স্নানযাত্রায় দিঘায় গেল মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির আম কাঁঠাল, মাহেশেও চলল উৎসব

0





বুধবার স্নানযাত্রা। কলকাতা শুষ্ক থাকলেও, সকাল থেকে অঝোর ধারায় বৃষ্টি দিঘায়। নতুন মন্দিরে জগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রাকে কেন্দ্র করে যেন অপরূপ আধ্যাত্মিক পরিমণ্ডলের সৃষ্টি হল দিঘার জগন্নাথ ধাম চত্বরে। সমুদ্র পাড়ে জগন্নাথের স্নানযাত্রা উপলক্ষে সকাল সকাল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে পৌঁছে যায় গাছ পাকা আম ও কাঁঠাল। স্নানযাত্রার পরে তা নিবেদন করা হয় ৫৬ ভোগের সাথে। স্নানযাত্রার উৎসব দিঘায় প্রথমবার। তাই আকর্ষণ ছিল ভক্তদের-ভ্রমণপিপাসুদের। পাহাণ্ডি বিজয়ের মাধ্যমে প্রথমে মন্দিরের ডানদিকে তৈরি হওয়া স্নান মণ্ডপে নিয়ে আসা হয় সুদর্শন চক্র।

এরপর আসেন বলরাম, সুভদ্রা মহারানি এবং প্রভু জগন্নাথদেব। তাদের সাথে সাথে স্নান মণ্ডপে নিয়ে আসা হয় মদনমোহন বিগ্রহও। জগন্নাথ দেবের পবিত্র স্নানযাত্রার জন্য ১০৮ তীর্থক্ষেত্র থেকে কলস ভর্তি জল নিয়ে আসা হয়। সেই সব জলে মেশানো হয় তুলসী পাতা, কাঁচা দুধ, আতর, চন্দন, কর্পূর সহ বিভিন্ন সামগ্রি। স্নানের আগে সিল্কের চাদরে মুড়ে ফেলা হয় তিনটি বিগ্রহ। তুলসী পাতা দিয়ে স্নানযাত্রার আগে সম্পন্ন হয় তুলসী দান। চলে ভক্তিভরে মন্ত্রোচ্চারণ। স্নানযাত্রার যাবতীয় আচার বিধির জন্য ইসকন থেকে এসেছেন ১০০ জন সাধু। তারাই স্নান মণ্ডপের সামনে মেতে ওঠেন জগন্নাথের নাম গানে। এদিন একে একে ঢালা হয় পবিত্র তীর্থক্ষেত্রের ১০৮ কলস জল, ১০০ লিটার কাঁচা দুধ, সহ নানান সামগ্রি।

এরপর ফের তাদের নতুন সিল্কের কাপড়ে আবর্তন করে পাহাণ্ডি বিজয়ের মাধ্যমে একে একে নিয়ে যাওয়া হয় মূল মন্দিরের গর্ভগৃহে। সেখানে জগন্নাথদেব ও বলরামকে গজ বেশ ও সুভদ্রাকে পদ্মবেশে সজ্জিত করা হয়। সেই সমস্ত পোশাক ইসকনের এক ভক্ত তৈরি করে এনেছেন। এছাড়াও পাঁচ রকমের ফল দেওয়া হয় তাদের। এরপর নিবেদন করা হয় ৫৬ ভোগ। সেখানেই মুখ্যমন্ত্রীর পাঠানো আম, কাঁঠাল ও মিষ্টান্ন অর্পণ করা হয়। লোকোমুখে প্রচলিত আছে জগন্নাথের স্নানযাত্রা দেখার সৌভাগ্য সকলের হয় না। যারা দেখতে পান তারা পুণ্য অর্জন করেন। তাই সকাল থেকে বহুদূরান্ত থেকে মানুষজন এসেছিলেন স্নানযাত্রা দর্শনে।


অন্যদিকে দীর্ঘদিন পর প্রথা মেনে স্নান যাত্রা উৎসব পালিত হল শ্রীরামপুরের মাহেশের জগন্নাথ মন্দিরে। গত দু’বছর করোনা পরিস্থিতির কারণে মন্দির চত্বরে স্নানযাত্রা হলেও,৬২৯ বছরে পদার্পণ করা এবারের এই উৎসবে প্রভুর নির্দিষ্ট স্নানমঞ্চে ২৮ ঘড়া গঙ্গাজল ও দেড় মন দুধ দিয়ে স্নান করানো হলো প্রভু জগন্নাথ, বলরাম, ও সুভদ্রাকেl  স্বাভাবিকভাবেই এই উৎসব দেখতে পেয়ে খুশি ভক্তরাl কথিত আছে স্নানযাত্রার পর প্রভুর জ্বর আসে ,যে জ্বর সারাতে মেদিনীপুরের ঘাটাল,হুগলির আরামবাগ থেকে কবিরাজ এসে প্রভুর চিকিৎসা করেনl সেই কারণে এই সময় মন্দির বন্ধ থাকে, তারপর ১৫ দিন পর আবার মন্দির খুলে দেওয়া হয় ভক্তদের জন্যl  এইসময় পালিত হয় নবযৌবন উৎসব এবং তারপরেই রথযাত্রা উৎসব পালিত হবে আগামী ২৭ জুন l

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *