উপরমহলের নির্দেশে জমে গেছে ‘খেলা’, বাগান নির্বাচনে এক্স ফ্যাক্টর ৫ জুন

বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ ঘুর্ণিঝড়ে পরিণত হবে কিনা, প্রবল বৃষ্টিপাত হবে কিনা তা নিয়ে বাংলায় সবাই আবহাওয়া দফতরের দিকেই তাকিয়ে। কিন্তু বাগানে ঝড় উঠবে কিনা কিংবা হাওয়া কোন দিকে বইবে, তা ‘ভগবান’ও বুঝতে পারছেন না। নির্বাচনে পালে হাওয়া কোনদিকে, এতদিনেও বুঝে ওঠা গেল না। একবার মনে হয় সৃঞ্জয় শিবির এগিয়ে, পরক্ষণেই মনে হয় দেবাশিস শিবিরই বেশি শক্তপোক্ত। এত দলবদল, রাজনীতির ময়দানেও হয় না, মোহনবাগান নির্বাচন ঘিরে যা হচ্ছে।
কিছুদিন আগেই রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ রায়, মোহনবাগান রত্ন প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখা গিয়েছিল সৃঞ্জয় বসুর সমর্থনে। হাওড়ায় একেবারে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়েই ‘তোমাকে চাই’ ব্যানারের নীচে সভা করে বার্তা ছড়িয়ে দিয়েছিলেন উপরমহলের নির্দেশেই এই সভা। সম্ভাব্য গতিপথ যখন আন্দাজ করা যাচ্ছিল, তার চারদিন বাদেই আবার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখা গেল শিবির বদলে দেবাশিস দত্তের পাশে বসে ইস্তাহার প্রকাশ করতে। আর অরূপ রায়? তিনি আপাতত চুপ। ঠিক যেমন, যবে থেকে ভোটের হাওয়া উঠেছে বাগানে তবে থেকেই মিসিং মুখ্যমন্ত্রীর ভাই স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়।

ক্লাবের কার্যকরী সভায় একবার দেখা গেলেও, কোনও পক্ষের কোনও প্রচারেই নেই। নিন্দুকেরা বলছেন, জল মাপছেন। হবে হয়তো। কিন্তু বাকি তৃণমূলের শাসকরা এমনটা করেননি। যেমন বাগুইআটির সভাতেই সপ্তাহখানেক আগে সৃঞ্জয় বসুর সমর্থনে ধুন্ধুমার সভা সেরেছিলেন বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায়। তিনি একা নন, সেইসঙ্গে ছিলেন অদিতি মুন্সীর স্বামী, যিনি আবার এমআইসি, সেই দেবরাজ চক্রবর্তীও। হাওয়া তখনও একবার বোঝা গিয়েছিল। কিন্তু সপ্তাহ ঘোরার আগেই সেই হাওয়াও ঘুরে গেল। এও নাকি উপরমহলেরই নির্দেশ। রাতারাতি শিবির বদলে শনিবার বাগুইআটিতে তাপস চট্টোপাধ্যায়, দেবরাজ চক্রবর্তীরা প্রচার সারলেন দেবাশিস দত্তের সমর্থনে। হাওয়া ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হবে কিনা জানা যায়নি, তবে দেবাশিসের পালে জোর হাওয়া, তাতে নৌকা যে তরতরিয়ে এগোচ্ছে তা বলাই যায়। আসলে এ খেলার বাইরে অন্য খেলা। সবই নাকি উপরমহলের নির্দেশ। বাগানের অন্দরে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে, এরপর যা সভা এখনও পরিকল্পনা করে রেখেছেন, তা নেতা মন্ত্রীদের অভাবে না ভেস্তে যায় সৃঞ্জয় বসুদের। যদিও শনিবারও জোরকদমেই প্রচার সারতে দেখা গেছে সৃঞ্জয় বসু, টুটু বসুদের।

এ তো প্রচারের খেলা। আসল খেলা কোথায় চলছে কেউই জানে না। কী নির্দেশ কে দিচ্ছেন তাও বোঝার উপায় নেই। আগামী ২৬ মে থেকে নমিনেশনের ফর্ম দেওয়া শুরু হবে। ওইদিন থেকেই জমা নেওয়ার কাজও শুরু হয়ে যাবে। ফলে, মাসের শেষেই বোঝা যাবে কোন শিবিরে কে রয়েছেন। আগামী ৩ জুন পর্যন্ত এই নমিনেশন জমা দেওয়ার তারিখ। এরপর হবে স্কুটিনি। আর ৫ জুন পর্যন্ত সময়সীমা থাকছে মনোনয়ন প্রত্যাহারের। ভোট হওয়ার সম্ভাব্য তারিখ ২২ জুন। বাগানে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে, ততদূর গঙ্গা দিয়ে জল নাও বইতে পারে। কারণ ওই একটাই, উপরমহলের নির্দেশ। এক্সফ্যাক্টর ওই একদিনই, ৫ জুন। সেদিনই খেলা হবে, না হবে না বুঝে যাবে ৬৮১৮ জন ভোটার আর অগণিত ধোঁয়াশায় থাকা সবুজ মেরুন ভক্ত।