যুবভারতীতে লজ্জা! মেসি বরণ পরিণত হল ক্ষোভে! স্টেডিয়াম জুড়ে ভাঙচুর, চরম বিশৃঙ্খলা
মেসি উন্মাদনা পৌঁছল চরম বিশৃঙ্খলায়! যুবভারতীতে মানুষের আনন্দ পরিণত হল ক্ষোভে! লজ্জাজনক অধ্যায় তৈরি হল মেসিকে ঘিরে। যুবভারতীতে কনসার্টে মেসিকে স্পষ্ট দেখতে না পেয়ে ছোড়া হল জলের বোতল। ছিঁড়ে ফেলা হল ব্যানার। এমনকি দর্শক আসনের চেয়ার ও গেট ভাঙার চেষ্টা। মাঠে ঢুকে পড়ল দর্শক। চরম বিশৃঙ্খলায় বিরক্ত মেসি অনুষ্ঠানের মাঝেই মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যান। মাঝরাস্তা থেকে ফিরে যান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

শনিবার সকাল তখন ১১ টা বেজে ৩০ মিনিট। ঠিক সেসময় যুবভারতীতে মেসির গাড়ি ঢোকে। স্বাভাবিকভাবেই প্রিয় তারকা ফুটবলারকে দেখতে ভক্তদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মত। চড়া দাম দিয়ে টিকিট কেটেই যুবভারতী ভরিয়েছিলেন মেসিভক্তরা। মাঠে মহাতারকা এলেও দীর্ঘক্ষণ ধরে মেসিকে দেখার সুযোগ হয়নি দর্শকদের। মূলত নেতা-মন্ত্রী, ভিভিআইপিদের ঘেরাটোপে আড়ালেই থেকে গিয়েছিলেন ফুটবলের রাজপুত্র। যার ফলে রীতিমত ক্ষোভে ফেটে পড়েন দর্শকরা। শুরু হয় চরম বিশৃঙ্খলা। দর্শকরা নিজেদের আসন থেকে জলের বোতল ছুঁড়তে থাকে। ছিঁড়ে ফেলে হেন্ডিং, ব্যানার। এমনকি দর্শকরা চেয়ার ও গেট ভাঙারও চেষ্টা করে। পুলিশও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। মিনিট ২০ মাঠে থাকার পর বিরক্ত মেসি মাঠ ছেড়ে বেড়িয়ে যান।

মেসি ফিরে যেতেই যুবভারতী যেন রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। গ্যালারি থেকে সমর্থকরা মাঠের মধ্যে নেমে আসেন। শুরু হয় ভাঙচুরের পালা। একের পর এক চেয়ার উড়ে আসতে শুরু করে। ভেঙে ফেলা হয় ক্যানোপি। ভাঙা হয় যুবভারতী স্টেডিয়ামের গোলপোস্ট। ভেঙে ফেলা হয় বাকেট চেয়ার।
বেলা সাড়ে দশটা নাগাদ অনীক ধর বন্দেমাতরম গেয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন। পরিকল্পনা মতোই ট্যাঙ্গো ও রবীন্দ্রসঙ্গীতের ফিউশন পরিবেশন করা হয়। বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ বিশাল কনভয়ে নিরাপত্তাবেস্টনীর মধ্যে মেসি ঢোকেন যুবভারতীতে। কালো ফুলস্লিভ টি শার্টে ছিলেন মেসি। সেইসঙ্গে মেসির সতীর্থ রদ্রিগো দি পল এবং উরুগুয়ের ফুটবলার লুই সুয়ারেজ। তখন যুবভারতী জুড়ে ছিল মেসি-মেসি জয়ধ্বনি। গ্যালারির উদ্দেশ্যে হাত নাড়েন মেসি। আর্জেন্টাইন তারকাকে স্বাগত জানান ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।

এরপরই তাল কাটার শুরু। মেসিকে ঘিরে ধরেন সবাই। সেলফি তোলার হিড়িক শুরু হয় সকলের। এরমধ্যেই তুলে দেওয়া হয় মোহনবাগানের পক্ষে সবুজ মেরুন জার্সি। এরপরই আসার কথা ছিল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, শাহরুখ খান ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কিন্তু ধৈর্য রাখতে পারেননি দর্শকরা। দর্শকাসন থেকে মানুষের ভিড়ে দেখাই যাচ্ছিল না মেসিকে। হাজার হাজার টাকা খরচ করে টিকিট কাটার পরও মেসিকে দেখতে না পেয়ে যা ঘটল, তাতে লজ্জাই পাওনা হল যুবভারতীর। আরও একবার যেন কলঙ্কিত হল যুবভারতী।
