হাড়হিম করা কথোপকথন ২ পাইলটের, তবু এখনই চূড়ান্ত বলার সময় নয়, বললেন মন্ত্রী
• ‘তুমি ইঞ্জিন বন্ধ করেছো?’
• আমি করিনি।
ককপিট রেকর্ডিংয়ে ধরা পড়েছে দুই পাইলটের কথোপকথন। আহমেদাবাদে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার এক মাস পর এয়ারক্রাফট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (এএআইবি) প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে এমনই হাড়হিম করা তথ্য। তবে কী পাইলটেরই ভুল? নাকি ইঞ্জিন কাজ করেনি সিস্টেমের ত্রুটিতে? ১৫ পাতার এই রিপোর্টে অনেক বিষয় স্পষ্ট ধারণা দেওয়া হয়েছে। কী কারণে টেক অফের মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই বিমানটি ভেঙে পড়ে, দুর্ঘটনার পিছনে আসল কী কারণ, সেই সবকিছুই উল্লেখ করা হয়েছে। বিমানটি টেকঅফ ও ভেঙে পড়ার মধ্যে সময় ছিল মাত্র ৩০ সেকেন্ড। এয়ারক্রাফট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরোর প্রাথমিক রিপোর্ট বলছে, দুর্ঘটনার আগের মুহূর্তে জ্বালানির সুইচ ‘রান’ (চালু) থেকে ‘কাটঅফ’ (বন্ধ)অবস্থায় চলে যায়।

প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট সামনে আসার পরই ফের প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তাহলে সঠিক কারণ ঠিক কী! এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রী বিবৃতি দিলেন জানিয়ে দিলেন, এখনই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছনো উচিত নয়। কিঞ্জারাপু রামমোহন নাইডু বলেন, ‘আমাদের দেশের পাইলট ও ক্রুরা শ্রেষ্ঠ। সিভিল অ্যাভিয়েশনের মেরুদণ্ড। তাঁদের প্রচেষ্টাকে কুর্নিশ না জানিয়ে উপায় নেই। তাই এখনই কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছনো ঠিক হবে না। আমাদের অপেক্ষা করতে হবে চূড়ান্ত রিপোর্ট আসা পর্যন্ত।’

রিপোর্ট বলছে, বিমানটি যখন উপরে ওঠার জন্য গতি পাচ্ছে, তখনই দু’টি ইঞ্জিনের জ্বালানি ‘কাটঅফ’ মুডে চলে যায়। ইঞ্জিনে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বিমানের উচ্চতা কমতে থাকে। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই অবশ্য পাইলটরা ফের বিমানের দুটি ইঞ্জিনের জ্বালানি ফের ‘কাটঅফ’ থেকে থেকে ‘রান’ মুডে নিয়ে এনেছিলেন। কিন্তু ততক্ষণে দেরি হয়ে গিয়েছে। একটি ইঞ্জিন চালু হলেও আর একটি ইঞ্জিন চালু করা যায়নি। ফলে ‘থ্রাস্ট’ পাওয়া যায়নি। এরপরই পাইলটরা মে ডে কল দেন। দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানের প্রধান পাইলট সুমিত সভরওয়াল ছিলেন অত্যন্ত অভিজ্ঞ—৮২০০ ঘণ্টা বিমানে উড়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা ছিল তাঁর। সহকারী পাইলট ক্লাইভ কুন্দর-এরও ১১০০ ঘণ্টার অভিজ্ঞতা রয়েছে। এ হেন অভিজ্ঞ পাইলটরা ভুলবশত জ্বালানি বন্ধ করে দেবেন, এটা অস্বাভাবিক বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ফলে, যান্ত্রিক ত্রুটির সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। কী কারণে বিমানটির জ্বালানি বন্ধ হয়ে গেল? স্বয়ংক্রিয় যান্ত্রিক ত্রুটি? নাকি অন্য কোনও প্রযুক্তিগত গোলযোগ? এই প্রশ্নের উত্তর এখনও অধরা।