প্রয়াত কেয়া পাতার নৌকার স্রষ্টা প্রফুল্ল রায়, তাঁর লেখাতেই হিট হয় সিনেমাও

0



 
সবে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বর্ষাকাল। এমন দিনেই ‘কেয়া পাতার নৌকা’ ভাসিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন কথাসাহিত্যিক প্রফুল্ল রায়। বাংলা সাহিত্যজগতে নক্ষত্রপতন। দীর্ঘ বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন তিনি। গত কয়েকমাস ধরে তাঁর চিকিৎসা চলছিল দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে। বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টে ১৫ মিনিট নাগাদ ওই হাসপাতালেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।বয়স হয়েছিল ৯১ বছর। তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সমাজমাধ্যমে লেখেন, ‘বর্ষীয়ান কথাসাহিত্যিক প্রফুল্ল রায়ের মৃত্যুতে আমি গভীর শোক জ্ঞাপন করছি….’ পাঁচের দশকের মাঝামাঝি ‘দেশ’ পত্রিকায় তাঁর ধারাবাহিক উপন্যাস পূর্ব-পার্বতী রীতিমতো সাড়া ফেলে দিয়েছিল। তাঁর লেখায় ধরা পড়ত মধ্যবিত্ত বাঙালির আর ভারতের নানা জায়গায় মাটির গন্ধ। বিহারের জনজীবনকে ভিত্তি করে ১৩টি উপন্যাস ও ২০ টি গল্প লিখেছিলেন প্রফুল্ল রায়। তিনি উপন্যাস ও ছোটগল্প সহ প্রায় দেড় শতাধিক বই লিখেছেন। তাঁর ‘কেয়া পাতার নৌকো’, ‘শতধারায় বয়ে যায়’, ‘উত্তাল সময়ের ইতিকথা’, ‘নোনা জল মিঠে মাটি’, ‘মন্দ মেয়ের উপাখ্যান’ পাঠক মহলে সাড়া ফেলা উপন্যাস। তাঁর প্রয়াণের ব খবর ছড়িয়ে পড়ার পরই শোকস্তব্ধ গোটা বাংলা। ‘আকাশের নেই মানুষ’ উপন্যাসের জন্য প্রফুল্ল রায় বঙ্কিম পুরস্কার পান। উপন্যাস ক্রান্তিকালের জন্য পান সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কার। তাঁর লেখাকে অবলম্বন করে একাধিক টেলিফিল্ম তৈরি হয়েছে নানা সময়ে। প্রফুল্ল রায়ের গল্প নানা সময়ে চিত্রনাট্যের রূপ নিয়েছে। ‘এখানে পিঞ্জর’, ‘বাঘ বন্দি খেলা’, ‘একান্ত আপন’, ‘চরাচর’, ‘টার্গেট’, ‘মন্দ মেয়ের উপাখ্যান’, ‘ক্রান্তিকাল’, ‘পিতৃভূমি’র গল্প অবলম্বনে তৈরি হয়েছে সিনেমা-সিরিয়াল-টেলিফিল্ম। স্বাধীনতাপূর্ব অবিভক্ত বাংলার ঢাকায় ১৯৩৪ সালের ১১ সেপ্টেম্বর জন্ম প্রফুল্ল রায়ের। ঢাকায় কেটেছে শৈশব। দেশভাগের পর ১৯৫০ সালে চলে আসেন ভারতে। দেশভাগের যন্ত্রণা, উদ্বাস্তুদের কথা তাঁর লেখায় মূর্ত হয়ে উঠেছিল।

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *