বাবা সবজি বিক্রেতা, শিক্ষকদের চাঁদায় জুতো! বাহরিনে ব্রোঞ্জ জয় মালদহের পলাশের
এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক: কতটা পথ পেরোলে তবে…
পরিবারে নুন আনতে পান্তা ফুরোয় অবস্থা। আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার আগে ছেলেকে একজোড়া জুতো কিনে দেওয়ার ক্ষমতা ছিল না বাবা-মায়ের। সেই ছেলেই হাঁটতে হাঁটতে মুখ উজ্জ্বল করল ভারতের-বাংলার-মালদহের। স্কুলের শিক্ষকরা চাঁদা তুলে জুতোর ব্যবস্থা করে দেন। অদম্য মনের জোরে যাবতীয় অভাব-অনটনকে পিছনে ফেলে দেশের হয়ে বাহরিনে এশিয়ান যুব গেমসে অংশ নেয় মালদহ ইংরেজবাজারের ছেলে পলাশ মণ্ডল। সেখানেই গিয়েই মিলল সাফল্য। বাহরিনে যুব এশিয়ান গেমসে হাঁটা প্রতিযোগিতায় ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছে পলাশ। আফশোস একটাই, একজোড়া ভাল মানের জুতো হলে হয়তো আরও ভাল ফল হলেও হতে পারত। ছেলেদের পাঁচ হাজার মিটার হাঁটা প্রতিযোগিতায় ভারতের হয়ে প্রতিনিধি ছিল পলাশ মণ্ডল। সময় নিয়েছে ২৪ মিনিট ৪৮.৯২ সেকেন্ড। প্রথম দুই স্থানেই চিন। ইউজি লু ২২ মিনিট ২৮.৬৪ সেকেন্ডে হাঁটা শেষ করে রুপো জেতেন। চিনেরই হাওজে ঝাঙ ২১ মিনিট ৪৩.৮২ সেকেন্ডে দূরত্ব শেষ করে সোনা জেতেন।

পলাশ মালদহের বিভূতিভূষণ হাইস্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র। বাবা গয়া মণ্ডল শহরের ঝলঝলিয়া কাজি আজহারুদ্দিন মার্কেটের সবজি বিক্রেতা। মা ডলি মণ্ডল গৃহবধূ। পলাশ পরিবারের ছোট সন্তান। তার দুই দিদি রয়েছে। ইংরেজবাজারের বাহান্নবিঘা গ্রামে বাড়ি পলাশের। গত ২ বছর ধরেই হাঁটায় নিজেকে তৈরি করেছে সে। তাঁর এমন সাফল্যে খুশির হাওয়া দেখা দিয়েছে স্কুল সহ জেলা জুড়ে। তার সাফল্যে খুশি কোচ অমিতাভ রায়। দু’বছর ধরে তার কাছে অনুশীলন করছে সে। তার আগে সুদাম ঘোষ ও মানস রায় বর্মনের কাছে প্রশিক্ষণ নিয়ে হাঁটার লড়াই শুরু হয়। কোচ অমিতাভ রায় জানান, ‘মালদার মতো পিছিয়ে পড়া এলাকার সন্তান গোটা দেশের নাম উজ্জ্বল করেছে। কোচ হিসেবে খুব ভাল লাগছে। মালদা জেলায় এই প্রথম এশিয়ান গেমসে কোনও পদক এলে, এটাও খুব আনন্দের। পলাশ এভাবেই দেশের নাম উজ্জ্বল করে যাক।’
