নদিয়ার ছেলের সাইকেলেই স্বপ্নপূরণ, বিভূতিভূষণের ‘চাঁদের পাহাড়ে বাস্তবের ‘শঙ্কর’ জ্যোতিষ্ক

0




উপন্যাসের চরিত্র বাস্তবে! সত্যি সত্যি তাহলে চাঁদের পাহাড় জয় করা যায়!সেই কোন কালে সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় লিখে গিয়েছিলেন চাঁদের পাহাড়। সেখানে পৌঁছলেই নাকি পাওয়া যায় হিরের খনি।দুর্গম আফ্রিকার ঘন জঙ্গল আর পাহাড়ের দেশে রোমাঞ্চকর এক কাল্পনিক অভিযান তৈরি করেছিলেন অজপাড়াগাঁয়ের ছেলে শঙ্করকে নিয়ে। সেই উপন্যাস পড়ার পরই যেন মন টেনেছিল নদিয়ার ছাপোষা ছেলে জ্যোতিষ্কর। এরপর ১১ বছর ধরে মনে মনে সুপ্ত বাসনা এতদিনে পূরণ করেছেন। সাভোর সিংহ খাওয়া কুখ্যাত মানুষ, ব্ল্যাক মাম্বার সাথে ঘনিষ্ঠ সাক্ষাৎ এবং চাঁদের পাহাড়ের হৃদয়ে লুকিয়ে থাকা একটি ছায়াময় প্রকৃতি, সব নিয়ে এক রোলার কোস্টার যাত্রা নদিয়ার করিমপুরের জ্যোতিষ্ক বিশ্বাসের।
বাংলার সিনেপ্রেমীরা যখন অপেক্ষায় দেব অভিনীত চাঁদের পাহাড় সিনেমার মুক্তির, তখন সমাজ মাধ্যমে ভাইরাল জ্যোতিষ্কের সত্যি সত্যি যাত্রা কাহিনি।জ্যোতিষ্কের বাবা অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক নীতীশ বিশ্বাস ও মা জয়ন্তী বিশ্বাস। সাধারণ সংসারজীবনে মন বসেনি, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের চাঁদের পাহাড় বইকে সঙ্গী করে বেড়িয়ে পড়েছেন অজানার উদ্দেশ্যে। সঙ্গী বলতে শুধুই সাইকেল।
রেলওয়ে হেড অফিস, মোম্বাসা, পূর্ব আফ্রিকা, যেখান থেকে শংকর চাঁদের পাহাড় উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছিল, সেভাবেই জ্যোতিষ্ক মোম্বাসা থেকে চাঁদের পাহাড় ছোঁয়ার যাত্রা শুরু করেছিলেন। জ্যোতিষ্ক কে বলতে শোনা যায়, ‘বিভূতিবাবু, আমি রয়েছি আপনার স্বপ্ন পূরণের জন্য।’ নিজেই সমাজ মাধ্যমে লিখেছেন, মনের ভেতরে আমার শঙ্করের বাস। একদিন আমি সত্যিকারের শঙ্কর হব। সেই ইচ্ছেতেই জুন মাসে নিজের জমানো টাকায় বেরিয়ে পড়েছিলেন জ্যোতিষ্ক। নদিয়া থেকে কলকাতা বিমানবন্দর। মুম্বই হয়ে সোজা নাইরোবি। নাইরোবি থেকে মোম্বাসা। সেখান থেকেই চাঁদের পাহাড়ের দুর্গম প্রান্তরে সাইকেল নিয়ে ছুটে চলা। ঠিক যে স্বপ্ন দেখতেন, ছোট ছোট পায়ে চলতে চলতে একদিন ঠিক ‘চাঁদের পাহড়’ পৌঁছে যাবেন। অবশেষে সেই স্বপ্ন পূরণ হল তাঁর।জ্যোতিষ্ক জানান,বাঙালি হিসাবে চাঁদের পাহাড় ছুঁতে পারলাম, বিভূতিবাবুর ইচ্ছে পূরণ করতে পারলাম হয়তো … জ্যোতিষ্ক পৌঁছেছেন সাহিত্যিকের কল্পিত সেই ‘চাঁদের পাহাড়’, রোয়েনজোরি পর্বতমালার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মার্গারিটা পিকে। এর উচ্চতা ৫,১০৯ মিটার বা ১৬,৭৬৩ ফুট। এটা আফ্রিকার তৃতীয় সর্বোচ্চ শৃঙ্গ।

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *