মক ড্রিল কী, কীভাবে- কোথায় হবে, কী করতে হবে, জেনে নিন বিস্তারিত
ট্রেন্ডিং: ১৯৭১ সাল। ভারতে শেষ অসামরিক মহড়া হয়েছিল। এরপর আবার ২০২৫। সে’বার ১৯৭১ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময়। এবারও পহেলগাঁও হামলার পর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের অবনতির জেরেই দেশজুড়ে অসামরিক মহড়ার বার্তা দিয়েছে কেন্দ্র। যা নিয়ে সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত, কৌতূহলীও। ঠিক কী হতে চলেছে, তার অভিজ্ঞতা নেই অনেকেরই। ফলে, বুধবারের দিকে তাকিয়ে সকলে।
*মক ড্রিল ঠিক কী?
মক ড্রিল আসলে অসামরিক মহড়া। যা যুদ্ধকালীন জরুরি অবস্থার সময় মেনে চলতে হবে। দেশের নাগরিক আর সংস্থাগুলিকে নিরাপদ পরিবেশে রাখতেই যুদ্ধের আগে এই মহড়া। প্রাকৃতিক দুর্যোগেও ঠিক এ’রকম ব্যবস্থা হয়ে থাকে। তবে এবার চরিত্র আলাদা।
*কোথায় হবে এই মক ড্রিল
দেশের ২৭টি রাজ্য ও ৮টি কেন্দ্রীয় শাসিত অঞ্চলে হবে অসামরিক মহড়া। দেশের মোট ২৫৯টি এলাকায় হবে এই মহড়া। বাংলার মোট ২৩টি জেলার ৩১ মক ড্রিল হবে। উত্তরবঙ্গের কোচবিহার, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, মালদা, শিলিগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, বালুরঘাট, ফারাক্কায় হবে মক ড্রিল। এছাড়াও, গ্রেটার কলকাতা, দুর্গাপুর, হলদিয়া, হাসিমারা, খড়্গপুর, আসানসোল, রায়গঞ্জ, ইসলামপুর, দিনহাটা-সহ হাওড়া, হুগলির একাধিক এলাকায় চলবে মহড়া।
*ঠিক কী হবে?
বিমান হামলা. ব্ল্যাক আউট যুদ্ধ পরিস্থিতিতে কী ধরনের পদক্ষেপ করতে হবে তারই বিস্তারিত মহড়া দেওয়া হবে। হঠাৎ ব্ল্যাকআউট হলে কী করণীয়, কীভাবে উদ্ধারকার্য চালানো হবে জরুরি পরিস্থিতিতে, প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে সেসব বিষয়েও। এই মহড়ায় অংশগ্রহণ করবেন জেলাশাসক-সহ জেলা প্রশাসনের অন্যান্য আধিকারিক, সাধারণ শিক্ষার্থী-সহ অনেকেই। প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে স্কুল ও কলেজ পড়ুয়াদের।
*যা জানা জরুরী
এয়ার রেড সাইরেন বাজবে দেশের ২৫৯ এলাকায়। সাধারণ মানুষকে সতর্ক করার জন্য বাজবে এই অ্যালার্ম। আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই বলে জানানো হয়েছে প্রশাসনের তরফে। প্রথম সাইরেন বাজার ৫ থেকে ১০ মিনিটের মধ্যে সকলকে ঘরে কিংবা নিরাপদ স্থানে ঢুকে পড়তে হয়। জানলা-দরজা বন্ধ করে ফেলতে হয়। সমস্ত আলো নিভিয়ে ফেলতে হয়। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি তৈরি হলে নাগরিকদের কীভাবে সুরক্ষা দেওয়া হবে সেই প্রস্তুতি যাচাই করে নিতেই বাজানো হবে এই সাইরেন।
এই সাইরেনগুলি সাধারণত প্রশাসনিক ভবন, পুলিশ সদর দফতর, ফায়ার স্টেশন, সামরিক ঘাঁটি এবং শহরের জনবহুল এলাকায় উঁচু স্থানে লাগানো হয়। এর শব্দে একটানা অস্বস্তিকর কম্পন থাকবে, যা সাধারণ হর্ন বা অ্যাম্বুল্যান্সের শব্দ থেকে একদম আলাদা হবে। ২-৫ কিলোমিটার পর্যন্তও এই সাইরেন শোনা যাবে। বাজানোর অর্থ সাধারণ মানুষকে যুদ্ধ বা বিমানহানার মতো পরিস্থিতি সম্পর্কে জানানো।
*যা দেখে নেওয়া হবে
এই মহড়ায় বিমান হামলার সাইরেন আকাশ হুমকি সম্পর্কে মানুষকে সতর্ক করার ক্ষেত্রে কতটা কার্যকর তা মূল্যায়ন করা হবে।
অসামরিক কর্তৃপক্ষ এবং ভারতীয় বিমান বাহিনীর মধ্যে হটলাইন এবং রেডিও লিঙ্কগুলি সক্রিয় এবং পরীক্ষা করা হবে।
ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় শেখানো হবে, কীভাবে দ্রুত উদ্ধারকাজ চালাতে হয়, কীভাবে সরিয়ে নিয়ে যেতে হয় সাধারণ মানুষকে।
মৌলিক নাগরিক প্রতিরক্ষা কৌশলের মাধ্যমে শত্রুতাপূর্ণ আক্রমণের সময় নিজেদের রক্ষা করার জন্য শিক্ষার্থীসহ সকলকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
বেসামরিক নাগরিকরা প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান, অগ্নিনির্বাপক সরঞ্জাম পরিচালনা এবং জরুরি অবস্থার সময় আশ্রয় নেওয়ার বিষয়ে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ পাবেন।
কর্তৃপক্ষ বিমানঘাঁটি, শোধনাগার এবং রেল ইয়ার্ডের মতো গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগুলিকে আকাশ থেকে সনাক্তকরণ বা আক্রমণ থেকে রক্ষা করার অনুশীলন করবে।
*ক্র্যাশ ব্ল্যাকআউট
অনুশীলন হতে পারে ক্র্যাশ ব্ল্যাকআউটের
রাতে হামলার ক্ষেত্রে যুদ্ধবিমানের খবর পাওয়া মাত্র যাতে হঠাৎ করে সমস্ত আলো নিভিয়ে দিয়ে ক্রাশ ব্ল্যাকআউট করে শত্রু বিমানবাহিনীকে বিভ্রান্ত করে দেওয়া যায় তারও মহড়া হবে।
*ওয়ার সাইরেন
এই সাইরেনগুলি সাধারণত প্রশাসনিক ভবন, পুলিশ সদর দফতর, ফায়ার স্টেশন, সামরিক ঘাঁটি এবং শহরের জনবহুল এলাকায় উঁচু স্থানে লাগানো হয়। এর শব্দে একটানা অস্বস্তিকর কম্পন থাকবে, যা সাধারণ হর্ন বা অ্যাম্বুল্যান্সের শব্দ থেকে একদম আলাদা হবে। ২-৫ কিলোমিটার পর্যন্তও এই সাইরেন শোনা যাবে।