‘একঘেয়েমি কত কিছুতেই আসে!’ ছোটপর্দা ছাড়া নিয়ে লিলি চক্রবর্তীর বিপরীতে সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়
এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক: বাংলা অভিনয় জগতের দুই কিংবদন্তি, সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় ও লিলি চক্রবর্তী—দু’জনেই তাঁদের দীর্ঘ ও গৌরবময় কর্মজীবন পেরিয়ে আজও কাজ করছেন। বড় পর্দা হোক বা ছোট পর্দা, দুই ক্ষেত্রেই দাপিয়ে কাজ করেছেন দুই কিংবদন্তি। ভবিষ্যতেও কি কাজ করবেন ধারাবাহিকে? সম্প্রতি ছোট পর্দায় তাঁদের ফিরে আসা অথবা না-ফেরার সিদ্ধান্ত ঘিরে শুরু হয়েছে নতুন করে আলোচনা।
কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের পরিচালনায় ‘আজও অর্ধাঙ্গিনী’ ছবির হাত ধরে আবারও বড় পর্দায় খা যাবে লিলি চক্রবর্তীকে। আর সেই ছবির অনুষ্ঠানেই তিনি জানিয়ে দেন, ধারাবাহিকে আর কাজ করতে চান না তিনি। তাঁর মতে, ধারাবাহিকের গল্প শুরুর দিকে যতই ভাল হোক না কেন, কিছুদিন পর তা একঘেয়ে হয়ে পড়ে। প্রতিদিন বেরিয়ে কাজ করা তাঁর কাছে এখন অযথা পরিশ্রম বলে মনে হয়। তাঁর এই সিদ্ধান্ত অনেকটাই মিলে যায় রত্না ঘোষালের সঙ্গেও, যিনি এর আগেই জানিয়েছিলেন ছোট পর্দা থেকে সরে আসার কথা।এই পথেই কি হাঁটছেন সতীর্থ সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়? এই প্রসঙ্গে অভিনেত্রীর প্রতিক্রিয়া মতামত ভিন্ন । তিনি স্পষ্ট বললেন, “ভাল পাঠ হলেই আমি কাজ করব। একঘেয়েমি তো কত কিছুতেই আসে!”
বড় পর্দা থেকে ছোট, মঞ্চ থেকে ক্যামেরার নেপথ্যের জীবন—সব মিলিয়ে দর্শকের একান্ত আপনজন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়। ‘নিশিপদ্ম’, ‘মৌচাক’, ‘মাল্যদান’, ‘অপূর সংসার’—বাংলা সিনেমার একাধিক যুগান্তকারী ছবিতে তাঁর উপস্থিতি আজও দর্শকের মনে গেঁথে আছে। ‘কৌতুক সম্রাজ্ঞী’ হিসেবেও তিনি প্রশংসিত। এছাড়াও, স্টার জলসার জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘কুসুম দোলা’-তেও তাঁকে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে দেখা গিয়েছে। ‘জল নূপুর’, ‘মোহর’, ‘অন্দরমহল’, ‘বালিঝড়’, ‘সন্ন্যাসী রাজা’, ‘ময়ূরপঙ্খী’ এবং ‘ধুলোকণা’র মতো আরও অনেক ধারাবাহিকে তাঁর অভিনয় দর্শকদের কাছে প্রশংসিত হয়েছে। সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় তাঁর দীর্ঘ অভিনয় জীবনে যেমন চলচ্চিত্রে অসামান্য অবদান রেখেছেন, তেমনই টেলিভিশনের দর্শকদের কাছেও তিনি এক প্রিয় মুখ।
তাঁর কথায় স্পষ্ট, তিনি এখনও কাজ করতে প্রস্তুত, যদি চরিত্র এবং গল্প তাঁকে টানে। বয়স কখনও তাঁর পথের বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি, বরং প্রতিটা নতুন চরিত্রকেই তিনি দেখেন অভিনয়ের এক নতুন সুযোগ হিসেবে।
এই সময়ে যখন একের পর এক অভিজ্ঞ অভিনেত্রী ধারাবাহিক থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন ক্লান্তি, সময়ের চাপ বা গল্পের পুনরাবৃত্তির কারণে, সেখানে দাঁড়িয়ে সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় যেন ব্যতিক্রমী।