টানা শারীরিক নির্যাতন, প্রেমিক কোরিওগ্রাফার গ্রেফতার হতেই লাইভে মুখ খুললেন অভিনেত্রী
এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক: তিন বছরের সম্পর্ক। তারই মাশুল গুনছেন অভিনেত্রী নয়না গঙ্গোপাধ্যায়। সম্প্রতি কোরিওগ্রাফার প্রেমিক টুবান চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ এনেছেন তিনি। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতেই গ্রেফতার হয়েছেন তিনি।
কিছুদিন আগেই সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে নয়না জানিয়েছিলেন, এই বিষয় সবটা প্রকাশ্যে আনবেন তিনি। তেমন কথা তেমন কাজ। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ফেসবুক লাইভে এলেন তিনি। তার একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ আনলেন টুবানের বিরুদ্ধে। তিনি জানান, তাঁর হাত থেকে একের পর এক কাজ কেড়ে নিয়েছিলেন তাঁর প্রেমিক। প্রশ্ন তুলেছিলেন তাঁর চরিত্র এবং পোশাক পরিচর্যা নিয়েও। নায়িকা বলেন, “তিন বছরের সম্পর্ক। বিয়ে করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সেই সব দূরস্থ। আমাকে কাজটাও পর্যন্ত করতে দেওয়া হচ্ছিল না। আমার করা সমস্ত প্রজেক্ট নিয়ে কটাক্ষ, প্রোডাকশন হাউজের সঙ্গে ঝামেলা…এই সবই সহ্য করেছি।”

এমন নয়, অভিনেত্রীকে আগেভাগে কেউ সতর্ক করেননি, নয়না নিজেই স্বীকার করেন, “আমাকে প্রথম থেকে সাবধান করা হয়েছিল ওর ব্যাপারে। বলা হয়েছিল আমি থাকতেও একের পর এক সম্পর্কে জড়িয়েছে সে। কিন্তু আমি অন্ধের মতো বিশ্বাস করেছিলাম তাঁকে। আমার উপর দিনের পর দিন নিয়ন্ত্রণ আনতে শুরু করে সে। তার পর যখন ওর কথা মতো চলতে শুরু করি, তখন থেকেই শুরু অত্যাচার। শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে আমাকে।” তিনি আরও যোগ করেন, “আমি সব মাধ্যম থেকেই সরে দাঁড়িয়েছিলাম। টেলিভিশন, ধারাবাহিক, সিনেমা, সিরিজ কোনও কিছুই করছিলাম না। এমনকি জিমটাও বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। আমার বিগত কিছু পোস্টেই স্পষ্ট আমার ওজন বেড়েছে অনেকটাই।” কিছুটা আবেগপ্রবণ হয়েই পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে অভিনেত্রী বলেন, “ও আমার চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলছিল। ও একজন সামান্য কোরিওগ্রাফার। যাকে হয়তো ইন্ডাস্ট্রির অনেকেই চেনেন না। তার পরেও আমি ওর সঙ্গেই থেকেছি। মানতাম ও কোনও নামী পরিচালক বা প্রযোজক হত, তাও মানা যেত।”
তবে এত কিছুর পরেও হাল ছাড়ার পাত্রী নন তিনি। সমাজমাধ্যমে ফের লেখেন, ‘এই তো সবে শুরু। আমার যুদ্ধ সবে শুরু হল। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে একজন মেয়ে হিসেবে নির্যাতিত হয়ে তাঁর সঙ্গীর বিরুদ্ধে লড়ে যাওয়া সহজ নয়। এর জন্য অনেক কিছুর সম্মুখীন হতে হবে আমাকে। কিন্তু তাও আমি লড়ে যাব বিচারের জন্য। স্বাধীন ও নিরপেক্ষ দর্শনই হল একজন নারীর সবচেয়ে বড় শক্তি।’