিতেও। কিন্তু আচমকা কী ঘটল? শোনা গিয়েছে, অনেক দিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন অভিনেত্রী। দিন তিনেক আগে মাথায় অস্ত্রোপচারও হয়েছিল। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছিল। তাই অস্ত্রোপচার হয়। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। না ফেরার দেশে অভিনেত্রী ভদ্রা। শুক্রবার রাত ১২টা নাগাদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন অভিনেত্রী। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৫।

তাঁর চলে যাওয়া এখনও মানতে পারছেন না অনেকেই। অভিনেতা, অভিনেত্রীরা একে একে প্রবীণ অভিনেত্রীর সঙ্গে কাটানোর মুহূর্ত ভাগ করে নিচ্ছেন সমাজমাধ্যমে। ‘তিনকাহন’, ‘তাহাদের কথা’— ভদ্রার অভিনয়জীবনের অন্যতম আলোচিত ছবি। তাঁর দুই কন্যা আনন্দী বসু এবং দামিনী বসু। শনিবার সকালে মাকে হারানোর খবর সমাজমাধ্যমে জানান দামিনী। সেই মায়ের সঙ্গে ছোটবেলার একটি ছবি ভাগ করে নিয়েছেন তিনি। ছবিতে অভিনেত্রী লেখেন, “চিরন্তন রোদের কিরণ..মা ৷” রাহুল অরুণোদয় বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে সুদীপ্তা চক্রবর্তী সবাই সমাজমাধ্যমে নিজেদের মনখারাপের কথা লিখেছেন। সুদীপ্তা তাঁর ভদ্রা পিসির কথা বলতে গিয়ে লেখেন, ” ‘…নিজের এথিক্স-এ অনড়, একনিষ্ঠ এক থিয়েটার কর্মী যাঁর জীবন-যৌবন থিয়েটারেই সমর্পিত, সিনেমার শুটিং এ দারুণ পেশাদার… বেশ কিছু বছর ধরে বাংলা সিনেমা ও বিজ্ঞাপনের অপরিহার্য মুখ — চলে গেলেন’। রাহুল লেখেন, “আমি মনের দিক দিয়ে এক কিশোরী সহ অভিনেত্রীকে হারালাম। আমরা হারালাম অন্যতম শক্তিশালী এক অভিনেত্রীকে। ভদ্রা দি।”

অভিনেতা সুদীপ মুখোপাধ্যায়ও এই ঘটনায় কিছু বলার পরিস্থিতিতে নেই। স্ত্রী দামিনীর সঙ্গে সম্পর্ক ভাঙলেও শাশুড়ির সঙ্গে সম্পর্ক অটুট ছিল তাঁর। আডিশনকে অভিনেতা বলেন,“অভিনয় করতে গিয়ে অসিত বসুর সঙ্গে আলাপ হয়েছিল আমার। সেই সূত্রে ওনার সঙ্গে আলাপ হয়েছিল আমার। খুব ইতিবাচক মানুষ ছিলেন। ছেলের মতো ভালবাসতেন আমায়। সেরিব্রাল অ্যাটাক হয়েছিল। খানিকটা প্রস্তুত ছিলাম সবাই। খুব স্নেহপ্রবণ মানুষ ছিলেন। রাতেই আমায় খবর দেওয়া হয়েছিল, গিয়েছিলাম।” নিমতলা ঘাটে হয়েছে তাঁর শেষকৃত্য। সবটাই সামলেছেন দুই মেয়ে। অভিনেত্রীর ছাত্রছাত্রীরাও উপস্থিত হয়েছিলেন। অভিনয়ের পাশাপাশি বেশ কিছু জনপ্রিয় নাটক পরিচালনা করেছেন তিনি। সুমন মুখোপাধ্যায়ের ‘পুতুলনাচের ইতিকথা’ ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে দেখা গিয়েছিল তাঁকে।

উল্লেখ্য, ভদ্রা বসুর স্বামী অসিত বসুও একজন বিখ্যাত নাট্যকার, অভিনেতা এবং নির্দেশক। তিনি নাট্যব্যক্তিত্ব উৎপল দত্তের শিষ্য হিসেবে পরিচিত এবং বাংলা থিয়েটার জগতে “দ্য লাস্ট অফ দ্য মোহিকান” নামে পরিচিত। তিনি মঞ্চ, যাত্রা এবং চলচ্চিত্রেও কাজ করেছেন।
