কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের মঞ্চেই শত্রুঘ্ন-আরতিকে বঙ্গবিভূষণ সম্মান মুখ্যমন্ত্রীর

কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে সাম্প্রতিক বলিউডের কোনও সুপারস্টার আসেনি। তবু ধনধান্য ধনধান্য অডিটোরিয়াম ঝলমলে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত দিয়েই উদ্বোধন হয়ে গেল ৩১ তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। যেখানে উপস্থিত ছিলেন দেশ-বিদেশের তারকা, টলিউডের একাধিক তারকা, পরিচালক, শিল্পী এবং চলচ্চিত্রপ্রেমীরা।
অনুষ্ঠান শুরু হয় ‘বাংলার মাটি বাংলার জল’ গান দিয়ে। বিশেষ পর্বে ছিল বিখ্যাত ডোনা গঙ্গোপাধ্যায় ও তাঁর দলের নৃত্য। অনুষ্ঠান মঞ্চে ছিলেন সিএবির সভাপতি ও বাংলার ‘ব্র্যান্ড আম্বাসাডর’ সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। এছাড়াও ছিলেন ‘শোলে’-খ্যাত পরিচালক রমেশ সিপ্পি, সঙ্গীতশিল্পী আরতি মুখোপাধ্যায় এবং ‘কাহানি’-র পরিচালক সুজয় ঘোষ। অভিনেতা-রাজনীতিক শত্রুঘ্ন সিনহার পাশাপাশি একমঞ্চে দেখা যায় প্রসেনজিৎ-জিৎ-দেবকে।মঞ্চেই ছিলেন লিলি চক্রবর্তী, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, রঞ্জিত মল্লিক, কোয়েল মল্লিক, চিরঞ্জিৎ, রাজ চক্রবর্তী, পাওলি দাম, শুভাশিস মুখোপাধ্যায়, অরিন্দম শীল, হরনাথ চক্রবর্তী-সহ আরও অনেকে। সৌরভ ও শত্রুঘ্নকে পাশে নিয়ে পরিচালক রমেশ সিপ্পিকে উত্তরীয় পরিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ হাতে তুলে দেন ফুলের বোকে ও মা দুর্গার মূর্তি। আর এই মঞ্চে ‘বঙ্গবিভূষণ’ পুরস্কারে সম্মানিত হলেন রাজনীতিবিদ-অভিনেতা শত্রুঘ্ন সিনহা, সঙ্গীত শিল্পী আরতি মুখোপাধ্যায়৷ অভিনেতা শত্রুঘ্ন সিনহা বলেন, ‘আমি সত্যিই আজ অবাক হয়ে গিয়েছি এই পুরস্কার পেয়ে। আমি কিছুই জানতাম না। আমি আপ্লুত।’ আরতি মুখোপাধ্যায়ের হাতে এই সম্মান তুলে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আরতিদি আমাদের অনেক কিছু দিয়েছেন। অথচ আমরা তাঁকে কোনওদিন যথাযথ সম্মান জানাতে পারিনি। আজ আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টায়, বাংলার সর্বোচ্চ সম্মান তাঁর হাতে তুলে দিতে পেরে আমরা গর্বিত’। চলচ্চিত্র উত্সব নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, ‘‘বাংলায় অনেক গুণী মানুষ রয়েছেন। বাংলার সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, ভাষা উচ্চমানের। সিনেমাকে কাঁটাতারে বাঁধা যায় না। এক বিশ্ব এবং এক আমরা। এই উৎসব আয়োজন করার আসল উদ্দেশ্য এটাই। সিনেমা পৃথিবীকে একসূত্রে বাঁধে, মানবতাকে দৃঢ় করে। এর কোনও সীমানা নেই। পৃথিবী একটাই, আমরাও এক। সেটাই সিনেমার আসল উদ্দেশ্য।’ উৎসব কমিটির চেয়ারম্যান পরিচালক গৌতম ঘোষ উদ্বোধনে বলেন, ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতা দেখে রবীন্দ্রনাথ সভ্যতার সংকট লিখতে বাধ্য হয়েছিলেন। ঠিক তেমনি বর্তমানে সমাজ বিশ্বজুড়ে আবার সংকটের মুখোমুখি। এই সময়ের ঘটনাবলীও চলচ্চিত্র নির্মাতারাদের ভাবাচ্ছে এবং তাঁরা এই শিল্পের মাধ্যমে তা তুলে ধরার চেষ্টা করছেন’। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জুন মালিয়া ও পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়।
