দীপাবলির আগে নিভল মশাল, আলো বাগানে, টাইব্রেকারে বিশালের হাতযশে শিল্ড মোহনবাগানে

‘শিল্ড আমি গ্রামের বাইরে যেতে দেব না…’
ধন্যি মেয়ের সেই বিখ্যাত সংলাপ। ডুরান্ড ভিনরাজ্যে গেছে যাক, ঐতিহ্যের আইএফএ শিল্ড ঠিক ঘরে আসবেই, আশায় ছিলেন লাল হলুদ সমর্থকরা। কিন্তু সে গুড়ে বালি। শিল্ড ‘গ্রামের বাইরে’ যায়নি ঠিকই, গেল পড়শি ক্লাবে। তাতেই দীপাবলির আগেই যেমন মশাল নিভল, তেমনই আলো ঝলমল করে উঠল ‘বিতর্কের’ বাগানে।
রুদ্ধশ্বাস লড়াই শেষে ১২৫তম আইএফএ শিল্ড জয় করল মোহনবাগান। এই নিয়ে ২১বার শিল্ড জয়। নির্ধারিত সময়ে খেলার ফল ছিল ১-১। এক্সট্রা টাইমে দু’পক্ষই গোল করতে পারেনি। টাইব্রেকারে গড়ায় ম্যাচ। সেখানেই ফিনিশিং করতে ব্যর্থ ইস্টবেঙ্গলে আসা জয় গুপ্তা। বিশালের দস্তানাতেই ৫-৪ গোলে জয় পেল সবুজ মেরুন ব্রিগেড। ম্যাচ শেষে সব ভুলে উৎসবের জোয়ারে ভাসল গঙ্গাপাড়ের ক্লাব।
এ যেন ২০০৩ সালের আইএফএ শিল্ড ফাইনালের পুনরাবৃত্তি। শেষবার দুই দল শিল্ড ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল ২০০৩ সালে। আর সে’বার টাইব্রেকারে জেতে মোহনবাগান। বাইশ বছর পরেও আইএফএ শিল্ডের রং সবুজ মেরুন থাকল।

যুবভারতীতে টানটান উত্তেজনার নিষ্পত্তিতে টাইব্রেকারে ইস্টবেঙ্গলের পক্ষে গোল করেন মিগুয়েল, সিবিলে, মহেশ এবং হিরোশি। মোহনবাগান সুপারজায়ান্টের হয়ে টাইব্রেকারে পাঁচে পাঁচ করেন করেন রবসন, মনবীর, লিস্টন কোলাসো, পেত্রাতোস এবং মেহতাব সিং। বিশাল পারলেও, দেবজিৎ আর সেভজিৎ হয়ে উঠতে পারলেন না।
ম্যাচে প্রথম গোল করে ইস্টবেঙ্গলই। তবে প্রথম এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ ছিল মোহনবাগানের। ৩১ মিনিটে ম্যাকলারেনকে পিছন থেকে আনোয়ার ধাক্কা মারলে, পেনাল্টি পায় মোহনবাগান।কিন্তু তা থেকে গোল করতে ব্যর্থ জেসন কামিন্স। তাতেই যেন আরও বেশি অক্সিজেন পেয়ে যায় লাল হলুদ।৩৫ মিনিটে রশিদের পাস থেকে নওরেম মহেশ বল পেয়ে দৌড়ে ঢুকে নিচু পাস বাড়ালে তা জালে পাঠান হামিদ আহদাদ। ৪২ মিনিটে ব্যবধান বাড়াতে পারত ইস্টবেঙ্গল। মহেশের পাস থেকে হামিদের বাঁ পায়ের শট পোস্টে লাগে। ৪৪ মিনিটে আবার মিস হামিদের। চাপে পড়ে যায় মোহনবাগান। তবে প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে, আপুইয়ার গোলে সমতা ফেরায় সবুজ মেরুন ব্রিগেড। এই গোলটির ক্ষেত্রে অবশ্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান লিস্টনের। তাঁর ফাইনাল পাস থেকেই বল পান অপুইয়া। বিরতির পরও শিল্ড কার ঘরে ঢুকবে বলা কঠিন ছিল। আক্রমণ-প্রতি আক্রমণে জমে উঠেছিল ম্যাচ। শেষপর্যন্ত নিষ্পত্তি হল টাইব্রেকারেই। খেললেন হিরোশি, কিন্তু হিরো হতে পারলেন না খানিক সময়ে। হিরো একজন, তিনি বিশাল।