কসবা ধর্ষণকাণ্ডে পুলিশি হেফাজতের মেয়াদ বাড়ল ৪ অভিযুক্তেরই

কসবা গণধর্ষণ কাণ্ডে যত তদন্ত এগোচ্ছে, তত চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে। মঙ্গলবার তিন অভিযুক্তের পুলিশ হেফাজতের সময়সীমা বাড়াল আদালত। মনোজিৎ ও তাঁর দুই সহযোগী প্রমিত ও জইবের সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের আদেশ দেন বিচারপতি। আগামী ৮ জুলাই পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে থাকবে অভিযুক্তরা। সঙ্গে ধৃত নিরাপত্তারক্ষীর আরও তিন দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁকে আগামী ৪ জুলাই আদালতে পেশ করা হবে। দুই অভিযুক্ত মনোজিৎ ও প্রমিতের আইনজীবী রাজু গঙ্গোপাধ্যায় জামিনের আবেদন জানাননি। প্রমিত মুখার্জির আইনজীবী অঙ্কিতা পাল জানান, ওকালত নামা ফাইল করেছি। এই মামলার আরেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, নিরাপত্তারক্ষী পিনাকীকেও আদালতে পেশ করা হয়। পিনাকীর জন্য আদালত তিন দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে, অর্থাৎ ৪ জুলাই পর্যন্ত তাকে হেফাজতে রেখে জেরা করতে পারবে পুলিশ। মঙ্গলবার এই মামলার চার অভিযুক্তের পুলিশি হেফাজতের সময়সীমা শেষ হওয়ার কথা ছিল। আদালতে তোলা হয় অভিযুক্তদের। সেই শুনানিতেই বিচারপতি নতুন নির্দেশ দেন। এখনও পর্যন্ত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, ষড়যন্ত্র এবং শারীরিক নির্যাতনের একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। তদন্তে নেমেছে বিশেষ টিম। এই শুনানিতে সবচেয়ে চাঞ্চল্যের মুহূর্ত আসে যখন সরকারি আইনজীবী ইনহেলারের প্রসঙ্গ তোলেন। তিনি আদালতে বলেন, ‘যখন নির্যাতিতার উপর প্রথম দফার অত্যাচার চলছিল, তখন অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। তখন তিন অভিযুক্তের মধ্যে একজন পাশের দোকান থেকে ইনহেলার নিয়ে এসে তাঁকে দেন। উদ্দেশ্য ছিল, তাঁকে সুস্থ করে আবারও অত্যাচার চালানো। এটা অত্যাচারের জন্য মরিয়া মানসিকতার পরিচয়।’ তদন্তকারীদের নজরে এখন কসবার তিন অভিযুক্তের ফোন কল ডিটেলস। সার্ভিস প্রোভাইডারের কাছে ইতিমধ্যেই এই তথ্য চেয়ে পাঠানো হয়েছে। গ্রেফতারের সময় বাজেয়াপ্ত হওয়া ফোনগুলোর কল হিস্ট্রি খতিয়ে দেখেই বোঝা যাবে, কে কখন, কাকে ফোন করেছিল এবং তার সঙ্গে ঘটনার যোগসূত্র রয়েছে কি না।
অন্যদিকে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কলেজে সুস্থ পরিবেশ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। কলেজে পঠন পাঠন বন্ধ থাকলেও অফিস খোলা থাকবে। মঙ্গলবার দক্ষিণ কলকাতা আইন কলেজে পরিচালন সমিতির বৈঠকের পর এ কথা জানিয়েছেন সমিতির সভাপতি ও তৃণমূল বিধায়ক অশোক দেব। বৈঠকের পর পরিচালন সমিতির সভাপতি অশোক দেব জানিয়েছেন, ঘটনায় অভিযুক্ত অস্থায়ী কর্মী এবং দুই ছাত্রকে কলেজ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। কলেজে আপাতত ক্লাস বন্ধ রাখলেও যেহেতু ভর্তি প্রক্রিয়া চলছে, তাই অফিস খোলা থাকবে। নির্যাতিতার পরিবার চাইলে চিকিৎসা সংক্রান্ত সহযোগিতা করা হবে।