উপরমহলের নির্দেশ, মোহন পালে কি হাওয়া ঘুরছে, জেনে নিন কার পাল্লা ভারী

0

স্পোর্টস ডেস্ক: টুটু বসুর ছবি সাঁটিয়ে সৃঞ্জয় বসুর সমর্থনে ‘তোমাকে চাই’ স্লোগান উঠেছে। অন্যদিকে অঞ্জন কন্যা সোহিনী মিত্র চৌবেকে সামনে রেখে দেবাশিস দত্তের সমর্থনে তুমি কার স্লোগান উঠতেই পারে। তার কারণও আছে। শনিবার একদিকে সৃঞ্জয় শিবির বাগুইআটিতে ফ্লপ শো করেছে, তখন বেলেঘাটায় দেবাশিস দত্তের শিবিরের শো হিট। একেবারে উঁচু গলায় দেবাশিসের হয়ে প্রচার সেরেছেন গৌতম সরকার। পেয়েছেন বাহবা। দু’পক্ষের প্রচার দেখে ভোটের আবহ অনুমান করবেন যখন সদস্যরা, তখন আন্দাজই কেউ করতে পারেননি ‘এক্স ফ্যাক্টর’ সবুজ মেরুন কর্মীসভা হয়ে গেল হাওড়ায়। আর সেই বৈঠক তৃণমূলের জেলা পার্টি অফিসে ডেকেছিলেন মোহনবাগানের সহসভাপতি ও রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ রায়।

কেন ডেকেছিলেন এই কর্মীসভা? আডিশনের প্রতিনিধির প্রশ্নের জবাবে অরূপ রায় জানান, উপরমহলের নির্দেশ সকলকে জানিয়ে দিতেই এই সভা। কে না জানে, মোহনবাগানের নির্বাচনে হাওড়ার ভোটই জয়-পরাজয় নির্ধারণ করে দিতে পারে। মোহনবাগানের ৬ হাজার প্লাস ভোটারের মধ্যে দু’হাজারেও বেশি ভোটার শুধুমাত্র হাওড়াতেই। সেখানেও দু’ভাগ রয়েছে। একটা ভাগ টুটু বসুর অন্য ভাগ অঞ্জন মিত্রের। প্রাক্তন সচিব বেঁচে নেই। কিন্তু তাঁর আবেগকে কাজে লাগাতেই তৎপর সোহিনী মিত্র চৌবে। কিন্তু অরূপ রায়ের ‘উপরমহলের নির্দেশ’ এই নির্বাচনের অঙ্ক যেন সহজ হয়ে গিয়েছে। কারণ খেলা আরও বাকি। বরং বলা যায় শুরু। দেবাশিস দত্ত যেমন ভোটপ্রচারের শুরুতেই টুটু বসুর ছোটছেলে সৌমিক বসু (টুবলাই) কে দিয়ে প্রচার করিয়ে চমক দিয়েছেন। তেমনই তোমাকে চাই ব্যানারে সৃঞ্জয় বসুকে সরাসরি সমর্থন অরূপ রায়ের, সেটা আরও বড় চমক। কারণ এই অরূপ রায়কেই কয়েকদিন আগে দেবাশিসের সঙ্গে এক মঞ্চ এক সুর মেলাতে দেখা গিয়েছিল।

সেখানে ছিলেন সাংসদ প্রসূন বন্দোপাধ্যায়ও। এখন অরূপ জানান, এমপিও আছেন। তিনিও সৃঞ্জয়কেই সমর্থন করতে বলেছেন। সৃঞ্জয়ের লেজুর হয়ে থাকা সদস্য মিন্টু বাগ ভোটের আবহে দেবাশিস শিবিরে চলে আসা যদি বড় খবর হয়, তাহলে আরও বড় খবর, অরূপ রায়ের কর্মীসভায় দেবাশিসের কর্মসমিতির শুভাশিস পাল ( হকিসচিব), মহেশ টিকওয়াল (আমন্ত্রিত)কে দেখতে পাওয়া। এই শুভাশিসই দেবাশিসের আমলে চূড়ান্ত সাফল্য এনে দেয় হকিতে। শুধু কী তাই, সহ সভাপতি অসিত চট্টোপাধ্যায়কেও দেখা গেছে অরূপ রায়ের সভায়। অথচ তাঁর ছেলে দু’দিন আগেই দেবাশিসের কর্মীসভায় নির্বাচনের ব্লু প্রিন্টের সাক্ষী ছিলেন। ক্রিকেটের দায়িত্বে থাকা সেই তন্ময় যে বাবার সঙ্গ ধরবেন তা যে সময়ের অপেক্ষা বুঝতে বাকি নেই কারোরই। একের পর এক ধাক্কা। মোহনবাগান এসজিকেও এত কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়নি। এত গোল খেয়েও কি ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন দেবাশিস? সেই প্রশ্ন দেবাশিসের শিবিরেই। অন্যদিকে সৃঞ্জয় শিবিরে যে দেবাশিসের লোকেরা ঢুকে পড়লে এতদিনের বিশ্বস্ত ঘোড়ারা, যারা পদ পাবেন ভেবেছিলেন তারা সর্ষে ফুল দেখছেন। অনেকে আবার উপরমহলের নির্দেশও ভাল চোখে দেখছে না। কারণ, আগের নির্বাচনের তিক্ত অভিজ্ঞতা তাদের। শেষমুহূর্তে অদৃশ্য শক্তিই সৃঞ্জয় ও তাঁর ঘনিষ্টদের মুখ পুড়িয়ে দেয়। প্রচার যাই হোক, বৈঠক যাই হোক, যতই ব্যক্তিগত কাদা ছোড়াছুড়ি হোক, যতই ফুটবলাররা পাশে থাকুক, এক্স ফ্যাক্টর যে উপরমহলের নির্দেশ তা বুঝতে কারোর বাকি নেই। অরূপ রায় দু’পক্ষের ধুন্ধুমার প্রচারের মাঝে শান্তির জল ছড়িয়ে দেওয়ার মতো ঘৃতাহুতিই করলেন।

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *