কলেজে গণধর্ষণ! এবার কসবা, সেই রাতে ঠিক কী কী ঘটেছিল নির্যাতিতার সঙ্গে

আইজি করে ‘তিলোত্তমা’ কাণ্ডের বছরও ঘোরেনি। সবে ১১ মাস। এরমধ্যেই কসবা থানার ২৫০ মিটারের মধ্যেই পৈশাচিক ঘটনা। এবার আইন কলেজে যেন তারই ছায়া। সেখানেও ধর্ষণের অভিযোগে উত্তাল রাজ্য। ক্যাম্পাসের মধ্যেই ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল। তিনজনকে গ্রেফতারও করেছে কলকাতা পুলিশ৷ এরপরই প্রশ্ন ওঠে, কীভাবে ঘটল এমন শিহরণ জাগানো নির্যাতনের ঘটনা। ঘটনাটি ঘটে বুধবার, ২৫ জুন। পুলিশের কাছে ওই নির্যাতিতা তরুণী দাবি করেছেন, ওই দিন সন্ধে সাড়ে ৭টা থেকে রাত পৌনে ১১টার মধ্যে ঘটনাটি ঘটে৷ অভিযুক্তদের মধ্যে একজন তৃণমূল যুবনেতা। অভিযোগকারিণী অবশ্য তাঁর অভিযোগপত্রে কারও সরাসরি নাম নেননি। নামের আদ্যক্ষর ব্যবহার করেছেন। ঘটনার দিন ঠিক কী হয়েছিল, তার ব্যাখ্যাও পুলিশকে দিয়েছেন নির্যাতিতা। তরুণী পুলিশের কাছে যে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন তাতে লিখেছেন, গত বুধবার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের এক মিটিং শেষে তাঁকে ঘিরে ধরে ‘জে’, ‘এম’ ও ‘পি’ নামের তিন যুবক। তাঁর অভিযোগ, এদের মধ্যে ‘এম’ ও ‘পি’ তাঁকে একটি ঘরে বন্ধ করে রেখে চলে যান এবং ‘জে’ তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। তরুণীর কথায়, ‘জে’ বলেছিলেন কলেজে প্রথম যে দিন তাঁকে দেখেছেন, সে দিন থেকেই পছন্দ করেন। তবে সেই প্রস্তাব তিনি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। জানিয়েছিলেন তাঁর বয়ফ্রেন্ড আছে, তিনি তাঁকে ছাড়তে পারবেন না। এরপরও সব ঠিক ছিল। কিন্তু সন্ধেবেলা বাড়ি যাওয়ার সময়ে ‘জে’ তাঁকে ফের আটকান এবং ইউনিয়ন রুমে আসতে বলেন। অভিযোগ, এরপর তাঁকে সংশ্লিষ্ট কলেজের গার্ড রুম কিংবা সিকিউরিটিদের রুমে নিয়ে যাওয়া হয় । সিকিউরিটির রুমে নিয়ে যাওয়ার আগে সেখানকার নিরাপত্তারক্ষীদের ভয় দেখানো হয় । সেখান থেকে তাঁদের ভয় দেখিয়ে বারবার করে দেওয়া হয়৷ ওই নির্যাতিতা তরুণী যাতে কোনোরকমে এখান থেকে পালিয়ে যেতে না পারেন, তাঁর জন্য কলেজের মূল গেটের বাইরে দু’জনকে পাহারার জন্য রাখে এম। নির্যাতিতা বলেন, ‘আমাকে টেনে নিয়ে যাওয়া হয় গার্ডরুমে। সেখানেই ‘জে’ আমাকে বিবস্ত্র করে এবং ধর্ষণ করে। আমি বাধা দিলে ও হুমকি দেয়, যদি কারও কাছে কিছু বলি, তবে আমার প্রেমিক ও পরিবারের লোকেদের মেরে ফেলবে।’ শুধু তাই নয়, বাধা দিলে তাঁকে হকিস্টিক দিয়ে মারতেও উদ্যত হয় ‘জে’ বলে অভিযোগ করেন তরুণী। নির্যাতিতা বয়ানে লেখেন, ‘আমি ওকে (জে) অনেকবার বলেছিলাম ছেড়ে দিতে, কেঁদেছি, ওর পা ছুঁয়ে অনুরোধ করেছি। কিন্তু ও ছাড়েনি। আমি এও বলেছিলাম যে আমার প্রেমিক আছে, আমি ওকে ভালোবাসি। কিন্তু তাও আমাকে ধর্ষণ করে ও’। তরুণী এও জানান, ওই সময় তাঁর প্রবল প্যানিক অ্যাটাক হয় এবং শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তিনি সাহায্যের জন্য চিৎকার করেন। সেই সময়ে ‘জে’ ‘এম’ ও ‘পি’-কে ঘরে ডাকে। তিনি তাঁদের ইনহেলার আনতে অনুরোধ করলে ‘এম’ সেটা এনে দেয়। ইনহেলার নেওয়ার পরে তিনি খানিকটা স্বাভাবিক হন।