সলমনের উপর বিরক্ত ছিলেন আমির, অভিনেতার কঠিন সময়ে পাশে এসে দাঁড়ায় সেই ‘ভাইজান’ই!
এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক: সিনেমার দুনিয়ায় এই তিন খানের দাপট কিছু কম নয়—শাহরুখ, সলমন ও আমির। তাঁদের বন্ধুত্বে নজিরও নেহাত কম নয়। যদিও এক সময়ে সলমন খান এবং আমির খানের মধ্যেকার সম্পর্কের সমীকরণ খুব একটা সহজ ছিল না। অথচ কঠিন সময়ে ভাইজানকেই পাশে পেয়েছিলেন আমির। সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে নিজের জীবনের এক কঠিন অধ্যায় তুলে ধরলেন বলিউডের ‘মিস্টার পারফেকশনিস্ট’। তিনি জানান, বন্ধুর কঠিন সময়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন সলমন।
সেই সময়ে সদ্যই প্রথম স্ত্রী রীণা দত্তের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে। আমির জানান, কী ভাবে ২০০১ সালে গভীর অবসাদ এবং বিষণ্ণতা গ্রাস করেছিল তাঁকে এবং অতিরিক্ত মদ্যপানের মধ্যে ডুবে গিয়েছিলেন তিনি। “আমি তখন কারও সঙ্গে দেখা করতাম না। নিজেকে গুটিয়ে রেখেছিলাম,”—বললেন আমির। অভিনেতা জানান, তখন অভিনেত্রী জুহি চাওলাও তাঁকে দেখতে এসেছিলেন। আর ঠিক তেমনই কোনও আগাম বার্তা ছাড়াই একদিন হঠাৎই তাঁর দরজায় কড়া নাড়েন সলমন খান। আমিরের অন্ধকার সময়ে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তিনিই।
আমির বলেন, “আমরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা কথা বলেছিলাম। আমি আমার সমস্ত কষ্ট ভাগ করে নিয়েছিলাম, সলমনও নিজের অনেক কিছু ভাগ করে নিয়েছিল আমার সঙ্গে।”— সেই একান্ত মুহূর্তই নাকি বদলে দিয়েছিল তাঁর সলমন-ধারণা।
প্রসঙ্গত, ‘আন্দাজ আপনা আপনা’র শুটিংয়ের সময়ে তাঁদের সম্পর্ক খুব একটা সহজ ছিল না। “সলমন ঠিকমতো সময়ে আসতেন না, আমি ওর প্রতি বিরক্ত ছিলাম। ভেবেছিলাম, ওর সঙ্গে বন্ধুত্ব সম্ভব নয়।” কিন্তু কয়েক বছর পরে, জীবনের কঠিনতম সময়ে সেই ‘অসম্ভব’ সলমনই হয়ে ওঠেন সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য আশ্রয়।
আমির বলেন, “তখন বুঝেছিলাম, আমি ওর প্রতি অন্যায় করেছি। মানুষ মাত্রেই ভুল করে, তাই কারও উপর এত তাড়াতাড়ি রায় শুনিয়ে দেওয়া উচিত নয়।” সেখান থেকেই শুরু হয় এক অন্যরকম বন্ধুত্বের গল্প। একে অপরের সঙ্গে না মিললেও, একে অপরকে বুঝে ওঠার সেই যাত্রা আজ দুই দশকেরও বেশি পেরিয়ে এসে দাঁড়িয়েছে এক অটুট সম্পর্কে।
সম্প্রতি, আমিরের ছবি ‘সিতারে জমিন পর’-এর স্ক্রিনিংয়ে দেখা গিয়েছিল শাহরুখ খান এবং সলমন, দু’জনকেই। বলিউডে যেখানে প্রতিযোগিতার রশি টানাটানিতে সম্পর্ক অনেক সময় ছিন্ন হয়ে যায়, সেখানে এমন বন্ধুত্ব এক উজ্জ্বল ব্যতিক্রম।