জুবিনের পায়ের ছাপ থেকে স্মৃতিসৌধ, অসম জুড়ে অমর হয়ে থাকছেন সুরের দেবদূত
এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক: অসমে আজও শোকের মেঘ ঘন। আকস্মিক মৃত্যু যেন বিশ্বাসই করতে পারছেন না অনুরাগীরা। ১৯ সেপ্টেম্বর, সিঙ্গাপুরে এক জলযাত্রা পরিণত হয় মৃত্যুযাত্রায়। মাত্র ৫২ বছর বয়সে না ফেরার দেশে চলে গেলেন অসমের প্রিয় সন্তান জুবিন গর্গ। খবর আসতেই স্তব্ধ দেশ।
হাজারো মানুষ নেমে এসেছেন পথে, শুধু একবার প্রিয় শিল্পীর মুখখানি দেখার তাগিদে। রবিবার সকালে কফিনবন্দি হয়ে দেশে ফিরলেন জুবিন গর্গ। কাহিলপাড়ার বাড়ি থেকে শুরু করে গুয়াহাটির সারুসাজাই স্টেডিয়াম—যেখানে তাঁর মরদেহ রাখা হয়েছে, মানুষের ঢল উপচে পড়েছে। চোখের জলে মিশে যাচ্ছে শেষ শ্রদ্ধা।
এই শোকের ভিড়েই শিল্পী দিগন্ত ভারতী তুলে রেখেছেন এক অনন্য নিদর্শন। মোমে বন্দি হয়েছে জুবিনের পায়ের ছাপ। সেই ছাপ যেন শুধু একখণ্ড স্মৃতি নয়, অসমের সাংস্কৃতিক আত্মার সঙ্গে অটুট যোগের প্রতীক। সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই হাজারো ভক্ত আবেগে ভেসেছেন।
মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, কামরূপ (এম)-এর হাতিমুরা, কামারকুচি এনসি গ্রামে হবে গায়কের শেষকৃত্য। পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে প্রশাসন জানিয়েছে, সেখানেই দশ বিঘা জমিতে তৈরি হবে জ়ুবিন গর্গের স্মৃতিসৌধ। সেই জমি শুধু সমাধিস্থল নয়, হয়ে উঠবে এক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, যেখানে প্রতিটি প্রজন্ম মনে রাখবে অসমের সঙ্গীতজ্যোতির্ময়কে।
তবে এখানেই থামছে না শ্রদ্ধাঞ্জলি। গায়কের অস্থি নিয়ে যাওয়া হবে জোরহাটে। কারণ জ়ুবিনের শিল্পীজীবন ও আত্মিক সংযোগের সঙ্গে এই ঐতিহাসিক শহরের সম্পর্ক গভীর। সেখানে তৈরি হবে আরেকটি স্মারক। যেন গোটা অসম একসঙ্গে আঁকড়ে ধরে রাখতে পারে এই শিল্পীকে।
অসম সরকার শোকপালনের সময়সীমা বাড়িয়েছে ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা লিখেছেন, ‘জুবিন শুধু শিল্পী নন, অসমের আত্মার প্রতীক।’ ইতিমধ্যেই মৃত্যুর কারণ নিয়ে নানা জল্পনা ছড়ালেও প্রশাসন জানিয়েছে, মৃত্যুর সঠিক তদন্ত চলবে। কিন্তু এই সব বিতর্কের বাইরে আজ শুধু একটাই বাস্তব, অসম হারিয়েছে তার সুরের সন্তানকে।
