জল্পনা থামল, সাহিত্যে নোবেল জিতলেন হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাজলো ক্রাসনাহোরকাই
ট্রেন্ডিং: অবশেষে প্রকাশ্যে এল নাম। সাহিত্যে নোবেল জিতলেন হাঙ্গেরির লেখক লাজলো ক্রাসনাহোরকাই। বৃহস্পতিবারই সুইডিশ অ্যাকাডেমি তাঁর নাম ঘোষণা করে। সুইডিশ অ্যাকাডেমি তাঁর সম্পর্কে বলেছে, ‘আকর্ষণীয় এবং দুরদর্শী রচনার জন্য তাঁকে এ বছর সাহিতে নোবেল দেওয়া হয়েছে। সংস্থার পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, তাঁর লেখনি বিশ্বব্যাপী ভয়াবহতার মধ্যে শিল্পের শক্তিকে পুনরায় উজ্জীবিত করেছে। বিশেষ করে তাঁর ‘হার্শট ০৭৭৬৯’ উপন্যাসের কথা আলাদা ভাবে উল্লেখ করেছে নোবেল কমিটি। সাহিত্যের নোবেলের জন্য মনোনীতদের নাম দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে গোপন রাখছে সুইডিশ অ্যাকাডেমি। এই কারণে কে এই পুরস্কার জিততে পারেন তা আগে থেকে অনুমান করা কঠিন ছিল।

২০২৪ সালের সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ার খ্যাতিমান মহিলা লেখক হান ক্যাং। এ বার তালিকায় থাকা কান শুয়ে, লাজলো ক্রাসনাহোরকাই, হারুকি মুরাকামির নাম নিয়ে আলোচনা চলছিল। শেষপর্যন্ত ক্রাসনাহোরকাই জিতলেন নোবেল। ১৯০১ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত ১১৭ বার সাহিত্যে নোবেল দেওয়া হয়েছে। আর সবমিলিয়ে ১২১ সাহিত্যিক নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। যারমধ্যে ১৮ জন হলেন মহিলা। এছাড়া চারবার যৌথভাবে একাধিক ব্যক্তিকে সাহিত্যে নোবেল দেওয়া হয়েছে।

লেখক লাজলো ক্রাসনাহোরকাই ১৯৫৪ সালে রোমানিয়ার সীমান্তের কাছে দক্ষিণ-পূর্ব হাঙ্গেরির ছোট শহর জিউলাতে জন্মগ্রহণ করেন। অনুরূপ একটি প্রত্যন্ত গ্রামীণ অঞ্চলই হলো ক্রাসনাহোরকাইয়ের প্রথম উপন্যাস সাতানটাঙ্গোর (১৯৮৫ সালে প্রথম প্রকাশিত) প্রেক্ষাপট। এই উপন্যাসটি হাঙ্গেরির সাহিত্য জগতে আলোড়ন সৃষ্টি করে। আধুনিক হাঙ্গেরীয় সাহিত্যের একজন অন্যতম প্রধান ব্যক্তিত্ব লাজলো । অভিনব শৈলীর পাশাপাশি দার্শনিক গভীরতার জন্য তাঁর সাহিত্যে তাঁকে সমাদর এনে দিয়েছে। প্রায়শই ফ্রানজ্ কাফকা এবং স্যামুয়েল বেকেটের ঐতিহ্যের উত্তরাধিকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের মাঝেও শিল্পের লেলিহান ঔজ্জ্বল্য ফুটে ওঠে তাঁর লেখায়। লাসলোর অন্যতম বিখ্যাত উপন্যাস ‘ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার’। দীর্ঘ বাক্যের সমন্বয়ে রচিত এই উপন্যাস ফের লাসলোর শৈলী নিয়ে নতুন করে ভাবায় পাঠকদের।

এ বার চিকিৎসাবিজ্ঞানে পেরিফেরাল ইমিউন টলারেন্স নিয়ে গবেষণার জন্য যৌথভাবে নোবেল জিতেছেন যুক্তরাষ্ট্রের মেরি ই. ফ্রাঙ্কো ও ফ্রেড রামসডেল এবং জাপানের শিমন সাকাগুচি। অন্যদিকে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন মার্কিন বিজ্ঞানী জন ক্লার্ক, মিশেল এইচ ডেভোরেট ও জন এম মার্টিনিস। বৈদ্যুতিক বর্তনীর মধ্যে স্থূল কোয়ান্টাম যান্ত্রিক টানেলিং এবং শক্তির কোয়ান্টাইজেশন আবিষ্কারের জন্য নোবেল দেওয়া হয়েছে তাদের। রসায়নবিজ্ঞানে বিশেষ অবদানের জন্য ২০২৫ সালের নোবেল পেয়েছেন কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয়ের সুসুমু কিতাগাওয়া এবং মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের রিচার্ড রবসন ও ওমর এম. ইয়াঘি। ‘মেটাল-অর্গানিক ফ্রেমওয়ার্ক’ উন্নয়নের জন্য তাদের নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।