৫ সদস্যের তদন্তকারী দল গঠন পুলিশের, রিপোর্ট তলব জাতীয় মহিলা কমিশনের

কসবার আইন কলেজে গণধর্ষণের ঘটনার তদন্তে কলকাতা পুলিশ বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করল। সহকারী পুলিশ কমিশনার প্রদীপ ঘোষালের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের এই দল এরমধ্যেই নির্যাতিতা ও তার বাবা মায়ের গোপন জবানবন্দি রেকর্ড করার জন্য পরিবারের কাছে আবেদন জানিয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। কসবা কাণ্ডের পুনঃগঠন করা হতে পারে বলেও জানা গেছে। কসবা কাণ্ডে মেডিকো লিগ্যাল পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলেও পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে। অভিযুক্তদের ভূমিকা খতিয়ে দেখতে এই মেডিকো লিগাল পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত। শরীরের আহত বিভিন্ন চিহ্ন থেকে শুরু করে যাবতীয় প্রমাণ খুঁজে পেতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। শনিবারই নির্যাতিতার গোপন জবান বন্দি নেওয়া হয়েছে আলিপুর আদালতে।
এদিকে, শনিবার গ্রেফতার হওয়া নিরাপত্তারক্ষী পিনাকী বন্দোপাধ্যায়কে আলিপুর আদালতে তোলা হলে, আদালত পয়লা জুলাই পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের আদেশ দেয়। গার্ডের সঙ্গে যোগসাজশ করেই নির্যাতিতার ওপর গণধর্ষণ চালায় অভিযুক্তরা,পুলিশের প্রাথমিক অনুমান। পুলিশ জানায়, সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজের ধর্ষিতা ছাত্রী পুলিশকে জানিয়েছেন, ধর্ষণের ঘটনার আগে বারবার সাহায্য চেয়ে নিরাপত্তারক্ষীর থেকে সাহায্য মেলেনি। অভিযোগ, মনোজিতদের নির্দেশ মিলতেই গার্ড রুম ছেড়ে বেরিয়ে যান ওই নিরাপত্তা রক্ষী। নিজের করা এফআইআর’এ অসহযোগিতার অভিযোগ এনেছেন ধর্ষিতা ছাত্রী। কেন নিরাপত্তা রক্ষী নিজের কাজ করেননি, কেন সব জেনেও চুপ করে ছিলেন তিনি তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। নিরাপত্তা রক্ষীর বিরুদ্ধে আনা হয়েছে অপরাধ ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ। নির্যাতিতার এই অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি সেদিনের ঘটনার সময়ের সিসিটিভির ফুটেজও পুলিশ দেখছে। ২৫ জুন ঘটনার সময় ডিউটিতে ছিলেন ওই নিরাপত্তারক্ষী। ধৃত২ পড়ুয়াকে জেরা করে নিরাপত্তা রক্ষীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁকে দফায় দফায় জেরে করে প্রথমে আটক, তারপর গ্রেফতার করা হয়। ঘটনার সময় ইউনিয়ন রুমের বাইরে পাহারায় ছিল দুই আইন পড়ুয়া। বুধবার সন্ধে সাড়ে সাতটা থেকে দশটার কিছু বেশীপর্যন্ত, প্রায় চার ঘণ্টার কাছাকাছি সময় নিরাপত্তা রক্ষী নিজের ঘর থেকে বাইরে ছিলেন। তদন্তে নেমে ঘটনাস্থলে গিয়ে ফরেন্সিক টিম উদ্ধার করেছে বেশ কিছু জিনিস। প্রমাণ মিলেছে ধস্তাধস্তিরও। নির্যাতিতার মেডিক্যালে ধর্ষণেরই ইঙ্গিত মিলেছে।
এই ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিতভাবে পদক্ষেপ করেছে জাতীয় মহিলা কমিশন। এই ঘটনায় কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, তা জানিয়ে তিন দিনের মধ্যে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে পুলিশকে। গণধর্ষণের ঘটনায় নির্যাতিতার স্বাস্থ্য সংক্রান্ত রিপোর্ট তিনদিনের মধ্যে জমা দিতে হবে বলে জানিয়ে জাতীয় মহিলা কমিশন রাজ্য সরকারকে চিঠি দিয়েছে। মুখ্য সচিব মনোজ পন্থকে লেখা কমিশনের চেয়ারপার্সন বিজয়া রাহাতকারের চিঠিতে কমিশনের সদস্য ড. অর্চনা মজুমদার যখন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যাবেন তার সঙ্গে পুলিশকে সব ধরনের সহযোগিতা করার কথা বলা হয়েছে কমিশনের তরফে। পাশাপাশি নির্যাতিতার পরিবারের জন্য কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা বলেছে কমিশন।
