কিংবদন্তি ও জনপ্রিয় আম্পায়ার ডিকি বার্ড আর নেই! শোকস্তব্ধ ক্রীড়ামহল

ক্রিকেটের ইতিহাসে যে কজন মানুষ ব্যাট বা বল হাতে নয়, কেবল একটি সাদা টুপির নিচে দাঁড়িয়ে থেকেই কিংবদন্তি হয়ে উঠেছেন – ডিকি বার্ড তাদের মধ্যে অন্যতম।মাঠে তাঁর উপস্থিতি ছিল কখনও মজার কাণ্ডকারখানায়, কখনও কঠিন সিদ্ধান্তে। সেই মানুষটিই আর নেই। ইয়র্কশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাব মঙ্গলবার জানায়, ৯২ বছর বয়সে প্রয়াত হয়েছেন হারল্ড ডেনিস ‘ডিকি’ বার্ড। প্রায় ১৫০ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচে আম্পায়ারিং করেছেন ডিকি। ক্রিকেট ইতিহাসে এমন নজির তিনিই প্রথম কায়েম করেছিলেন। ডিকি বার্ডের মৃত্যু সংবাদে গোটা ক্রিকেট বিশ্বে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। ভারত বনাম ইংল্যান্ড সিরিজের লর্ডসে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, রাহুল দ্রাবিড়দের অভিষেক ম্যাচই শেষ ম্যাচ পরিচালনা ছিল ডিকি বার্ডের।১৯৯৬ সালে লর্ডসে ইংল্যান্ড–ভারত টেস্টে তাকে অভূতপূর্ব গার্ড অব অনার দিয়ে বিদায় জানিয়েছিল খেলোয়াড়রা। তিনটি বিশ্বকাপ ফাইনালসহ ৬৬টি টেস্ট ও ৬৯টি ওয়ানডেতে আম্পায়ারিং করেন বার্ড। ক্রিকেটে অসামান্য অবদানের জন্য ১৯৮৬ সালে ‘এমবিই’ ও ২০১২ সালে ‘ওবিই’ সম্মান পান তিনি। ক্রিকেটকেই নিজের ধ্যান-জ্ঞান বানিয়েছিলেন ডিকি বার্ড। যে কারণে বিয়ে পর্যন্ত করেননি। ২০১৩ সালে সংবাদমাধ্যম ‘দ্য গার্ডিয়ান’কে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি পুরো জীবনটা ক্রিকেটকে দিয়েছি। এটা এতটাই সহজ ও স্বাভাবিক বিষয়। আমি কখনও বিয়ে করিনি, কারণ আমি খেলাটির সঙ্গে সংসার পেতেছি।’ চোটের কারণে প্রথম শ্রেণির কেরিয়ার বড় হয়নি বার্ডের। ১৯৫৬ থেকে ১৯৬৪ পর্যন্ত ইয়র্কশায়ার ও লিস্টারশায়ারের হয়ে মোট ৯৩টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলে অবসর নেন। বার্ড এরপর আম্পায়ার হন। মাঠে তাঁর আম্পায়ারিংয়ের আলাদা একটা বৈশিষ্ট্য ছিল। বুদ্ধিদীপ্ত রসিকতাও করতেন খেলোয়াড়দের সঙ্গে। ইয়র্কশায়ারের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ডিকি আমাদের ক্লাবের ইতিহাসের অন্যতম সেরা চরিত্র হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। আগামী দিনগুলোতে তাঁকে সম্মান জানাতে নানা আয়োজন করা হবে।’ ক্রিকেট মাঠে তার কণ্ঠস্বর, হাতে তোলা আঙুল কিংবা দর্শকের সঙ্গে খুনসুটি—সবই আজ স্মৃতির পাতায়। ডিকি বার্ডের চলে যাওয়া মানে ক্রিকেটের হাসিখুশি এক অধ্যায়ের সমাপ্তি।