‘তোমার পাশে তোমার নিঃশ্বাসে বাঁচি’, প্রিয় টিটোদার জন্মদিনে আবেগপ্রবণ দোলন রায়
এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক: ভালবাসাই সব। এই কথাটি যেন বার বার প্রমাণ করে দিচ্ছেন টলিউডের তারকা জুটি দীপঙ্কর দে ও দোলন রায়। বাংলা চলচ্চিত্র জগতের শ্রদ্ধেয় ‘টিটোদা’, দীপঙ্কর দে, শনিবার, ৫ই জুলাই ২০২৫-এ ৮১ বছরে পা দিলেন। ১৯৪৪ সালের এই দিনেই জামশেদপুরে জন্মগ্রহণ করেন এই বর্ষীয়ান অভিনেতা। দীর্ঘ পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের অবদান রেখে চলেছেন।
এই শুভদিনে, মনের মানুষকে শুভেচ্ছা জানাতে ভোলেননি তার স্ত্রী দোলন রায়। ফেসবুকে নিজেদের একটি সুন্দর ছবি এবং জন্মদিনের কেকের ছবি আপলোড করে তিনি লেখেন, ‘শুভ জন্মদিন টিটো। আমি আর যে কদিন বাঁচব, তোমার প্রতিটা জন্মদিন আমি যেন তোমার পাশে তোমার নিঃশ্বাসে বাঁচি, ঈশ্বরের কাছে এটুকুই চাওয়া, আর কিছুই না। লাভ ইউ।’ তার এই পোস্টে আপ্লুত টলিপাড়া ও অনুরাগীরা।

তবে তাঁদের প্রেমের গল্পটা সহজ ছিল না। আলাপ হয়েছিল নব্বইয়ের দশকে, নাট্যকার রবি ঘোষের টিমে কাজ করতে গিয়ে। দীপঙ্কর তখন প্রতিষ্ঠিত অভিনেতা, দোলন একেবারে নবাগত। বয়সের ফারাক প্রায় ২৫ বছরের। তার উপরে দীপঙ্করের ছিল পরিবার, সন্তান। তবু ১৯৯৭ সালে কাজের সূত্রে বাইরে গিয়ে, এক সফরেই জন্ম নেয় ভালবাসা।
দীর্ঘ ২২ বছর তাঁরা ছিলেন লিভ-ইনে। সমাজ, পরিবার, মিডিয়ার অনেক প্রশ্ন, কটাক্ষ— সবই সহ্য করেছেন কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে। দোলনের মা-ও প্রথমে মানতে চাননি সম্পর্কটা। কিন্তু সময় আর মেয়ে-জামাইয়ের অটুট সম্পর্ক সবার মন জয় করে নেয়।
অবশেষে ২০২০ সালে এক শীতের সন্ধ্যায় হোটেলে খুব ছোট করে, আইনি মতে বিয়ে করেন তাঁরা।খুব সীমিত আয়োজনেই সব আচার-অনুষ্ঠান সম্পন্ন করেন। তবে বিয়ের পরদিনই আচমকা শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন দীপঙ্কর। চার দিন কাটে আইসিইউতে। পাশে ছিলেন সদ্য বিবাহিত স্ত্রী, দোলন।এই ভাবে প্রথম দিন থেকেই পাশে থাকার অঙ্গীকার দোলনের।
দীপঙ্কর দে শুধু একজন অভিনেতাই নন, তিনি বাংলা চলচ্চিত্রের এক জীবন্ত ইতিহাস। সত্যজিৎ রায়ের মতো কিংবদন্তি পরিচালকের সঙ্গে তিনি একাধিক ছবিতে কাজ করেছেন। তার অভিনীত ‘সীমাবদ্ধ’, ‘জনঅরণ্য’, ‘গণশত্রু’, ‘শাখা প্রশাখা’ এবং ‘আগন্তুক’-এর মতো ছবিগুলি বাংলা সিনেমার মাইলস্টোন। এছাড়াও, মৃণাল সেন, তপন সিংহ এবং অপর্ণা সেনের মতো বিখ্যাত পরিচালকদের সঙ্গেও তিনি কাজ করেছেন। তার অভিনয় দক্ষতার স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৮৬ সালে ‘পরমা’ ছবির জন্য তিনি জাতীয় পুরস্কারে সম্মানিত হন।
কাজের প্রতি তার ভালোবাসা আজও অমলিন। এই বয়সেও তিনি সমানভাবে সক্রিয় এবং নতুন প্রজন্মের অভিনেতাদের কাছে এক অনুপ্রেরণার উৎস।