রংমশালের মতো আলো জেমিমার ব্যাটে! তিনি জানেন এতদিন কতটা ছিল অন্ধকার!

0





‘স্ট্যান্ড স্টিল, গড উইল ফাইট ফর ইউ’
ভারত মহিলাদের বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড গড়ল। এ জয়ের রচয়িতা জেমিমা রডরিগেজ। ২২ গজে তুলির আঁচড়ে অনিন্দ‌্য সুন্দর রান তাড়ায় দলকে ফাইনালে তুলেছেন জেমিমা। চোখে জল স্বাভাবিক, কপালে যে অদৃশ্য বিজয় তিলক। জেমিমা প্রমাণ করলেন পরিশ্রম, একাগ্রতা, নিবেদন, সততা থাকলে সৃষ্টিকর্তাও একদিন না একদিন মুখ তুলে তাকাবেন, বিজয় তিলক পরাবেন।
গত বিশ্বকাপে সুযোগ পাননি। প্রবল মানসিক যন্ত্রণায় অবসাদে ভেঙে পড়েছিলেন একসময়। জাতীয় দলে ফিরতে জেমিমা রডরিগেজ শুরু করেন লড়াই। সঙ্গী বাইবেল। এবারের বিশ্বকাপের দলে সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু শুরুটা ভালো হয়নি। প্রথম মাচে শূন্য করেছিলেন। পরবর্তী তিনটি ম্যাচে রান না পাওয়ায় বাদও পড়েছিলেন। জেদ চেপে গিয়েছিল। ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য, নিজেকে প্রমাণ করার জন্য মঞ্চ খুঁজছিলেন তিনি। সেমিফাইনালেই সেই মঞ্চটা পেয়ে গেলেন। এবং নিজেকে উজাড় করে দিলেন। ছাপিয়ে গেলেন সবাইকে। ১৩৪ বলে ১২৭ রানের মনোমুগ্ধকর ইনিংস। এমন ইনিংস পুরো ক্রিকেটীয় জীবনে একবারই খেলা যায় বলে দিলেন ইয়ান বিশপ। 
ম্যাচের পর জেমিমা বলছিলেন, ‘ঈশ্বরকে ধন্যবাদ। কারণ, আমি একা কিছুই করিনি। তিনি পাশে না থাকলে কিছুই করতে পারতাম না। আমি জানি, তিনি আমার পাশে ছিলেন। ধন্যবাদ জানাতে চাই আমার বাবা-মা, আমার কোচ এবং কঠিন সময়ে যারা আমার পাশে ছিলেন, তাঁদের সবাইকে। গত চারটা মাস কী গেছে তা বলে বোঝাতে পারব না। ফিরে আসাটা ভীষণই কঠিন ছিল। স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে। স্বপ্নটা এখনও শেষ হয়নি।’


তাকে তিন নম্বরে ব‌্যাটিংয়ে পাঠানো হবে জানতেন না। হুট করেই তাকে বলা হয়, হাতে ৫ মিনিট সময় আছে প্রস্তুত হওয়ার। জীবনের মোড় ওই ৫ মিনিটেই ঘুরে যায় জেমিমার। এরপর মাঠে নামলেন, খেললেন, হাসলেন, ভুল করলেন। আবার জেগে উঠলেন।

 সবকিছুর মাঝে জারি রাখলেন লড়াই। পুরো ক্রিকেট বিশ্বের কুর্ণিশ আদায় করে নেওয়া জেমিমা দুই হাত জোর করে প্রার্থনায় মগ্ন থাকলেন। বাবা-মাকে জড়িয়ে কাঁদলেন। সতীর্থদের ভালোবাসায় আবদ্ধ হলেন। স্যালুট জানাল ১৪০ কোটির ভারত। আলোয় ফেরার দিনে অন্ধকার জীবন যে বেশি মনে পড়ছে জেমিমার। সে কারণেই তো বলে উঠলেন, “গতবছর বিশ্বকাপে আমাকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। কোনওকিছুই আমার নিয়ন্ত্রণে ছিল না। এই সফরে প্রায় প্রতিদিন কেঁদেছি। মানসিকভাবে মেটেই ভালো জায়গায় ছিলাম না। একটা উদ্বেগ ঘিরে ছিল আমাকে। তবে নিজেকে বলেছিলাম, জ্বলে উঠতে হবে।’

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *