‘অন্ধকারের রাজপুত্র’ ওজি ওসবর্ন প্রয়াত, শোকস্তব্ধ টলিপাড়ার গৌরব-অনিন্দ্য
এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক: মঙ্গলবার রাতে সঙ্গীত জগতে নক্ষত্র পতন। হেভি মেটাল ব্যান্ড ‘ব্ল্যাক স্যাবাথ’-এর কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী ওজি ওসবোর্ন ৭৬ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। দীর্ঘদিন ধরেই পারকিনসনসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। পরিবার জানিয়েছে, ভালবাসার মানুষেরা ঘিরে ছিলেন তাঁকে শেষ সময়ে। এই মৃত্যু শুধুমাত্র পাশ্চাত্য সঙ্গীতের নয়, বিশ্বজুড়ে তাঁর কোটি কোটি অনুরাগীর মনে গভীর শূন্যতা তৈরি করেছে। বাংলার মেটালপ্রেমীদের কাছেও ওজি ছিলেন এক কিংবদন্তি শিল্পী।
মাত্র তিন সপ্তাহ আগে, অসুস্থ শরীর নিয়ে শেষবারের মতো মঞ্চে উঠেছিলেন ওজি। পাশে ছিলেন সহযোদ্ধারা, পিছনে বাজছিল ‘ব্যাক টু দ্য বিগিনিং’।মেরুদণ্ডে একাধিক বড় অস্ত্রোপচারের পরও তিনি দমে যাননি। মঞ্চে বসে থাকা সেই ‘সিংহাসন’ যেন তাঁর শেষ বিদ্রোহের প্রতীক হয়ে ওঠে। ওজি ছিলেন একাধারে ‘অন্ধকারের রাজপুত্র’ এবং সঙ্গীত বিপ্লবের প্রতীক। তাঁর হাত ধরেই মেটাল ঘরানায় এসেছিল এক নবজাগরণ। ‘ডায়েরি অফ আ ম্যাডম্যান’, ‘নো মোর টিয়ার্স’-এর মতো অ্যালবাম আজও মেটালপ্রেমীদের কাছে অমূল্য। ‘Paranoid’ বা ‘Crazy Train’-এর মতো গানগুলো বহু প্রজন্মের সঙ্গীত জীবনে ছন্দ এনেছে।
শুধুই সঙ্গীত নয়, তাঁর সাজপোশাক, কাজল আঁকা চোখ আর এলোমেলো চুলের ছাঁট এক সময়ে ফ্যাশন স্টেটমেন্ট হয়ে উঠেছিল। অভিনেতা গৌরব চট্টোপাধ্যায়, কলেজবেলায় নিজে গিটার বাজাতেন এবং রক ও মেটাল শিল্পীদের মতো সাজতেন, তিনি ওজির প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। গৌরব লিখেছেন, ‘আমার কৈশোর ও তরুণবেলার জন্য আমি আপনার কাছে কৃতজ্ঞ। আপনার প্রভাবেই সেই সময় কাটিয়েছি, যা আমাকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করেছে। আমার ভাল থাকা এবং শিল্পকে বোঝার পিছনে আপনার অবদান ছিল।’

অভিনেতা অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়ও সমাজ মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানিয়ে লিখেছেন, ‘পৃথিবী একজন আইকন হারাল। সর্বকালের অন্যতম সেরা রক স্টারের আত্মার শান্তি কামনা করি।’
ওজি ওসবোর্ন পাঁচবার গ্র্যামি জিতেছেন। ব্যান্ড ছেড়ে একাকী পথচলা শুরু করেও তিনি সাফল্যের শিখরে পৌঁছেছিলেন। তিনি শুধুমাত্র একজন শিল্পী ছিলেন না, ছিলেন এক আন্দোলনের মুখ। তাঁর গানে ফুটে উঠত বিদ্রোহ, যা তাঁর সময়ের এবং পরের শিল্পীদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।