‘মাঝরাতে মেসেজে প্রশ্ন আমি গর্ভবতী কি না’, জীতুকে নিয়ে বিস্ফোরক দিতিপ্রিয়া

0

এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক:

গত কয়েক দিন ধরেই বেশ চর্চায় ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’ ধারাবাহিক। গল্পের নায়ক-নায়িকা জীতু কমল এবং দিতিপ্রিয়া রায়ের একটি ছবিকে ঘিরে কম শোরগোল ছড়ায়নি সমাজমাধ্যমে। এমনও খবর রটেছিল যে দুই সহ-তারকার মধ্যে নাকি দানা বেঁধেছে অসন্তোষ। এই নিয়ে সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলেছেন জীতুও। এ বার সমাজমাধ্যমে অভিনেতাকে ঘিরে রীতিমতো বোমা ফাটালেন দিতিপ্রিয়া।

জীতুর নাম না করেই তিনি লেখেন, “গত কয়েকদিন ধরে চলতে থাকা আমাকে ঘিরে নানা রকমের গুঞ্জন নিয়ে আমি চুপ ছিলাম। কারণ আমি বিশ্বাস করি উপেক্ষা করে যাওয়াটাই শ্রেয়। প্রথমত, একটি ছবি পোস্ট করা নিয়ে জলঘোলা শুরু। প্রোডাকশন টিম সবসময়েই আমাদের কিছু ছবি দিয়ে থাকে দু’জনকেই সমাজমাধ্যমে পোস্ট করার জন্য। আমার কো-অ্যাক্টর সেই সব ছবিই পোস্ট করেন। সেই ছবিগুলোর মধ্যে একটি আমার ব্যক্তিগতভাবে একেবারেই ভাল লাগে না। ছবিটা তিনি ডিলিট করেন। তার পর বিভিন্ন ইন্টারভিউতে বারবার বলেছেন, ‘আমার পোস্ট করা ছবিতে নাকি অনেক খারাপ ও নোংরা কমেন্ট এসেছে, তাই ও (আমি) খুব কষ্ট পেয়েছে’। কিন্তু আমি তো তাঁর সঙ্গে কথাই বলিনি! আমি শুধুমাত্র প্রোডাকশনকে জানিয়েছিলাম, কারণ ছবিটা তাঁদেরই তোলা ছিল। আর ছবিটা আমার দৃষ্টিতে অপ্রীতিকর মনে হয়। আমি কোনওরকম নোংরা বা অশ্লীল কমেন্টের কথা কখনওই বলিনি। কেউ-ই এই আমার ছবিটিকে অপ্রীতিকর লাগা নিয়ে সেই সময় কোনও আপত্তি জানায়নি। বরং পরবর্তীকালে বারবার শুনতে হয়েছে, আমি নাকি তাই সহজভাবে হ্যান্ডেল করতে পারি না। একটা ছবি তো, তা নিয়ে এত কিছু!
তিনি আরও বলেন, ‘আমি দিতিপ্রিয়াকে খুব শ্রদ্ধ্য করি এবং স্নেহ করি। ওর ডেডিকেশন অন্যরকমের’। আমার কো-অ্যাক্টর আমাকে ভীষণ সম্মান করেন ও স্নেহ করেন—এটাই আমি বিশ্বাস করতে চাই।”

তারপরেই বিস্ফোরক মন্তব্য অভিনেত্রীর। তিনি লেখেন, “প্রথম এক মাসের পর থেকেই আমার সহ-অভিনেতা আমার সঙ্গে কথা বলেন না, শুধু হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ রাখেন। আমি তাঁকে কারণ জিজ্ঞেস করলে বলেন, ‘তোমার মাকে ভয় পাই, কিন্তু তোমাকে ভীষণ সম্মান করি।’
এতটাই স্নেহ করেন ও সম্মান করেন যে একদিন আমাকে জিজ্ঞেস করেন, ‘ওই ইভেন্টে যাচ্ছো?’ আমি বলি, ‘না, আমার ডাক্তারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট আছে।’ তিনি জানতে চান, ‘কেন, তুমি কি প্রেগন্যান্ট?’

আরেকটি ঘটনায়, একটি এআই-তে বানানো ছবি যেখানে দেখা যায় আমরা চুম্বন করছি—ওই ছবি আমাকে মাঝরাতে পাঠিয়ে লেখেন, ‘বেশ হয়েছে, এটা বয়ফ্রেন্ডকে পাঠাও’। সঙ্গে লেখেন, ‘এই রাতেই ব্রেকআপ হয়ে যাবে’। এরপর আরেক দিন আমাকে মেসেজ করে বলেন, ‘আমার তোমার সঙ্গে কথা আছে, দেখ যেন তোমার মা না জানতে পারেন। কাকিমাকে আমি ভয় পাই।’

অভিনেত্রী জানান, প্রথমের দিকে এই কথাগুলি তিনি মজার ছলে নিলেও পরে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়। সর্বসমক্ষেই তিনি লেখেন, ‘সেটেও কিছু বিষয় নিয়ে আমার অস্বস্তি শুরু হয়েছিল। আমাদের শুটিং ফ্লোরে প্রায় সবাই জানে এই ঘটনা। আমি এতদিন চুপ ছিলাম কারণ এসব নিয়ে শোরগোল করে কাজ নষ্ট করতে আমার পরিবার আমাকে শেখায়নি। আমাদের দারুণ চলতে থাকা শো-এ ব্যাঘাত হোক আমি চাইনি।
আর চুপ থাকতে পারলাম না। কিছু মানুষ মুখ বুজে সহ্য করে গেলে, কিছু মানুষ সীমা ছাড়িয়ে যায়। আমি কখনও অন্যায়ের সঙ্গে আপস করিনি, আর করবোও না। আমার সিরিয়ালের সহ-অভিনেতার আরও বেশ কয়েকটি কাজেই সহ-অভিনেতাদের সঙ্গে নানা ভাবে সমস্যা হয়েছে বলে শোনা যায়। তবে আমার কাজ উনি শুরু থেকেই খুব প্রশংসা করেছেন—আমিও চেষ্টা করেছি সম্মান ফিরিয়ে দেওয়ার।
আমি যাঁকে সম্মান করি, তাঁকে সব সময় সব জায়গায় একই রকমভাবে সম্মান করে এসেছি, তা সোশ্যাল মিডিয়ায় হোক অথবা সামনাসামনি। একেক জায়গায় একেক রূপ আমার নেই—এই দ্বিচারিতা আমার একেবারেই অপছন্দ। রইল বাকি আমার ‘স্পন্টেনিয়াস’ হওয়া। ‘ডাকঘর’ নামের একটি সিরিজের প্রমো চলাকালীন আমি ও আমার সেই সিরিজের সহ-অভিনেতা ‘ইটস অফিশিয়াল’ লিখে সমাজমাধ্যমে একটি রোমান্টিক ছবি পোস্ট করি—এর একটাই উদ্দেশ্য গুঞ্জন ছড়ানো! কারণ এটা ছিল একটি ‘স্পন্টেনিয়াস’ প্রোমোশনাল স্ট্র্যাটেজি।
মানুষের সুবুদ্ধি হোক, এই কামনাই করি।”

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *