ঋতুস্রাব, ধর্ষণ নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য মমতাশঙ্করের, পিসিকেই বিঁধলেন শ্রীনন্দাশঙ্কর!
এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক:
নাচের প্রতিযোগিতাতে ‘চন্ডালিকা’ থেকে শুরু করে ঋতুস্রাব, ‘গুড টাচ ব্যাড টাচ’, ধর্ষণ-সহ আর নানা প্রসঙ্গ- সম্প্রতি কিছু মন্তব্যকে ঘিরে বেশ আলোচনায় রয়েছেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী তথা নৃত্য শিল্পী মমতা শঙ্কর। তিনি এই প্রসঙ্গে জানিয়েছিলেন, স্যানিটারি ন্যাপকিন এনে দেওয়ার কথা কিংবা ঋতুস্রাব সংক্রান্ত আলোচনা ছেলেদের সঙ্গে করা যায় না। প্রশ্ন তুলেছিলেন, ‘স্যানিটারি ন্যাপকিন কেন আনতে হবে বাড়ির পুরুষকে?’ তারপর থেকেই একের পর এক কটাক্ষে জর্জরিত তিনি।
ইন্ডাস্ট্রির মধ্যেই অনেকে বিরোধিতা করেছেন শিল্পীর মন্তব্যে। এ বার এই তালিকায় যোগ হল আরও একটি নাম। তিনি মমতাশঙ্করের ভাইঝি শ্রীনন্দাশঙ্কর। অতি সম্প্রতি সমাজমাধ্যমে একের পর এক মন্তব্য প্রকাশ করেছেন তিনি। সেখানে তিনি মমতাশঙ্করের নাম এক বারও উল্লেখ না করলেও নিশানার তির যে তাঁর দিকেই, তা বুঝতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি অনুরাগীদের। নান না করে কি পিসিকেই বিঁধলেন তিনি?
শ্রীনন্দা তাঁর প্রথম পোস্টে পারিবারিক ঐতিহ্যের কথা উল্লেখ করে লিখেছেন, ‘বংশগৌরব আর প্রতিভা একজন মানুষকে চেনায় না— তার চিন্তা আর বিশ্বাসই আসল।’ তিনি এই প্রজন্মেরই মানুষ। তাঁর কথায়, ‘এখন আর সেই দিন নেই যখন মানুষ একজন অভিনেতাকে তাঁর চরিত্র ভেবে নিতেন। তারকাদের রাগ-অভিমান এখন পুরনো হয়ে গিয়েছে। আজকের দিনে মানুষ হিসেবে আপনি কেমন, সেটাই আসল। কিন্তু সমস্যা হলো, অনেক তারকাই সময়ের সঙ্গে চলতে শেখেননি, তাই তাঁরা বিরক্ত আর তিক্ত হয়ে পড়েন।’

মমতাশঙ্করের ভাইঝি কিন্তু এখানেই থেমে থাকেননি। বর্ষীয়ান শিল্পী একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, কোনও নারী যদি অতিরিক্ত খোলামেলা পোশাক পরেন তা হলে তাঁকে দেখে কোনও বিকৃতকামের লালসা জাগতেই পারে। অন্য দিকে তিনি এমনও মত প্রকাশ করেছিলেন যে ছোটদের ‘গুড টাচ’, ‘ব্যাড টাচ’ শেখানোর প্রয়োজন নেই। বরং বাবা-মায়ের উচিত সজাগ থাকা। এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করেই শ্রীনন্দা লেখেন, ‘যাঁরা সবকিছুতেই মহিলাদের দোষ দেন বা ধর্ষকের মানসিকতার প্রতি সহানুভূতি দেখান, তাঁদের সম্মান আমার দরকার নেই। আমার এই পোস্ট শুধুমাত্র আমার ফলোয়ারদের জন্য—কোনও অশালীন ভাষা ব্যবহার না করেই লিখেছি, যেমনটা অনেকেই আমায় উদ্দেশ্য করে করেছে। বাংলা মিডিয়ায় যাঁরা ধর্ষক মনোভাবকে সমর্থন করেন, তাঁরা আমাকে নিয়ে যা খুশি বলুক—তাতে আমার জীবনে কিছু এসে যায় না। বলতেই থাকুন। শুধু প্রার্থনা করি, আপনার কন্যাসন্তান যেন না থাকে।’

তিনি আরও যোগ করেন, “আমি আমার বাবা ও ঠাকুরদাকে গভীরভাবে সম্মান করি। তাঁরা আজ আর আমাদের মাঝে নেই, কিন্তু এটা তাঁদের মনোভাব ছিল না। আমার ফলোয়িং আমি নিজে অর্জন করেছি—যোগ্যতার ভিত্তিতে। আপনি আমাকে ‘অর্জনহীন’ বলতেই পারেন, আর নিজে সারাদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় বসে থাকতে পারেন। আমি জানি, আমি কী অর্জন করেছি—ভালবাসা, সম্মান আর নিজের মতো বাঁচার সাহস।”
একইসঙ্গে শিশুদের ‘গুড টাচ এবং ব্যাড টাচ’ প্রসঙ্গে মমতাশঙ্করের বলা কথার প্রেক্ষিতে তিনি লেখেন, “আমি কখনওই এমন কিছু সমর্থন করব না, যা কোনও শিশুকে ‘না’ বলতে বাধা দেয়। যদি ছোটবেলায় এসব আমরা জানতাম, তাহলে অনেক খারাপ ছোঁয়া আমরা এড়াতে পারতাম।”