লন্ডনে ২ শিশুকন্যা অপেক্ষায় বাবার…, স্ত্রীয়ের অস্থি বিসর্জন দিয়ে আর ফেরা হল না

ভাগ্যের কী পরিহাস! ভারতে এসেছিলেন প্রয়াত স্ত্রীর চিতাভস্ম ভাসাতে। এরপর ছোট সন্তানদের কাছে ফিরে যেতেই অভিশপ্ত বিমানে চেপে বসেছিলেন। লন্ডনে ছেলেদের কাছে আর ফেরা হল না অর্জুনভাই মানুভাই পাটোলিয়ার। বিমান দুর্ঘটনার নিষ্ঠুর পরিণতি তাঁকেও কেড়ে নিল। অর্জুনভাই মানুভাই পাটোলিয়া আসলে গুজরাটের ভাদিয়ার বাসিন্দা। বেশ কিছু বছর ধরেই স্ত্রী ভারতীবেন ও ২ সন্তানকে নিয়ে লন্ডনে বাস করছিলেন। ৪ বছর ও ৮ বছরের দুই মেয়ে তাদের। মাত্র এক সপ্তাহ আগে লন্ডনে স্ত্রী ভারতীবেনকে হারান অর্জুন। প্রিয়তমা স্ত্রীর শেষ ইচ্ছে রাখতে গুজরাটের গ্রামে ফিরেছিলেন অর্জুন। ভারতীবেনের শেষ ইচ্ছে ছিল, তাঁর শেষকৃত্য যেন হয় তাঁর গ্রামে, দেশের বাড়িতে। প্রিয়তমার শেষ ইচ্ছেকে মর্যাদা দিতেই মেয়েদের আত্মীয়ের কাছে রেখে অস্থি নিয়ে গুজরাটের আমরেলি জেলার ভাদিয়ায় নিজেদের পৈতৃক গ্রামে এসেছিলেন অর্জুন। কথা ছিল নর্মদায় স্ত্রী ভারতীবেনের অস্থি ভাসিয়ে লন্ডনে ফিরে যাবেন। কিন্তু ফেরাটা আর হল না। আসাটাই যেন কাল হল। এখনও বাবার ফিরে আসার অপেক্ষা করছে লন্ডনে দুই ছোট মেয়ে। তারা হয়তো জানেও না, কী ঘটল, বাবা কোথায় গেল। এখন মা-বাবা দুজনকেই হারিয়ে ‘অনাথ’ দুই সন্তান।স্বাভাবিকভাবেই, বিমান দুর্ঘটনায় অর্জুনের মর্মান্তিক মৃত্যুর পর এখন লন্ডনে থাকা দুই মেয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে।অনেক আগেই মারা গেছিলেন অর্জুনভাইয়ের বাবা। তাঁর বয়স্ক মা বাস করেন সুরাতে। ঘটনার খবর পেয়ে তিনি ভেঙে পড়েছেন। কিন্তু, তাঁর সেই শারীরিক সক্ষমতাও নেই যে লন্ডনে থাকা তাঁর দুই নাতনির জন্য কিছু ব্যবস্থা করবেন। ভাগ্যের চাকা কোন দিকে নিয়ে যাবে, কেউ বলতেও পারছেন না। ৩৬ বছর বয়সী অর্জুনভাই মানুভাই পাটোলিয়ার শেষকৃত্যও বা কী হবে তাও অজানা সকলের। শুধু কান্না আর কান্না। অভিশপ্ত বিমানের ২৪২ জন যাত্রীর মধ্যে যে ২৪১ জনই শেষ!