পুজোর আগে বৃষ্টিতে স্তব্ধ শহর, উদ্ধারের আশায় গৃহবন্দি রণিতা-শ্যামৌপ্তির প্রার্থনা দেবী দুর্গার কাছেই
এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক: গত সোমবার রাত থেকে শুরু হওয়া অঝোর ধারার বৃষ্টিতে প্রায় ডুবন্ত অবস্থা গোটা কলকাতার। শহরের সিংহভাগ অঞ্চলই এখন জলের তলায়। জনজীবন প্রায় বিপর্যস্ত। এমন ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ১১ জন। এই পরিস্থিতি থেকে বাদ যাননি তারকারাও। শুটিং বন্ধ, রাস্তায় নামতেও ভয় পাচ্ছেন অনেকে।
অভিনেত্রী রণিতা দাস সকালেই খবর পেলেন, এই দিনের সমস্ত শুট বাতিল। পাড়ায় জল জমে থাকলেও পাম্প করে বার করার চেষ্টা চলছে। তবু নতুন করে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় আশঙ্কা বাড়ছে। তাঁর কথায়, “এমন দুর্যোগ হলে ১-২ দিন তো লাগবেই স্বাভাবিক হতে। কিন্তু বৃষ্টি থামাটাই এখন সবচেয়ে জরুরি।”
ছোট পর্দার অভিনেত্রী শ্যামৌপ্তি মুদলি জানালেন, “সকালে উঠে যখন খবরে দেখলাম, তখনো অতটা বুঝতে পারিনি। কিন্তু সামান্য কাজের জন্য বেরোতে গিয়েই বাড়ির সামনে জমে থাক জল দেখেই রীতিমতো ভয় পেয়ে গিয়েছি। চারদিকে এত জল! বাড়ি থেকে বেরিয়েই শুনলাম, একজন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গিয়েছেন। শুনেই কেঁপে উঠলাম।” এক অদ্ভুত অভিজ্ঞতার মুখে পড়েছেন তিনি। এমন ঘটনা আগে কখনও দেখেননি।
পুজোর আগে এমন দুর্যোগ মন খারাপের জায়গা তৈরি করছে কি না, প্রশ্নে রণিতার জবাব, অন্যদিকে অভিনেত্রী রণিতা বলেন, “শুটিং বাতিল হয়ে যাওয়ায় সারাদিন বাড়িতেই। তবে এই মুহূর্তে সবার চেষ্টা করা উচিত কীভাবে এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। পুজো তো পুজো মতোই হবে। দেবী আসছেন, সকলের মনেই একটা আনন্দ আছে। কিন্তু এমন দুর্যোগের সময় যতটা একসঙ্গে থেকে পরিস্থিতির মোকাবিলা করা যায় সেটাই একান্ত কাম্য।” তিনি আরও জানান, “ছোটবেলায় একবার এমন দুর্যোগ দেখেছিলাম। পরে আমফানের সময় বাড়ির শেডের ছাদ উড়ে গিয়েছিল, সেটা খুবই ভয়ঙ্কর ছিল। এই পরিস্থিতিতে মনে হয়, ভগবান ছাড়া রক্ষা করার কেউ নেই।” প্রকৃতির সামনে মানুষ বড় অসহায়। তবে বিশ্বাস আর ইচ্ছাশক্তিই শেষ ভরসা।
শ্যামৌপ্তি আরও সরল করে বললেন, “পুজোর আবেগটা এই মুহূর্তে দাড়িয়ে পুজোর একটা অনুভূতি, আবেগ আছে ঠিকই, কিন্তু এটা মনেহচ্ছে না যে এবাবা পুজো, বৃষ্টি হল বা জল হল, কিন্তু এই মুহূর্তে দাড়িয়ে আমার একটু চিন্তাই হচ্ছে যে আজকে যেই মানুষ গুলো চলে গেলেন, তাঁরা কারুর পরিবারের কেউ না কেউ, কাল বাদে পরশু আমার নিজের কারুর সঙ্গেও এরকম কিছু একটা ঘটতে পরে। কাজেই জানি না। সবকিছুই ভীষণ অনিশ্চিয়তার মধ্যে কাটছে।”
রণিতা বৃষ্টির দিনে বাড়িতে বসে খিচুড়ি, মাছভাজা আর তেলেভাজা খেতে ভালবাসেন। ছাদে বৃষ্টিতে ভিজতে পারলেও মন্দ হয় না ব্যাপারটা। অন্যদিকে, এই ভাল লাগা গুলো ছেলেবালায় ফেলে এসেছেন শ্যামৌপ্তি। তবে কাজের সময় বা বাইরে বেরোনোর থাকলে বৃষ্টি ভালো লাগে না বলে জানালেন শ্যামৌপ্তি। রণিতা বললেন, “বৃষ্টি ভালো লাগে, তবে জল জমে যখন মানুষের ক্ষতি হয়, তখন সত্যিই খারাপ লাগে। কোনো কিছুরই বাড়াবাড়ি ভালো নয়।”
