জঙ্গিদের রাইফেল থেকে চকোলেট- পাক যোগ! পহেলগাঁওয়ের জঙ্গিরা খতম: অমিত শাহ
২২ এপ্রিল। অভিশপ্ত দিন। কাশ্মীরের বৈসরন উপত্যকায় যেভাবে জঙ্গিহানায় ২৬ জনের যেভাবে প্রাণ গেছে, তাতে শিউরে উঠেছিলেন দেশবাসী। এ জ্বালা জুড়নোর নয়। এ ক্ষত মেটানোর নয়। তবু প্রতিশোধের আগুনে ফুটছিল দেশবাসী। অপারেশন সিঁদুর দেখেছে। এবার দেখল অপারেশন মহাদেব। গুলির জবাব গুলিতেই। প্রাণের বদলে প্রাণ। নির্মম হত্যার বদলে নৃশংস খতম। পহেলগাঁওয়ে হামলায় যুক্ত ৩ জঙ্গিকেই এই অভিযানে নিকেশ করা হয়েছে। মঙ্গলবার লোকসভায় জানালেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
রাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘বৈসরন উপত্যকায় পরিবারের সামনে ধর্মীয় পরিচয় জেনে নিরীহ নাগরিকদের হত্যা করা হয়েছে…সেনা, সিআরপিএফ ও জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের যৌথ অভিযানে হামলায় যুক্ত ৩ জঙ্গিকে নিকেশ করা হয়েছে।’ শাহ আরও জানিয়েছেন, পহেলগাঁও হামলায় যুক্ত তিন জঙ্গি সুলেমান, আফগান ও জিবরানকে খতম করা হয়েছে। সোমবার যৌথ অভিযানে ওই জঙ্গিদের নিকেশ করা হয়। যে অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে অপারেশন মহাদেব। নিহত জঙ্গিদের ছবিও প্রকাশ করা হয়। মঙ্গলবার ভোর ৪টায় সন্ত্রাসবাদীদের নিশ্চিত করা হয়েছে।
এই অপারেশন মহাদেব, হঠাৎ একদিনে হয়নি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছেন, এর সলতে পাকানো শুরু হয়েছিল ২২ মে থেকে। তবে চূড়ান্ত প্রস্তুতি না নিয়ে বনে প্রবেশ করে কোনও বড় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়তে চায়নি বাহিনী। ২২মে দাচিগাম এলাকায় সন্ত্রাসবাদীদের উপস্থিতি সম্পর্কে প্রথম হদিশ মেলে। চীনা আলট্রা রেডিও কমিউনিকেশনের কিছু সাংকেতিক বাক্য ধরা পড়ছে চিনার কোর সেনা বাহিনীর ইন্টারসেপশনে। তারপরই অপারেশনের প্রস্তুতি। এরপর শুরু হয় অপেক্ষা।২২ জুলাই সেন্সরের মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়। পুলিশ এবং সেনা জওয়ানরা সন্ত্রাসবাদীদের ঘিরে ফেলে। সোমবার সকাল ১১ টা থেকে চুড়ান্ত আঘাত শুরু। দুপুরের মধ্যেই জানা গেল, তিন জঙ্গি নিহত। সূত্রের খবর, জঙ্গিরা যখন টেন্টের ভিতর বিশ্রাম নিচ্ছিল। আচমকাই তাঁদের ঘিরে ধরে যৌথ বাহিনী।

প্রত্যাঘাতের এতটুকু সুযোগ পায়নি জঙ্গিরা। মুহূর্তে গুলিতে খতম তিন জন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি জানিয়েছেন, তিন কুখ্যাত জঙ্গি ছিল এ ক্যাটিগরির জঙ্গি। এদের নাম হলো হাসিম মুসা ওরফ সুলেমান, আফগান এবং জিব্রান। এই তিন জঙ্গিই যে পহেলগাম হামলায় যুক্ত ছিল তা প্রমাণিত তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া অস্ত্র থেকেই। এ ছাড়া প্রত্যক্ষদর্শীরাও নিহত জঙ্গিদের শনাক্ত করেছেন। জঙ্গিরা যে পাকিস্তানের নাগরিক তা নিশ্চিত করতে সংসদে অমিত শাহ বলেন, ‘নিকেশ হওয়া তিন জঙ্গির দু’জনের পাক আইডি আমাদের কাছে আছে। তাদের কাছ থেকে মেলা M9 কার্তুজ এবং AK-47 রাইফেলেও রয়েছে পাকিস্তানের চিহ্ন। এমনকী, তাদের কাছ থেকে যে চকোলেট পাওয়া গিয়েছে তাও পাকিস্তানে তৈরি।’
