দত্ত ভার্সেস বোস, নির্বাচন ঘিরে ব্যক্তিগত বেনজির আক্রমণ, সরগরম বাগান

0


মোহনবাগানের ফুটবল দলটা সবকিছুর থেকে আলাদা করে নিয়েছেন সঞ্জীব গোয়েঙ্কা, এখন মনে হয় তাতে ভালই করেছেন। কারণ, বছর তিনেক পরপর বাগান নির্বাচন এলেই কঙ্কালসার চেহারাটা যেন সামনে চলে আসে। সেই পরিবারতন্ত্র। সেই পদের লোভ। সেই একে অপরের দিকে আঙুল তোলার চেনা ছবি। যেখানে কখনও মিত্র বনাম দত্ত-বোসদের লড়াই, কখনও বোস বনাম দত্ত-মিত্রদের লড়াই। যেখানে বন্ধুই হয়ে যায় শত্রু। আবার শত্রুই হয়ে যায় বন্ধু। বাগান নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হয়নি। কিন্তু পয়লা বৈশাখ থেকেই চলছে ধুন্ধুমার। চলছে শুধু একে অপরের নামে কাদা ছোড়াছুড়ি।
এবারের নির্বাচনে বিরোধী প্যানেলে দাঁড়াবেন বলে ঘোষণা করেছেন সৃঞ্জয় বোস। একসময় তিনিই সবচেয়ে ভাল বন্ধু ছিলেন দেবাশিস দত্তের। এখন মুখ দেখাদেখি প্রায় বন্ধ। এমন পরিস্থিতি, দেবাশিস দত্ত আইনি নোটিশ পাঠাচ্ছেন সৃঞ্জয় বোসকে। আবার উল্টোটাও দেখা যাচ্ছে। মোহনবাগানের সংবিধান অনুযায়ী, সচিব হতে পারবেন একজনই। সেখানে যুগ্ম হওয়ার সুযোগ নেই। ফলে, এক ফুল দো মালি। লড়াই আর লড়াই শুধু চেয়ারের জন্যই। আর তারজন্যই ব্যক্তিগতস্তরে আক্রমণ চলছে একে অপরকে।
টুটু বসু সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন ছেলে সৃঞ্জয় বসুকে সমর্থন করে প্রচার করবেন বলে। কিন্তু সে গুড়ে বালি। পরপর দু’বার বৈঠক হল মোহনবাগানে। দেবাশিস দত্ত শিবির বিরোধী জেনেও টুটু বসুর ইস্তফাপত্র গ্রহণ করবেন কি করবেন না তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারলেন না। বাগান অন্দরে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে, টুটু বসুর প্রচার আটকাতেই হয়তো এই কৌশল। কারণ, টুটুবাবু নিজেই জানিয়েছেন পদে থেকে প্রচার পছন্দ করেন না।কিন্তু এভাবে কতদিন, সে প্রশ্ন উঠছেই।
টুটু বসু বাড়িতেই এরমধ্যে সাংবাদিকদের ডেকে হুঙ্কার ছেড়েছেন। বলেছেন, টাইগার আভি জিন্দা হ্যায়।মোহনবাগানের এর আগে কোনও প্রশাসক এমন হুংকার ছেড়েছেন বলে কোনও প্রবীণ সদস্যই মনে করতে পারেননি। হেসেছেন অনেকে। আবার অনেকে অবাক হয়েছেন, মা সমান ক্লাবকে নিজের সন্তান বলে তুলনা করায়।কারণ সেদিনই টুটু বসু বলেছিলেন, আমার তিন সন্তান, টুম্পাই-টুবলাই আর মোহনবাগান। বিতর্কের ঝড় বইছে বাগানে তবে থেকেই।
দেবাশিস দত্তকে তিরস্কারে ভরিয়ে দিলেও রা-বাক্যি কাটেননি। জমিয়ে রেখেছেন। শুক্রবার কার্যকরী কমিটির বৈঠকের পর বাগান সচিব বলেছেন, ২২ মে ক্রীড়া সাংবাদিক ক্লাবে মুখ খুলবেন। ফলে, জল ঘোলা বাড়বেই। এমনিতেই যা চলছে, তা ভদ্রলোকের সহ্য করার বিষয় নয়। কোনও কারণ না জানালেও বাগানের নির্বাচনী বোর্ড থেকে তিনজন পদত্যাগ করেছেন এরমধ্যেই। অসীম কুমার রায় এবং অনুপ কুমার মণ্ডল আছেন। সরে দাঁড়িয়েছেন বিশ্বব্রত বসু মল্লিক, শৌভিক মিত্র এবং অভিষেক সিনহা। তাঁদের জায়গায় নির্বাচনী বোর্ডে অন্তর্ভুক্ত করা হয় অসীম কুমার মৌলিক, সুকোমল রায় এবং বিশ্বরূপ দেকে। নির্বাচনের দৌরাত্মে জল কতদূর গড়ায় সেদিকেই তাকিয়ে বাগানকে ঘিরে স্বপ্ন দেখা সদস্য-সমর্থকরা।

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *