আমেরিকার এ কী হাল! মহাকাশেও অন্ধকার, বন্ধ নাসা!
ট্রেন্ডিং: মহাকাশের ঠিকানায় এতকাল যে সংস্থাটার রকেট ছুটতো, সে নাকি এখন নিজেই ছুটি নিয়েছে! পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা, তাদের বেশিরভাগ কাজ গুটিয়ে নিয়েছে। এ কী অবস্থা আমেরিকার?
গত ১ অক্টোবর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ‘অচলাবস্থা’ শুরু হয়েছে। এর কারণ, সরকারি তহবিলের ঘাটতি। দেশটির পার্লামেন্ট, মানে কংগ্রেস সময়মতো বাজেট বা সাময়িক তহবিলের কোনও বিল পাশ করতে পারেনি। ব্যস, যেমন কাঠখড় পোড়ান হয়, তেমনই হাজার হাজার সরকারি কর্মচারী চাকরি হারান। রেহাই পাইনি নাসাও। যাঁরা মহাকাশের স্বপ্ন নিয়ে কাজ করতেন, তাঁরা বাধ্য হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। সরকারি নির্দেশ, জীবন ও সম্পদ রক্ষার জন্য জরুরি কাজগুলি ছাড়া আর কোনও কাজে হাত দেওয়া যাবে না।
আগেও এমনটা হয়েছে, তবে এবারের পরিস্থিতি যেন একটু বেশি কঠিন। এই অচলাবস্থার জেরে মহাকাশ বিজ্ঞান গবেষণা, জনসাধারণের কাছে পৌঁছনোর সব প্রকল্প আপাতত স্থগিত। আপডেট প্রকাশ হচ্ছে না, দৈনন্দিন যোগাযোগও স্তব্ধ। যেন এক নীরবতা নেমে এসেছে ক্যাসিনি বা ভয়েজারের মতো ব্যস্ত মহাকাশযানগুলোর হেডকোয়ার্টারে।
প্রায় ১৫,০০০ কর্মী বাধ্য হয়ে ঘরে বসলেও, কিছু জরুরি কাজ কিন্তু চলছে। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আই এসএস)-এর নভোচারীদের দিকে সার্বক্ষণিক নজর রাখা, সৌরজগতে চক্কর কাটতে থাকা সক্রিয় মহাকাশযানগুলির তদারকি আর গ্রহাণুর গতিবিধি লক্ষ্য করে পৃথিবীর প্রতিরক্ষার কাজ ও নভোচারী এবং মহাকাশযানগুলির সুরক্ষা নিশ্চিত করা, এইগুলি থামানো যায়নি।
তবু আশার নাম ‘আর্টেমিস’। চাঁদে মানুষ ফেরানোর এই অভিযানের কাজই এখন নাসার একমাত্র সক্রিয় স্বপ্ন। সরকারি ঘোষণায় জানানো হয়েছে, প্রায় ৩ হাজার কর্মী এই প্রকল্পে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন—গত অচলাবস্থার তুলনায় দ্বিগুণ। কারণ, এই মিশনকে এখন মার্কিন নিরাপত্তার অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
মার্কিন প্রশাসনের মতে, এটি এখন একপ্রকার ‘চাঁদ দখলের দৌড়’। নাসার ভারপ্রাপ্ত প্রশাসক শন ডাফি জানিয়েছেন, ‘চীন চাঁদে যাচ্ছেই—তবে ভাল উদ্দেশ্যে নয়। আমেরিকাই আগে পৌঁছবে, শান্তি ও অংশীদারিত্ব রক্ষার জন্য।’ তাই এই মিশনের তাগিদ শুধু বৈজ্ঞানিক নয়, কূটনৈতিকও।
অচলাবস্থা দীর্ঘ হলে, চন্দ্র ও মঙ্গল অভিযানের মতো উচ্চাকাঙ্ক্ষী পরিকল্পনায় বিলম্ব অনিবার্য। গবেষণাগারগুলিতে নীরবতা, বিশ্ববিদ্যালয় সহযোগিতায় ভাঁটা, আর আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির সঙ্গে যৌথ প্রকল্পে স্থবিরতা। ইতিহাস বলছে, এর আগেও নাসা এমন পরিস্থিতির মুখ দেখেছে—২০১৩, ২০১৮, ২০১৯ সালের মতো। তখনও থেমেছিল অনেক স্বপ্ন।