‘হতে চেয়েছিলাম নেত্রী, হলাম অভিনেত্রী’, কেন বাবার কাছে চড় খেয়েছিলেন সাবিত্রী?
এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক: বাংলা সিনেমার জগতে তিনি পরিচিত এক ডাকেই। দীর্ঘদিনের কর্মজীবন। এমনকি ৯০-এর দোরগোড়ায় এসেও দাপিয়ে কাজ করে চলেছেন সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়। ছোট পর্দায় কাজ করার ক্ষেত্রেও ‘না’ নেই তাঁর। কিন্তু জানেন কি, ‘অভিনেত্রী’ নয়, এক সময় নেত্রী হতে চেয়েছিলেন কিংবদন্তি অভিনেত্রী। যদিও তার জন্য তুলোধোনাও কম জোটেনি কপালে। কী এমন করেছিলেন ‘ছোট্ট’ সাবিত্রী?
অনেক ছোট বয়সে ওপার বাংলা থেকে এ পারে চলে এসেছিলেন সাবিত্রী। বাংলাদেশের ঢাকা শহরে থাকতেন অভিনেত্রী। সেখানেই এক নেতার বক্তৃতা শুনে মুগ্ধ হয়েছিলেন তিনি। পন করেছিলেন তিনিও হবেন নেতা। তারপরই মিলেছিল বাবার হাতের চড়। সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে এসে সেই গল্পই শোনালেন সাবিত্রী।
তিনি বলেন, “আমার এখনও মনে আছে, ছেলেবেলায় বাবার সঙ্গে গিয়েছিলাম একজন নেতার বক্তৃতা শুনতে। তখন ঢাকা শহরে থাকতাম। ওখানে একটা বড় মাঠে অনুষ্ঠানটা হচ্ছিল। কিন্তু সেখানে এত ভিড় ছিল যে দর্শকদের দেখা যাচ্ছিল ছোট্ট পুতুলের সমান। সেই ব্যক্তির বক্তৃতা শুনে আমি অবাক গিয়েছিলাম সেই দিন। তাঁর হাত নাড়ানোর ভঙ্গি, কথা বলার ধরন, সবই অভূতপূর্ব।” গোটা মাঠ যখন ছেয়ে গিয়েছে করতালির শব্দে। তখনই ছোট্ট সাবিত্রী ঠিক করে নিয়েছিলেন, নেত্রী হবেন তিনি। অভিনেত্রী বলতে থাকেন, “আমি বাবাকে বলেছিলাম আমিও নেতা হব। বাবা ভুল সংশোধন করে বুঝিয়েছিলেন, ওটা ‘নেতা’ নয়, ‘নেত্রী’ হবে। বাড়িতে ফিরেই হাত-পা ছুড়তে শুরু করে দিয়েছিলাম। কী বলব বুঝতে পারছিলাম না।”
তারপরেই ঘটল সেই মজার ঘটনা। তিনি বলেন, “একদিন বাবা বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতেই আমি জোরে জোরে বলতে শুরু করি, ‘আপনাদের আর কোনও চিন্তা নেই। আপনাদের চাল-ডালের দায়িত্ব আমি আজ থেকে নিলাম। আমি দেশের নেতা হচ্ছি।’ ঠিক যেন নেত্রীর মতোই! পুরো পাড়া শুনেছিল সেইদিন আমায়। কিছু দিন পরেই দেখি বাড়ির সামনে লোকজনের ভিড়। ভেবেছিলাম আমার বক্তৃতা শুনে সবার ভাল লেগেছে। তাই বাবাকে বলতে এসেছেন। আমি বুক ফুলিয়ে বাবার সামনে দাঁড়াতেই গালে এসে পড়ল এক চড়। বাবা রেগে গিয়ে বলতে থাকেন, ‘এ সব কী আরম্ভ করেছ? তুমি খেতে দেবে গোটা পাড়ার লোকজনকে? তুমি নেত্রী হয়েছ? তোমাকে খেতে দেয় কে? আমি তো! তারপর আমার দিদাকে ডেকে বাবা বলেন আমাকে শাসন করার জন্যে। খেয়াল রাখতে বলা হয়েছিল আমি যেন বাড়ি থেকে না বেরোতে পারি।”
কিন্তু অভিনেত্রীকে কি বেঁধে রাখা এতই সহজ ছিল! সাবিত্রী মজা করে বললেন, “আমি তো আমিই! আমি গাছের ডালে ডালে থেকেছি। রোদের মধ্যে ঘুরে বেড়িয়েছি। আমি কি আর শুনব কারও কথা!”