জেন-জি থেকে গণ আন্দোলন, টানা অগ্নিগর্ভ নেপাল, উদ্বিগ্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী

0

ট্রেন্ডিং: উত্তাল নেপাল। একের পর এক মৃত্যু। ছড়াচ্ছে হিংসা। খুন। মার। লুটপাট।জীবন্ত মানুষকে জ্বালিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা দেখে শিউরে উঠেছে গোটা বিশ্ব। লাগাতার নেপাল জুড়ে বিক্ষোভ। দিনভর কারফিউ জারি।বন্ধ রাখা হয়েছে সমস্ত ধরণের সামাজিক মাধ্যম। তারপরেও নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ানোর ছবিও প্রকাশ্যে এসেছে। ছাত্র-যুব অভ্যুত্থানের পর বাধ্য হয়ে পদত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। একের পর এক নেতা-মন্ত্রীর বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে জনতা। নেপালের অশান্তিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৫, আহত ৬০০-র বেশি। বুধবার এমনটাই জানিয়েছে কাঠমান্ডুর স্বাস্থ্য মন্ত্রক। গ্রেফতারের সংখ্যাও মিনিটে মিনিটে বাড়ছে। অশান্ত নেপালে আটকে পড়া ভারতীয়দের দেশে ফেরাতে তৎপর ভারত সরকার। সূত্র জানাচ্ছে, কাঠমান্ডু বিমানবন্দরেই আটকে আছেন ৪০০-র বেশি ভারতীয়।

ইন্ডিগো ও নেপাল এয়ারলাইন্স ইতিমধ্যেই দিল্লি- কাঠমান্ডু বিমান পরিষেবা স্থগিত রেখেছে। এরমধ্যেই ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দখল নিয়েছে নেপালের সেনাবাহিনী। নেপালের রাষ্ট্রপতি রামচন্দ্র পৌডেলের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের আলোচনা হতে পারে। এই আলোচনা বৈঠকে মধ্যস্থতা করবে নেপালের সেনাবাহিনী। পরিস্থিতি যে ‘উদ্বেগজনক’ সে কথা মানছে সব দেশই।পড়শি দেশের পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে ভারত সরকার। উত্তরবঙ্গ থেকে নেপালের দূরত্ব খুব বেশি নয়। স্বাভাবিকভাবেই উদ্বিগ্ন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার রাতে তাই জলপাইগুড়িতে থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী। দার্জিলিং জেলার বিস্তীর্ণ অংশে ভারত-নেপাল সীমান্ত রয়েছে। তাই এসএসবি এবং পুলিশকে বাড়তি নজর দিতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘অনেক পর্যটকরা গিয়েছেন নেপালে। আপনারা অপেক্ষা করুন। আস্তে-আস্তে ফিরিয়ে আনব।’

গত ৪ সেপ্টেম্বর নেপালে নিষিদ্ধ হয় ফেসবুক, ইউটিউব, এক্স-সহ প্রায় সব ধরনের সোশাল মিডিয়া। সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা নেপাল প্রশাসনের সঙ্গে সরকারি ভাবে নথিবদ্ধ হয়নি। সাতদিনের ডেডলাইন দিলেও তা মেনে চলেনি ২৬টি সোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের একটিও। তাই এই কড়া সিদ্ধান্ত নেয় কাঠমান্ডু সরকার। এমন সিদ্ধান্তেই বেজায় ক্ষেপেছে নেপালের ‘জেন জি’। সোমবার হাজার হাজার প্রতিবাদী কাঠমান্ডুর রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ দেখান। রাতের মধ্যে তা হিংসাত্মক চেহারা নেয়। জেন জির আন্দোলনে জনতার দাবি মেনে পদত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রী। তরুণসমাজের অসন্তোষের প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হলেও আসল সমস্যা সেই দেশের দুর্নীতি ও প্রধান প্রধান দলের প্রবীণ রাজনীতিবিদদের নিয়ে গভীর হতাশা। ফলে প্রথমে কম বয়সীদের দিয়ে শুরু হলেও ক্রমে বিক্ষোভে মধ্যবয়সী যুবারাও শামিল হন এবং শেষমেশ এটা অনেকটা সরকারবিরোধী বিক্ষোভের চেহারা নেয়।

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *