‘মিলে সুর মেরা তুমহারা’ থেকে ‘অব কি বার মোদি সরকার’ -এর স্রষ্টা পীযূষ পাণ্ডের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ প্রধানমন্ত্রী, বিগ বি
এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক: কিছু মানুষ আড়ালে থাকলেও, তাঁর কীর্তি, তাঁর সৃষ্টি মনে থেকে যায়। মনে রয়ে যায় অনেকদিন। তেমনই পীযূষ পাণ্ডে।
একের পর এক চমক বিজ্ঞাপনে তাঁর হাতেই সৃষ্টি। বিজ্ঞাপন দুনিয়ার সেই কিংবদন্তি পীযূষ পাণ্ডে শুক্রবার ভোরবেলা প্রয়াত হন। বয়স হয়েছিল ৭০ বছর। তাঁর জীবন-দীপ নিভে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই যেন বিজ্ঞাপন জগতের এক যুগের অবসান হল।
ক্যাডবেরি- ‘কুছ খাস হ্যায়’, ফেভিকুইক ও ফেভিকল- ‘তোড়ো নেহি জোড়ো’, ‘ফেভিকল সোফা’, এশিয়ান পেন্টস- ‘হর ঘর কুছ কেহতা হ্যায়’, হার খুশি মে রং লায়ে, পন্ডস: গুগলি উগলি উশ, এয়ারটেল- ‘হর এক ফ্রেন্ড জরুরি হোতা হ্যায়’ কত সৃষ্টি তাঁর, যা নিয়ে আজও মানুষ নস্ট্যালজিয়ায় ভেসে যেতে পারেন। যে বিজ্ঞাপন মানুষের বিরক্তির কারণ হয়ে উঠত, সেই বিজ্ঞাপনই যেন অমর সৃষ্টিতে ভালবাসতে শিখিয়ে ছিলেন পীযূষ পাণ্ডে।

শুধু তো বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপনই নয়, দেশব্যাপী পোলিও অভিযানের বিজ্ঞাপন ‘দো বুন্দ জিন্দগী কে’ ও ২০১৪ সালে বিজেপির রাজনৈতিক প্রচারের জনপ্রিয় ট্যাগলাইন ‘আবকি বার মোদী সরকার’ ছিল তাঁর মস্তিষ্কপ্রসূত। তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি সমাজ মাধ্যম এক্স-এ লেখেন, ‘পীযূষ পাণ্ডে ছিলেন তাঁর সৃজনশীলতার জন্য প্রশংসিত। বিজ্ঞাপনের জগতে তিনি এক অসামান্য অবদান রেখেছেন। বছরের পর বছর ধরে আমাদের মধ্যে যে যোগাযোগ ছিল সেটা আমি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি। ওঁর মৃত্যুতে আমি শোকাহত। ওঁর পরিবার এবং ভক্তদের প্রতি আমার সমবেদনা। ওম শান্তি।’

পীযূষের জন্ম জয়পুরে। বিখ্যাত গায়িকা ইলা অরুণের ভাই তিনি। ১৯৮২ সালে বিজ্ঞাপন দুনিয়ায় পা রাখেন পীযূষ। এরপর যা ঘটিয়েছেন, তা মিথ হয়ে রইল। দূরদর্শনে ‘মিলে সুর মেরা তুমহারা’র মতো দেশভক্তির গানের ভিডিও-তেও পীষূষের কণ্ঠ ব্যবহৃত হয়েছিল। গানটি লিখেওছিলেন তিনি। ২০২৪ সালে এলআইএ লেজেন্ড অ্যাওয়ার্ড এবং ২০১৬ সালে পদ্মশ্রীতে ভূষিত হন পীযূষ। শোকপ্রকাশ করেছেন বলিউডের বিগ বি অমিতাভ বচ্চনও। তিনি ব্লগে লেখেন, ‘ক্রিয়েটিভ জিনিয়াস… কাছের বন্ধু, পথপ্রদর্শক… আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। দুঃখপ্রকাশ করার ভাষা নেই। স্তব্ধ! নিঃশব্দ!’ শোক জানিয়েছেন বলিউডের সুপারস্টার শাহরুখ খানও। শঙ্কর মহাদেবন সমাজ মাধ্যমে লেখেন, ‘‘তোমার কথা খুব মনে পড়বে বন্ধু… কিছুতেই বিশ্বাস হচ্ছে না।’ তিনি চলে গেলেন বয়সজনিত শারীরিক সমস্যায়, কিন্তু তিনি রয়ে গেলেন মানুষের মণিকোঠায়। যতদিন বিজ্ঞাপন থাকবে, ততদিন ভীষণভাবে মানুষের জীবনে কাছের হয়ে থাকবেন পীযূষ পাণ্ডে।
