‘ভিক্ষুক তো আমি হয়ে গিয়েছি, আমি তো ওঁর ভৃত্য নই…’ অনীক-ফিরদৌসুলের কথায় সরব আবীর
এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক: ‘যত কাণ্ড কলকাতাতেই’ ছবিকে ঘিরে এই মুহূর্তে সরগরম বিনোদন দুনিয়া। ‘উইন্ডোজ’ প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে চুক্তি এবং ছবির প্রচারে অনুপস্থিত থাকার কারণে ছবির অভিনেতা আবীর চট্টোপাধ্যায়ের উপর হতাশা উগরে দিয়েছেন পরিচালক অনীক দত্ত এবং প্রযোজক ফিরদৌসুল হাসান। এ বার আডিশনের কাছে মুখ খুললেন স্বয়ং অভিনেতা।
সম্প্রতি ছবিকে ঘিরে একটি সাংবাদিক সম্মেলন ডেকেছিলেন পরিচালক-প্রযোজক। সেখানেই আবীরকে ঘিরে একাধিক মন্তব্য করেন তাঁরা। ফিরদৌসুল জানান, তিনি অভিনেতাকে বহুবার অনুরোধের পরেও ছবির প্রচারে আসেননি এমনকি ছবি সম্পর্কিত কোনও কিছুও শেয়ারও করেননি। তাঁর কথায়, “আমি প্রযোজক থেকে ভিক্ষুকে পরিণত হয়েছি।” নিশানায় উঠে এসেছে শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় এবং ‘উইন্ডোজ’ও। এ বার আবীর পাল্টা বলেন, “২০২৫ সালের পুজোতে ‘রক্তবীজ ২’ মুক্তি পাবে সেটা জানা গিয়েছিল চলতি বছরের গোড়ার দিকেই। তা হলে নিশানায় শিবপ্রসাদ অথবা উইন্ডোজ কী ভাবে আসে? দ্বিতীয় কথা হল, আমি আমার পরিচালক এবং প্রযোজক, দু’জনকেই জানিয়েছিলাম যে ২০২৫ সালে পুজোতে ‘রক্তবীজ ২’ আসবে। আর সেই মর্মেই এই চুক্তি। যে ওই সময় যেন আর কোনও ছবি মুক্তি না পায়।” তিনি আরও বলেন, “শুনেছি এমনও প্রসঙ্গ উঠেছে যে গত বছরও পুজোর সময় নাকি ‘যত কাণ্ড কলকাতাতেই’ মুক্তি পাওয়ার কথা হয়। কিন্তু সেই একই সময়ে ‘বহুরূপ’ মুক্তি পেয়েছিল বলে আমিই নাকি অনুরোধ করেছিলাম ছবি মুক্তি পিছিয়ে নেওয়ার জন্য। তা হলে আমি ২০২৫ সালের জুন মাসে আমার ডাবিং কী ভাবে শেষ করলাম? প্রেস কনফারেন্সের ৪৮ ঘণ্টা আগে কী ভাবে কারেকশন ডাবিংয়ের কাজ শেষ হল আমার? আর শনিবার কারেকশন ডাবিংয়ের ঠিক পরের দিনেই কেন প্রেস কনফারেন্স ডাকা হল?”
ওই প্রেস কনফারেন্সে এমন দাবি ওঠে যে ‘উইন্ডোজ’-এর সঙ্গে চুক্তির সময়ে কেন নির্মাতাদের জানাননি অভিনেতা। আবীরের জবাব, “আমি তো ওঁর ভৃত্য নই যে কোন ছবি কোথায় শুটিং করছি, সেটা জানাব। এটা কি সম্ভব? আমি তখনই বলব যখন দেখতে পাব ছবিটা প্রায় সম্পূর্ণ এবং মুক্তির দিকে এগোচ্ছে। ২০২৫-এর জুন মাসে আমার কিছু ডাবিং অসম্পূর্ণ ছিল। সেটার আগে ও পরে আমি প্রযোজককে স্পষ্ট জানিয়েছিলাম যে এই বছর পুজোতে ‘রক্তবীজ ২’ আসছে। ওই সময় ছবি অন্য কোনও ছবি মুক্তি পায়, চুক্তির কারণে আমি তার প্রচারে উপস্থিত থাকতে পারব না।” ফিরদৌসুলের ‘ভিক্ষুক’ মন্তব্যের উত্তরে আবীর বলেন, “সেই দিক থেকে দেখতে গেলে তো অভিনেতাও ভিক্ষুকে পরিণত হয়েছেন। যখন সে বারবার অনুরোধ করছেন দয়া করে এই সময় ছবি মুক্তি করবেন না, সে অন্য জায়গায় চুক্তিবদ্ধ।”
পরিচালক অনীক দত্ত প্রসঙ্গেও তিনি বলেন, “ওঁর শরীর খারাপের কথা আমি গত শনিবার জানতে পেরেছি। তিনি আমাকে অভিমান করেই জিজ্ঞেস করেছিলেন যে তাঁর শরীরের অবস্থাও কি আমি জানতে চাইনি চুক্তির জন্য? আমি বলেছিলাম, ‘না দাদা, আমি জানতাম না।’ আমি দেখলাম তিনি একটা সিগারেট লুকোচ্ছেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘এটা কী?’ তিনি মজা করে বললেন, ‘ও কিছু হয় না’। আমিও উত্তরে বললাম, ‘আচ্ছা এটা তে কিছু হয় না তাই না?’ এটাকে কি তাঁর স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন হওয়া বলে না? এর চেয়ে বেশি মানবিকতা দেখানো কাকে বলে জানি না।” পাশাপাশি নির্মাতাদের ‘প্রচারের জন্য চুক্তি’র মন্তব্যেও সহমত পোষণ করে আবীর বলেন, “অবশ্যই। প্রচারের জন্যেও চুক্তি করা দরকার। আমি একমত। শুটিং কতদিন হবে, ডাবিং কতদিন হবে, প্রচার-সহ সবকিছুই ওই চুক্তিতে থাকা উচিত।”